
পোল্যান্ডের আকাশসীমায় রাশিয়ার ড্রোন অনুপ্রবেশের জবাবে সেখানে আকাশ প্রতিরক্ষা মিশন চালিয়েছে ন্যাটো, যেটায় ব্রিটিশ যুদ্ধবিমানও অংশ নিয়েছে।
যুক্তরাজ্যের রয়্যাল এয়ারফোর্সের (আরএএফ) টাইফুন যুদ্ধবিমানগুলো শুক্রবার রাতে পোল্যান্ডে মোতায়েন করা হয়েছিল। নিজেদের পূর্ব প্রান্তে শক্তি বাড়ানোর অংশ হিসেবে সামরিক জোট ন্যাটো এই মিশন পরিচালনা করে।
এই মাসে রাশিয়া বারবার ন্যাটোর সদস্যদেশগুলোর আকাশসীমা লঙ্ঘনের পর এটা নিয়ে উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে। পোল্যান্ডের আকাশে রাশিয়ার ড্রোন অনুপ্রবেশের পর রোমানিয়ার আকাশে একটি রুশ ড্রোন শনাক্ত করা হয়। এরপর এস্তোনিয়ার আকাশসীমায় রুশ যুদ্ধবিমান দেখা যায়। রাশিয়া আকাশসীমা লঙ্ঘনের এই অভিযোগগুলো হয় অস্বীকার করেছে বা খাটো করে দেখিয়েছে।
যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষামন্ত্রী জন হিলি বলেন, আরএএফ যুদ্ধবিমানগুলো ‘একটি পরিষ্কার বার্তা’ দিয়েছে। সেটা হলো, ন্যাটোর আকাশসীমা রক্ষা করা হবে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমি সেসব অসাধারণ ব্রিটিশ পাইলট ও বিমানকর্মীদের নিয়ে গর্বিত, যাঁরা আমাদের মিত্রদের রাশিয়ার বেপরোয়া আগ্রাসন থেকে রক্ষা করার এই সফল অভিযানে অংশ নিয়েছেন।’
শুক্রবার রাতে লিংকনশায়ারের কনিংসবি বিমানঘাঁটি থেকে আরএএফের দুটি যুদ্ধবিমান পোল্যান্ডের আকাশে টহল দিতে গিয়েছিল। সেগুলোকে সহায়তার জন্য একটি জ্বালানিভর্তি আরএএফ ভয়েজারও ছিল। ভয়েজার থেকে আকাশেই যুদ্ধবিমানে জ্বালানি ভর্তি করা যায়। শনিবার ভোরে সেগুলো যুক্তরাজ্যে ফিরে আসে।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, শুক্রবার রাতে লিংকনশায়ারের কনিংসবি বিমানঘাঁটি থেকে আরএএফের দুটি যুদ্ধবিমান পোল্যান্ডের আকাশে টহল দিতে গিয়েছিল। সেগুলোকে সহায়তার জন্য একটি জ্বালানিভর্তি আরএএফ ভয়েজারও ছিল। ভয়েজার থেকে আকাশেই যুদ্ধবিমানে জ্বালানি ভর্তি করা যায়। শনিবার ভোরে সেগুলো যুক্তরাজ্যে ফিরে আসে।
১০ সেপ্টেম্বর পোল্যান্ডের আকাশসীমায় ১৯টি রুশ ড্রোনের অনুপ্রবেশের পর ন্যাটো ‘ইস্টার্ন সেনট্রি’ নামে এই মিশনের ঘোষণা দেয়।
এর পাঁচ দিন পর ব্রিটিশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিলি আরএএফ ব্রাইজ নরটন বিমানঘাঁটি পরিদর্শনে যান। সেখানে তিনি ন্যাটোর ‘ইস্টার্ন সেনট্রি’ মিশনে যুক্তরাজ্যও অংশ নেবে বলে নিশ্চিত করেন।
তিনি রাশিয়ার কর্মকাণ্ডকে ‘বেপরোয়া, বিপজ্জনক এবং নজিরবিহীন’ বলে বর্ণনা করেন। হিলি বলেন, ‘যখন আমাদের ওপর হুমকি আসে, আমরা একসঙ্গে প্রতিক্রিয়া জানাই।’
এদিকে মস্কো বলেছে, পোল্যান্ডের কোনো স্থাপনা লক্ষ্যবস্তু করার ‘কোনো পরিকল্পনা তাদের নেই’।
রাশিয়া ২০২২ সালে ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রায় আক্রমণের পর থেকে তাদের ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র মাঝেমধ্যে দেশটির সীমান্তবর্তী অন্যান্য দেশেও প্রবেশ করেছে।
ন্যাটোর আকাশসীমা রক্ষা করা হবে। যখন আমাদের ওপর হুমকি আসে, আমরা একসঙ্গে প্রতিক্রিয়া জানাই।জন হিলি, যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষামন্ত্রী
কিন্তু একদিনে পোল্যান্ডে ১৯টি ড্রোন প্রবেশ করা এ ধরনের সবচেয়ে গুরুতর ঘটনা ছিল। সেদিন পোল্যান্ড তিনটি ড্রোন ভূপাতিত করে। ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ন্যাটোর কোনো সদস্যদেশের সরাসরি রাশিয়ার ড্রোন ভূপাতিত করার ঘটনা এটাই প্রথম।
পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ডোনাল্ড টাস্ক বলেছেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর তাঁর দেশ এই প্রথম সরাসরি সংঘাতে জড়িয়ে পড়ার সবচেয়ে কাছাকাছি চলে গিয়েছিল।
ন্যাটোভুক্ত দ্বিতীয় দেশ রোমানিয়া, যারা ১৪ সেপ্টেম্বর রাশিয়ার একটি ড্রোন তাদের আকাশসীমা লঙ্ঘন করেছে বলে অভিযোগ করে।
১০ সেপ্টেম্বর পোল্যান্ডের আকাশসীমায় ১৯টি রুশ ড্রোনের অনুপ্রবেশের পর ন্যাটো ‘ইস্টার্ন সেনট্রি’ নামে এই মিশনের ঘোষণা দেয়।
তারপর গত শুক্রবার এস্তোনিয়া রাশিয়ার তিনটি যুদ্ধবিমান ‘অনুমতি ছাড়াই তাদের আকাশে প্রবেশ করেছে এবং মোট ১২ মিনিট অবস্থান করেছে’ বলে অভিযোগ তুলে ন্যাটোর অন্য সদস্যদের জরুরি আলোচনা সভা ডাকার অনুরোধ করে। রাশিয়া এস্তোনিয়ার আকাশসীমা লঙ্ঘনের কথা অস্বীকার করেছে।