ইরানের তেল বিক্রি বন্ধ করতে নতুন করে একগুচ্ছ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এ নিষেধাজ্ঞার নিশানা হয়েছেন কয়েকজন ব্যক্তি ও কয়েকটি প্রতিষ্ঠান। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা ইরানের তেল বিক্রি ও অবৈধ তহবিল স্থানান্তরের সঙ্গে যুক্ত; যা দেশটির সামরিক কর্মকাণ্ডে সহায়তা করছে।
গতকাল মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ মন্ত্রণালয়ের বৈদেশিক সম্পদ নিয়ন্ত্রণ কার্যালয় (ওএফএসি) থেকে এ তথ্য নিশ্চিত করে বলা হয়, তারা হংকং ও সংযুক্ত আরব আমিরাতভিত্তিক এক ডজনের বেশি ইরানি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে নিষেধাজ্ঞার আওতায় এনেছে।
যেসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে, তারা ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড ও ইরানি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের জন্য (দেশের বাইরে থেকে) তহবিল স্থানান্তরে সহায়তা করেছে বলে দাবি যুক্তরাষ্ট্রের।
মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয় বলেছে, যে তহবিল স্থানান্তর করা হয়েছে, তার কিছু অংশ এসেছে ইরানের তেল বিক্রি থেকে।
নতুন নিষেধাজ্ঞার তালিকায় থাকা ইরানি নাগরিক আলিরেজা দেরাখশন ও আরশ এস্তাকি আলিভান্দ ইরান সরকারকে ১ কোটি ডলারের ক্রিপ্টোকারেন্সি কেনার সুযোগ করে দিয়েছেন বলে অভিযোগ যুক্তরাষ্ট্র সরকারের।
এ ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে মন্ত্রণালয় থেকে আরও বলা হয়, ইরানের এ ধরনের ‘ছায়া ব্যাংকিং’ নেটওয়ার্ক বিশ্বাসযোগ্যভাবে অবৈধ আর্থিক সুবিধা প্রদানকারীদের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। এর মাধ্যমে আন্তর্জাতিক আর্থিক ব্যবস্থার অপব্যবহার করা এবং বিদেশে থাকা ছদ্মবেশী প্রতিষ্ঠান ও ক্রিপ্টোকারেন্সির মাধ্যমে অবৈধভাবে প্রাপ্ত অর্থ বৈধ দেখিয়ে নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র সরকারের অভিযোগ, নতুন নিষেধাজ্ঞার তালিকায় থাকা ইরানি নাগরিক আলিরেজা দেরাখশন ও আরশ এস্তাকি আলিভান্দ ইরান সরকারকে ১ কোটি ডলারের ক্রিপ্টোকারেন্সি কেনার সুযোগ করে দিয়েছেন।
নিষেধাজ্ঞার ফলে এখন এ দুজনসহ তালিকায় থাকা অন্যান্য ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান যুক্তরাষ্ট্রে থাকা তাদের সম্পদের অধিকার হারাবে। এ ছাড়া, মার্কিন কোম্পানি ও নাগরিকদেরও তাদের সঙ্গে ব্যবসা করা নিষিদ্ধ থাকবে।
শিপিং শিল্পে মার্গারিটিস তাঁর কয়েক দশকের অভিজ্ঞতা ব্যবহার করে ইরানি তেলের অবৈধ পরিবহন ও বিক্রয় সহজ করেছেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের তেল বিক্রি ‘শূন্যে’ নামিয়ে আনতে চান। সে লক্ষ্য পূরণের অংশ হিসেবে এ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। তেহরান এখন পর্যন্ত নতুন এ নিষেধাজ্ঞা নিয়ে মুখ খোলেনি।
এর আগে গত আগস্টে যুক্তরাষ্ট্র একটি বহুজাতিক গ্রিক শিপিং কোম্পানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। কোম্পানিটির মালিক আন্তোনিওস মার্গারিটিস। তাঁর কোম্পানি সারা বিশ্বে পণ্য পরিবহন করে।
সে সময় যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়, ‘শিপিং শিল্পে মার্গারিটিস তাঁর অনেক দশকের অভিজ্ঞতা ব্যবহার করে ইরানি তেলের অবৈধ পরিবহন ও বিক্রয় সহজ করেছেন।’