
ভারতের রাজনীতি উত্তাল করে তোলা নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) এবং জাতীয় নাগরিক নিবন্ধনের (এনআরসি) পক্ষে নেই পশ্চিমবঙ্গের বেশির ভাগ মানুষ। এবিপি আনন্দ এবং সিএনএক্সের এক যৌথ জনমত জরিপে এ চিত্র উঠে এসেছে।
গত ৮ ও ৯ জানুয়ারি এ জরিপ হয়। এতে অংশ নেন রাজ্যের ২ হাজার ১৩৪ জন মানুষ। আজ মঙ্গলবার সেই জরিপের প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, পশ্চিমবঙ্গের ৫৩ শতাংশ মানুষ মোদি সরকারের নাগরিকত্বের সংশোধনী আইন বা সিএএ’কে সমর্থন করে না। আর ৪৩ শতাংশ মানুষ সমর্থন করে। বাকি ৪ শতাংশ মানুষ এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। নাগরিকত্ব আইনের যাঁরা বিরোধী, তাঁরা মনে করেন, আইনটি সংবিধানের মূল ধারার বিরোধী। তবে এই আইন বাতিলের আন্দোলনে বাসে-ট্রেনে আগুন লাগানোর মতো হিংসাত্মক আন্দোলনকে সমর্থন করে না ৬৮ শতাংশ মানুষ। সমর্থন করে মাত্র ৯ শতাংশ মানুষ।
৫৫ শতাংশ মানুষ জানিয়েছে, তারা চায় না ভারতে এনআরসি চালু হোক। এনআরসি চেয়েছে ৪১ শতাংশ মানুষ। বাকিরা এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
আবার এই সিএএ নিয়ে মমতার আন্দোলনকে সমর্থন করে ৫৯ শতাংশ মানুষ। ৫১ শতাংশ মানুষ মনে করে এই আন্দোলনের ফলে মমতা রাজনৈতিক সুবিধা পাবেন। আবার ৫০ শতাংশ মানুষ মনে করে, ধর্মীয় বিভাজনের জন্য মোদি সরকার এই আইন প্রণয়ন করেছে। ৩০ শতাংশ এর উল্টোটা মনে করে।
প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর একে স্বাগত জানিয়েছেন তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেছেন, ‘এই সমীক্ষায় প্রমাণিত হয়ে গেছে আমাদের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সঠিক পথে চলছেন। আমাদের নেত্রী আন্দোলনের সঠিক দিশা দিয়েছেন। আমাদের সমর্থনের হার দিনে দিনে আরও বাড়বে।’
অন্যদিকে কংগ্রেস এবং সিপিএম এই সমীক্ষা রিপোর্টকে অতটা গুরুত্ব দেয়নি। সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য ও সাবেক সাংসদ মহম্মদ সেলিম বলেছেন, ’প্রতিদিনই এই আন্দোলনের চেহারা বদলাচ্ছে। সমীক্ষায় তা ধরা পড়ছে না। আসলে দুই সরকারের ওপর মানুষের আস্থা কমে যাওয়ায় মানুষ রাস্তায় নেমেছে। মানুষের সেই মেজাজ ধরা পড়েনি এই সমীক্ষায়’। আর কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি ও লোকসভার বিরোধীদলীয় নেতা অধীর চৌধুরী বলেছেন, ’মোদি-দিদি (মমতা) বৈঠকের পর রাজনৈতিক পরিস্থিতি বদলে গেছে। অনেকেই এখন মনে করেন, তৃণমূলের বিজেপি বিরোধিতা আসলে একটি নাটক। মানুষও বুঝতে পারছে সিএএ নিয়ে এটা মোদি-মমতার খেলা।’
অন্যদিকে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষও বলেছেন, ‘মানুষ যদি এই সিএএর বিরুদ্ধে রাস্তায় নামতো তবে তো আমরা হাঁটতেই পারতাম না। উদ্বাস্তু ও মতুয়াদের এই সমীক্ষায় ধরা হয়েছে, তেমনটা মনে করছি না।’