
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভবিষ্যতে কোনো আগ্রাসন চালানো হলে দ্রুততার সঙ্গে কঠোর জবাব দেওয়া হবে বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনির। গতকাল রোববার করাচিভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডেইলি জংকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন তিনি।
পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টের বাসভবনে জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ ইবন আল হুসেইনের সম্মানে আয়োজিত মধ্যাহ্নভোজের সময় ওই সাক্ষাৎকার দেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান। তিনি বলেন, ‘পাকিস্তানের জয়ের নেতৃত্ব আমি দিইনি। আল্লাহ দিয়েছেন। আল্লাহর বিশেষ রহমতে গত মে মাসে পাকিস্তানের শত্রুরা পরাজিত হয়েছিল।’
ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে বন্দুকধারীদের হামলার জেরে চলতি বছরের মে মাসে সংঘাতে জড়ায় ভারত ও পাকিস্তান। এ সময় ভারতের সাতটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার দাবি করে ইসলামাবাদ। ছয় দিন পাল্টাপাল্টি হামলার পর ১০ মে যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয় দুই দেশ। ওই সংঘাতের পর আসিম মুনিরকে ফিল্ড মার্শাল হিসেবে পদোন্নতি দেওয়া হয়।
ভারতের সঙ্গে ওই সংঘাতের প্রসঙ্গ টেনে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ডেইলি জংকে বলেন, পাকিস্তান শান্তির প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তবে কোনো আগ্রাসন হলে মে মাসে যেভাবে জবাব দেওয়া হয়েছিল, একইভাবে দ্রুততার সঙ্গে কঠোর জবাব দেওয়া হবে। ইমানদারদের আল্লাহ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে বিশ্বাসের সঙ্গে লড়াই করলে, তারা যেকেনো শত্রুকে পরাজিত করতে পারবে।
আসিম মুনির এমন সময় এ কথাগুলো বললেন যখন মাত্র কয়েক দিন আগেই পাকিস্তানের পার্লামেন্ট ২৭তম সংবিধান সংশোধনী বিল অনুমোদন করেছে। এই সংশোধনীর ফলে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন। এ ছাড়া তিনি আজীবন কোনো অপরাধ বা প্রশাসনিক অভিযোগের ক্ষেত্রে আইনগত দায়বদ্ধতা থেকে মুক্ত থাকবেন।
পাকিস্তানের বিরোধী দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) আইনপ্রণেতারা সেনাপ্রধানের এই ক্ষমতার তীব্র বিরোধিতা করেছেন। আর দেশটির আইনজীবী ও সংবিধানবিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন, এই সংস্কার বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন করতে পারে। দেশটির সংবিধানবিশেষজ্ঞ আসাদ রহিম খান বলেছেন, বিচারব্যবস্থার ওপর এমন আঘাত গত ১০০ বছরেও দেখা যায়নি।