মেঘের আকার ও ধরনে ভিন্নতা রয়েছে
মেঘের আকার ও ধরনে ভিন্নতা রয়েছে

মেঘের ওজন কত

আকাশে আনন্দে ভেসে বেড়ায় মেঘ। বাতাস যেদিকে টানে, মেঘও সেদিকে যায়। আর তাই হাওয়াই মিঠার মতো তুলতুলে মেঘ দেখে মন ভালো হয়ে যায় আমাদের। তুলার মতো মনে হলেও মেঘের ওজন কিন্তু অনেক! মেঘের মধ্যে থাকা জলকণার পরিমাণ ও মেঘের ঘনত্বের কারণে মেঘের ওজন কমবেশি হয়ে থাকে। সাধারণভাবে আমরা যখন আকাশে মেঘ দেখি, তখন তাকে হালকা তুলার মতো মনে হয়। মেঘ মূলত জলকণা ও বরফকণার সমন্বয়ে গঠিত। মেঘের মধ্যে থাকা জলকণা ভীষণ সূক্ষ্ম হয়। বাতাসের ঊর্ধ্বমুখী স্রোতের কারণে মেঘ মাটিতে আসে না। যে কারণে মেঘ ভাসমান অবস্থায় থাকে।

পেঁজা তুলার মতো মেঘের আকারকে বিজ্ঞানীরা কিউমুলাস মেঘ হিসেবে ডাকেন। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, একটি মাঝারি আকারের কিউমুলাস মেঘের ওজন ১ লাখ কেজি থেকে ১০০ কোটি কেজি পর্যন্ত হতে পারে। ১ কিলোমিটার লম্বা ও প্রস্থের কিউমুলাস মেঘের ওজন হতে পারে ৫ লাখ কেজি পর্যন্ত। এই ওজন প্রায় ১০০টি হাতির সমান! এত বিশাল ওজন নিয়েও মেঘ আকাশে ভেসে থাকতে পারে। মেঘে জলকণা খুব সূক্ষ্ম ও পারস্পরিক দূরত্ব বেশি বলে ভেসে থাকে। আবার মেঘের ঘনত্ব বাতাসের ঘনত্বের চেয়ে সামান্য কম থাকে বলে মেঘ ভেসে থাকে। অনেক পাহাড়ি এলাকায় গাড়ি চালানোর সময় আমরা মেঘের মধ্যে হারিয়ে যাই। মেঘ তখন কিছুটা ভারী হয় বলে নিচের দিকে অবস্থান করে।

অন্যদিকে স্ট্র্যাটাস নামের মেঘ সাধারণত ধূসর রঙের হয় ও ভূপৃষ্ঠের কাছাকাছি দেখা যায়। বিমান উড়ে চলার সময় জানালা দিয়ে নিচে তাকালে এই মেঘ দেখা যায়। এ ধরনের মেঘের ঘনত্ব তুলনামূলকভাবে কম হলেও, আয়তন বেশি হওয়ার কারণে ওজন ৫ লাখ থেকে ১০ লাখ কেজি পর্যন্ত হতে পারে। হালকা পালকের মতো অনেক ওপরে ভেসে থাকে সাইরাস মেঘ। এই মেঘের মধ্যে বরফকণা থাকে। এই ধরনের মেঘের ওজন তুলনামূলকভাবে কম হয়। এদের ওজন প্রায় ১০ হাজার কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে।

মেঘের ওজন নির্ণয় করা হয় তার মধ্যে থাকা জলীয় বাষ্পের পরিমাণ পর্যালোচনা করে। অর্থাৎ, মেঘের আয়তন ও তার মধ্যে থাকা জলকণার ঘনত্ব দিয়ে মোট ওজন বের করা হয়। মেঘের জলকণার ভর নির্ণয়ের জন্য বিজ্ঞানীরা বিভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহার করেন। রাডার, উপগ্রহ ও আবহাওয়ার বিমান ব্যবহার করে মেঘের মধ্যে থাকা জলকণার ঘনত্ব নির্ণয় করা হয়। এরপর মেঘের মোট আয়তন দিয়ে এই ঘনত্বকে গুণ করে মেঘের ওজন বের করা হয়।

সূত্র: লাইভ সায়েন্স ও থটকো ডটকম