খুলনার আঞ্চলিক ফাইনালে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়কে ১-০ গোলে হারিয়ে গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় দলের উল্লাস
খুলনার আঞ্চলিক ফাইনালে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়কে ১-০ গোলে হারিয়ে গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় দলের উল্লাস

ইস্পাহানি-প্রথম আলো আন্তবিশ্ববিদ্যালয় ফুটবল

খুলনার মাঠে গোপালগঞ্জের জয়োল্লাস

হাসি–কান্নার এক অন্য রকম দৃশ্য মঞ্চায়িত হলো আজ খুলনা বিভাগীয় মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্সে। এক দলের আনন্দ, আরেক দল ডুবে গেছে বিষাদে। ফুটবলে দিন শেষে এমনই হয়। এই বিকেলে জয়ী দলটার নাম গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। খুলনার আঞ্চলিক ফাইনালে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়কে ১-০ গোলে হারিয়ে যারা উঠে গেছে ইস্পাহানি-প্রথম আলো তৃতীয় আন্তবিশ্ববিদ্যালয় ফুটবলের চূড়ান্ত পর্বে।

উত্তেজনাপূর্ণ আঞ্চলিক ফাইনাল দারুণ উপভোগ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। নিজ নিজ দলকে সমর্থন দিয়েছেন। কিন্তু শেষ হাসি গোপালগঞ্জের। শেষ বাঁশির পর তাদের খেলোয়াড়েরা এমন আনন্দে মেতে ওঠেন যেন পুরো টুর্নামেন্টের চ্যাম্পিয়ন হয়ে গেছে দল।

ম্যাচসেরার পুরস্কার হাতে গোপালগঞ্জের ডিফেন্ডার ইমরান হোসেন

৩০ মিনিটে ম্যাচের একমাত্র গোলটি করে ম্যাচসেরার পুরস্কার পাওয়া গোপালগঞ্জের ডিফেন্ডার ইমরান হোসেন তো বলেই ফেলেছেন, ‘গতবার চূড়ান্ত পর্বে যেতে পারিনি। এবার আমরা কাপ নিয়ে আসব গোপালগঞ্জে।’

খুলনা পর্ব দিয়ে শেষ হলো ঢাকার বাইরের তিনটি অঞ্চলের খেলাই। ৪৬ দলের টুর্নামেন্টে প্রথমে চট্টগ্রাম অঞ্চল থেকে চূড়ান্ত পর্বের টিকিট পেয়েছে চিটাগাং ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি ও প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি। রাজশাহী অঞ্চলে চ্যাম্পিয়ন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। চতুর্থ দল হিসেবে আজ চূড়ান্ত পর্বের টিকিট পেল গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।

গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় দলের উল্লাস

২৮ নভেম্বর ঢাকার আঞ্চলিক পর্ব শুরু হবে সাভারের ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনির্ভাসিটিতে। ঢাকার আঞ্চলিক পর্ব থেকে চূড়ান্ত পর্ব, অর্থাৎ কোয়ার্টার ফাইনালে উঠবে ৪টি দল।

চূড়ান্ত পর্বে উঠে আসার পথে দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় টাইব্রেকারে ৩-২ গোলে হারায় গতবারের আঞ্চলিক চ্যাম্পিয়ন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়কে। নির্ধারিত সময় ছিল গোলশূন্য। টাইব্রেকারে প্রথমেই খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলকিপার লূহর চাকমা অমিক দুটি শট আটকে দেন প্রতিপক্ষের। কিন্তু তাঁর সতীর্থরা পারেননি দলকে জেতাতে। উল্টো খুলনার শেষ শট আটকে গোপালগঞ্জকে জিতিয়ে দেন গোলকিপার রনি ইসলাম।

ম্যাচসেরা গোপালগঞ্জের গোলকিপার রনি ইসলাম ছিলেন উচ্ছ্বসিত, ‘গতবার আঞ্চলিক ফাইনালে আমরা খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে হেরেছিলাম। এবার তাদের হারিয়ে প্রতিশোধ নিলাম।’ তবে দলকে জেতাতে না পারলেও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলকিপার লূহরকে সান্ত্বনাসূচক পুরস্কার দেওয়া হয়েছে তাঁর দুরন্ত নৈপুণ্যের জন্য।

দিনের প্রথম ম্যাচে খান বাহাদুর আহ্ছানউল্লা বিশ্ববিদ্যালয়কে ৩-০ গোলে হারিয়ে আঞ্চলিক ফাইনালে ওঠে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। গোল না করলেও দুটি গোলে সহায়তা করে ম্যাচসেরা হয়েছেন আবু রায়হান।

ইস্পাহানি-প্রথম আলো আন্তবিশ্ববিদ্যালয় ফুটবল খুলনা অঞ্চলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অতিথিরা

সকালে দিনব্যাপী এ উৎসবের উদ্বোধন করেন জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক ও দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবলে পরিচিত মুখ, আটটি সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ খেলা সাবেক গোলকিপার বিপ্লব ভট্টাচার্য। মেয়েদের জন্যও এমন টুর্নামেন্ট আয়োজনের ওপর জোর দিয়ে বিপ্লব ভট্টাচার্য বলেন‌, ‘বর্তমানে মেয়েরা খুব ভালো খেলছে, সামনে এশিয়ান কাপের চূড়ান্ত পর্বে খেলবে ওরা। নারী ফুটবলাররা এখন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হচ্ছে। তাই তাদের জন্যও ইস্পাহানি-প্রথম আলো আন্তবিশ্ববিদ্যালয় টুর্নামেন্ট করা উচিত।’

টুর্নামেন্ট কমিটির সদস্য ও প্রথম আলোর বিশেষ প্রতিনিধি মাসুদ আলমের সঞ্চালনায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. মাকসুদ হেলালী, খুলনা খান বাহাদুর আহ্ছানউল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনিসুর রহমান, জাতীয় দলের সাবেক ফুটবলার দস্তগীর হোসেন নীরা, জাতীয় দলের সাবেক ফুটবলার শেখ জাহাঙ্গীর হোসেন, ইস্পাহানি টি লিমিটেডের সিনিয়র ডিভিশনাল ম্যানেজার মোহাম্মদ নাজমুল হুদা।

ইস্পাহানি-প্রথম আলো আন্তবিশ্ববিদ্যালয় ফুটবল খুলনা অঞ্চলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অতিথিরা

ম্যাচসেরার পুরস্কার অনুষ্ঠানে বিপ্লব ভট্টাচার্যের সঙ্গে ছিলেন মোহাম্মদ নাজমুল হুদা ও জাতীয় দলের সাবেক মিডফিল্ডার কামরুজ্জামান সেলিম। দর্শকসারিতে ছিলেন দেশের সাতবারের দ্রুততম মানবী সুলতানা পারভীন লাভলী।
এ আয়োজন উপলক্ষে খুলনা বিভাগীয় মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্স সেজেছে নতুন সাজে। ঘাস কেটে পরিচর্যা করা হয় মাঠের। কমপ্লেক্সের ভেতর-বাইরে ব্যানার-ফেস্টুনে ছেয়ে যায়। দলগুলো উৎসবের আমেজে যোগ দেয় এ আয়োজনে। আয়োজনটির প্রচার সহযোগী এটিএন বাংলা।