Thank you for trying Sticky AMP!!

ক্রাইস্টচার্চে শহরজুড়ে সতর্কতা

নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে আল নুর মসজিদে সন্ত্রাসী হামলাকে ‘গুরুতর ঘটনা’ উল্লেখ করে সতর্ক অবস্থান নিয়েছে পুলিশ। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে শহরের হাসপাতাল ও সব স্কুলে যে যেভাবে আছে, সেভাবেই ভেতরে থাকতে নির্দেশে দেওয়া হয়েছে। বাসিন্দাদের বাসা থেকে বের না হতে নির্দেশ দিয়েছে পুলিশ। এ ছাড়া ঘটনাস্থল থেকে লোকজনকে দূরে থাকতে বলা হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, বন্দুক হামলার পর মসজিদ থেকে লোকজন আতঙ্কিত হয়ে ছোটাছুটি করতে থাকে। মসজিদের ভেতর কয়েকজনের প্রাণহানি ঘটেছে। তবে পুলিশ এখনো হতাহত ব্যক্তির সংখ্যা নিশ্চিত করেনি।

স্থানীয় সময় বেলা দেড়টার দিকে মসজিদে নামাজ শুরুর ১০ মিনিটের মধ্যে একজন বন্দুকধারী সিজদায় থাকা মুসল্লিদের ওপর গুলি ছোড়ে। হামলাকারীর হাতে স্বয়ংক্রিয় রাইফেল ছিল। হামলা চালিয়ে বন্দুকধারী জানালার কাচ ভেঙে পালিয়ে যায়।
মসজিদটি হ্যাগলি ওভাল মাঠের খুব কাছে হওয়ায় অনুশীলন শেষে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সদস্যরা সেখানে নামাজ আদায়ে যাচ্ছিলেন। মসজিদে প্রবেশের মুহূর্তে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে। খেলোয়াড়েরা তখন আতঙ্কিত হয়ে পড়েন এবং হ্যাগলি ওভালে ফিরে আসেন। খেলোয়াড়দের সবাইকে মাঠের ভেতর থাকতে বলা হয়েছে।
ক্রাইস্টচার্চের হ্যাগলি ওভাল মাঠে কাল শনিবার বাংলাদেশ–নিউজিল্যান্ডের তৃতীয় টেস্ট ম্যাচ হওয়ার কথা।

এই ঘটনার পর ক্রিকেটার তামিম ইকবাল টুইটে লেখেন, ‘পুরো দল বন্দুকধারীর হামলা থেকে রক্ষা পেয়েছে। এটা ভীতিকর অভিজ্ঞতা। সবাই আমাদের জন্য দোয়া করবেন।’
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের মুখপাত্র জালাল ইউনুস বলেছেন, দলের বেশির ভাগ সদস্য মসজিদে যাওয়ার জন্য বাসে চড়েছিলেন। মসজিদে প্রবেশের মুহূর্তে হামলার ঘটনাটি ঘটে।

স্থানীয় গণমাধ্যম নিউজিল্যান্ড হেরাল্ড জানিয়েছে, মোহান ইব্রাহিম নামের একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‘প্রথমে আমরা ভেবেছিলাম কোনো বৈদ্যুতিক ঝটকা। পরে সব লোক দৌড়ানো শুরু করে।’ তিনি বলেন, ‘আমার বন্ধুরা ভেতরে রয়ে গেছে। আমি তাদের নাম ধরে চিৎকার করছিলাম। কিন্তু হট্টগোলে আমি তাদের কাছ থেকে কিছু শুনতে পাইনি। বন্ধুদের জীবন নিয়ে আমি ভীত।’

ক্রাইস্টচার্চের মসজিদে সন্ত্রাসী হামলার পর শহরজুড়ে সতর্ক অবস্থা। ছবি: রয়টার্স

আল নুর মসজিদটি মধ্য ক্রাইস্টচার্চের ডিন অ্যাভিনিউয়ে হ্যাগলি পার্ক বরাবর অবস্থিত। কাছাকাছি লিনউডে আরেকটি মসজিদ থেকে মুসল্লিদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

নিউজিল্যান্ডের নিউজসাইট স্টাফ ডট এনজেড জানিয়েছে, ক্যানটারবারি ডিস্ট্রিক্ট হেলথ বোর্ডের মুখপাত্র জানিয়েছেন, হতাহত ব্যক্তিদের জন্য তাঁরা জরুরি ভিত্তিতে পরিকল্পনা করেছেন। জরুরি কক্ষ খালি করা হয়েছে। তবে কতজন রোগী আসবে বলে ধারণা করছেন, সে সম্পর্কে তিনি কিছু জানাননি।

পুলিশ কমিশনার মাইক বুশ বলেছেন, বন্দুকধারীর হামলায় গুরুতর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। পুলিশ পরিস্থিতি মোকাবিলায় সম্পূর্ণ সক্ষমতা নিয়ে কাজ করছে। তবে এখনো মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতি বিরাজ করছে। বাসিন্দাদের ক্রাইস্টচার্চ সড়ক দিয়ে চলাচলে নিষেধ করা হয়েছে এবং পরবর্তী আদেশ না দেওয়া পর্যন্ত ঘর থেকে বের না হতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। স্কুলগুলো থেকেও কাউকে বের না হতে বলা হয়েছে।

এ ঘটনায় নিন্দা প্রকাশ করে নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডের্ন টুইটে বলেছেন, ‘ক্রাইস্টচার্চে নজিরবিহীন সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। নিউজিল্যান্ডে সন্ত্রাসী হামলার জায়গা নেই। ক্ষতিগ্রস্ত অনেকে নিউজিল্যান্ডের অভিবাসী সম্প্রদায়ের। নিউজিল্যান্ডই তাদের বাড়ি। তারা আমাদের লোক।’ তিনি পুলিশের নির্দেশ মেনে ক্রাইস্টচার্চের বাসিন্দাদের বাড়িতে অবস্থান করতে অনুরোধ জানান।
প্রধানমন্ত্রী জানান, পুলিশ কমিশনার স্থানীয় সময় বিকেল পাঁচটায় বিবৃতি দেবেন। সন্ধ্যায় তিনি আবার সবশেষ অবস্থা জানাবেন বলে জানান।

আরও পড়ুন: