পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘর্ষের সময় সীমান্তে পাহারায় আফগানিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনীর তিন সদস্য। কান্দাহার প্রদেশের স্পিন বোলদাক জেলা , ১২ অক্টোবর ২০২৫
পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘর্ষের সময় 
সীমান্তে পাহারায় আফগানিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনীর তিন সদস্য। কান্দাহার প্রদেশের স্পিন বোলদাক জেলা , ১২ অক্টোবর ২০২৫

পাকিস্তান-আফগানিস্তান সংঘাত

সমঝোতা ছাড়াই ইস্তাম্বুলে যুদ্ধবিরতি আলোচনা শেষ

কোনো ধরনের সমাধান ছাড়াই তুরস্কের ইস্তাম্বুলে আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধবিরতি আলোচনা শেষ হয়েছে। এ বিষয়ে অবগত দুটি সূত্র মঙ্গলবার এ তথ্য জানিয়েছে। আলোচনা ব্যর্থ হওয়াকে এ অঞ্চলের শান্তির জন্য একটি ধাক্কা হিসেবে দেখা হচ্ছে।

দক্ষিণ এশিয়ার দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে ইস্তাম্বুলে আলোচনা হয়েছিল। গত সপ্তাহে দুই দেশের মধ্যে সংঘাতে কয়েক ডজন মানুষ নিহত এবং শত শত লোক আহত হন। ২০২১ সালে তালেবান আফগানিস্তানের ক্ষমতা নেওয়ার পর থেকে এটিকে সবচেয়ে ভয়াবহ সহিংসতা হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

কয়েক দিনের সংঘাত শেষে উভয় পক্ষ ১৯ অক্টোবর কাতারের মধ্যস্থতায় একটি যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়। কিন্তু তুরস্ক ও কাতারের মধ্যস্থতায় ইস্তাম্বুলে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় দফার আলোচনায় তারা একমত হতে পারেনি বলে আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের সূত্র জানিয়েছে। এই ব্যর্থতার জন্য দুই পক্ষই একে অপরকে দোষারোপ করছে।

পাকিস্তানের একটি নিরাপত্তা সূত্র জানিয়েছে, পাকিস্তান চায় তালেবান যেন বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠী, যেমন পাকিস্তান তালেবান (টিটিপি) ও অন্যান্য গোষ্ঠীকে নিয়ন্ত্রণ করে। তবে তালেবান এ বিষয়ে আগ্রহ দেখায়নি। পাকিস্তান এসব গোষ্ঠীকে নিজেদের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে দেখে।

আলোচনা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল একটি আফগান সূত্র জানিয়েছে, এই বিষয়ে ‘উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়ের’ পর আলোচনা শেষ হয়। তালেবান বলেছে, পাকিস্তানি তালেবানের ওপর তাদের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। এসব গোষ্ঠী বিগত কয়েক সপ্তাহে পাকিস্তানি সেনাদের ওপর একাধিক হামলা চালিয়েছে।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে চাইলে আফগানিস্তানের তালেবান সরকার ও তাদের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র কোনো সাড়া দেয়নি। একই অবস্থা পাকিস্তানের সেনাবাহিনী, প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের।

গত শনিবার পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মুহাম্মদ আসিফ বলেন, তাঁর বিশ্বাস, আফগানিস্তান শান্তি চায়, তবে ইস্তাম্বুলে কোনো চুক্তিতে পৌঁছাতে ব্যর্থতা মানে হবে ‘যুদ্ধে জড়ানো’।

গত শুক্র ও শনিবার ওই সংঘর্ষে ৫ জন পাকিস্তানি সেনা নিহত হন বলে জানিয়েছে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী। সেই সঙ্গে আফগানিস্তান থেকে আসা ২৫ সশস্ত্র যোদ্ধাকে হত্যার দাবিও করেছে তারা।