
পাকিস্তান নিজের স্বার্থে আফগানিস্তানের শান্তি প্রতিষ্ঠা চায়। গতকাল রোববার পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কোরেশি এ কথা বলেন বলে এবিসি নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়।
নিজ শহর মুলতানে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে কোরেশি বলেন, প্রতিবেশী দেশ আফগানিস্তানে সহিংসতা বাড়ার ঘটনায় পাকিস্তান উদ্বিগ্ন। তিনি আশঙ্কা করছেন, সহিংসতা আরও বাড়লে বহু আফগান দেশ ছেড়ে পাকিস্তানে চলে আসতে পারে।
কোরেশি বলেন, এরই মধ্যে আগের বছরগুলোতে সংঘর্ষের ঘটনায় লাখ লাখ আফগান নাগরিক শরণার্থী হিসেবে পাকিস্তানে আছে। এখন আর নেওয়ার জায়গা নেই। তিনি বলেন, আফগানিস্তান থেকে চূড়ান্তভাবে মার্কিন ও ন্যাটো বাহিনী সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
তিনি আশা করছেন, যুদ্ধরত পক্ষগুলোর মধ্য আলোচনার মধ্য দিয়ে শান্তি স্থাপিত হবে। তিনি বলেন, দেশটিতে শান্তি স্থাপনে পাকিস্তান কূটনৈতিক চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। একই সঙ্গে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত নেতৃত্বকে স্বাগত জানিয়েছে।
১৯৮৯ সালে দেশটি থেকে সোভিয়েত বাহিনীকে প্রত্যাহার করে নেওয়ার পর মুজাহিদীন গ্রুপগুলোর মধ্যে লড়াইয়ের কারণে ৫০ লাখের বেশি আফগান পাকিস্তানে পালায়। এক হিসাবে বলা হয়, এখন ১৫ লাখ আফগান পাকিস্তানের শরণার্থীশিবিরে আছে।
এদিকে বার্তা সংস্থা এএফপির খবরে বলা হয়, দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশ কুন্দুজে সরকারি বাহিনী এবং তালেবানের মধ্যে সংঘর্ষ বৃদ্ধি পাওয়ায় কুন্দুজ শহর থেকে পাঁচ হাজারের বেশি নাগরিক পালিয়ে গেছে। প্রদেশ কুন্দুজে তালেবানের হামলায় গত এক সপ্তাহে অন্তত ২৯ বেসামরিক লোক নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ২২৫ জন। প্রদেশের ৯টি জেলার মধ্যে অধিকাংশই এখন তালেবানের নিয়ন্ত্রণে। দেশটি থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণার পর থেকে তালেবানের হামলা বৃদ্ধি পেয়েছে।
তালেবান যোদ্ধারা আফগানিস্তানে তাঁদের অবস্থান প্রায় পাকাপোক্ত করেছেন।
এ অবস্থায় গত সপ্তাহে আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি ও তাঁর সাবেক রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ আবদুল্লাহ আবদুল্লা হোয়াইট হাউসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বৈঠক দৃশ্যত আফগান প্রেসিডেন্টকে হতাশ করেছে। বৈঠকে জো বাইডেন বলেছেন, আফগানদেরই তাদের দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
তবে তিনি দেশটিতে মার্কিন সাহায্য-সহায়তা বহাল রাখার অঙ্গীকার করেন। উল্লেখ্য, ২০ বছর ধরে আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে বহুজাতিক বাহিনীর কথিত সন্ত্রাসবিরোধী লড়াই শেষে সে দেশ থেকে আগামী ১১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সব মার্কিন সেনা প্রত্যাহার করে নেওয়া হচ্ছে।