সমর্থকদের উদ্দেশে কথা বলছেন জোহরান মামদানি। পাশে তাঁর বাবা মাহমুদ মামদানি, স্ত্রী রমা দুওয়াজি ও মা মীরা নায়ার (ডানে)। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে, ৪ নভেম্বর ২০২৫
সমর্থকদের উদ্দেশে কথা বলছেন জোহরান মামদানি। পাশে তাঁর বাবা মাহমুদ মামদানি, স্ত্রী রমা দুওয়াজি ও মা মীরা নায়ার (ডানে)। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে, ৪ নভেম্বর ২০২৫

মীরা নায়ারের সেই ছেলেটি কোন কোন ক্ষেত্রে প্রথম হিসেবে নিউইয়র্কের মেয়র হলেন

জোহরান মামদানি—যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরের নতুন মেয়র। এবারের নির্বাচনে তুমুল জনপ্রিয় প্রার্থী ছিলেন তিনি। কাজেই তিনি জয়ী হতে যাচ্ছেন, সেটা অনেকটাই ধারণা করা গিয়েছিল। এমনকি খোদ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর বিরুদ্ধে তোপ দেগেছিলেন। কিন্তু ভোটের লড়াইয়ে শেষ হাসি হেসেছেন তরুণ এ রাজনীতিক।

বয়স ৩৪ বছর, দেখতে সুদর্শন জোহরান মামদানি তরুণদের বেশ পছন্দের। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও বেশ সরব ও জনপ্রিয় তিনি। গতকাল মঙ্গলবারের নির্বাচনে জিতে বেশ কয়েকটি ‘প্রথম’ নিজের নামের পাশে যুক্ত করেছেন জোহরান মামদানি।

জোহরান মামদানি নিউইয়র্কের প্রথম মুসলিম মেয়র। শহরটির ইতিহাসে ১৮৯২ সালের পর সবচেয়ে কমবয়সী মেয়র তিনি। সেই সঙ্গে তিনি নিউইয়র্কের প্রথম মেয়র, যিনি যুক্তরাষ্ট্র নয় বরং আফ্রিকায় জন্ম নিয়েছেন।

নিউইয়র্কে সমর্থকদের উদ্দেশে কথা বলছেন জোহরান মামদানি। পাশে তাঁর মা মীরা নায়ার (বাঁয়ে), স্ত্রী রমা দুওয়াজি ও বাবা মাহমুদ মামদানি (ডানে)

শুধু অশ্বেতাঙ্গ নন, জোহরান মামদানি একজন ভারতীয় বংশোদ্ভূত মুসলিম। তাঁর মা ভারতের বিখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা মীরা নায়ার। বাবা কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের খ্যাতিমান অধ্যাপক মাহমুদ মামদানিও জন্মগতভাবে ভারতীয়।

ইকোনমিক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জোহরান মামদানির জন্ম উগান্ডার কাম্পালায়। সাত বছর বয়সে তিনি মা–বাবার সঙ্গে নিউইয়র্কে আসেন। ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব পান তিনি।

রাজনীতিতে যুক্ত হয়ে কুইন্স এলাকা থেকে নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের আইনসভার সদস্য নির্বাচিত হন বামঘেঁষা ডেমোক্র্যাট জোহরান মামদানি। তাঁর স্ত্রী রমা দুওয়াজি সিরীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক।

এক সমর্থকের সঙ্গে জোহরান মামদানি

রাজনীতিতে একেবারেই নবাগত জোহরান মামদানির অনন্য পারিবারিক ঐতিহ্য সবার নজর কেড়েছে। নিউইয়র্ক শহরকে নিম্ন আয়ের মানুষদের জন্য অধিক বসবাসযোগ্য করে তোলার স্বপ্ন দেখিয়ে বাজিমাত করেছেন তিনি।

সরকারি ব্যবস্থাপনায় ন্যায্যমূল্যের মুদিদোকান খোলা, স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য নতুন দুই লাখ অ্যাপার্টমেন্ট নির্মাণ, ভাড়াভিত্তিক অ্যাপার্টমেন্টে আগামী চার বছর ভাড়া না বৃদ্ধি করা, নিখরচায় শিশু পরিচর্যার ব্যবস্থা, বিনা ভাড়ার সরকারি বাসের ব্যবস্থা করার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোটারদের মনোযোগ কেড়েছেন জোহরান মামদানি।

প্রতিদ্বন্দ্বী অ্যান্ড্রু কুমোর মতো বাঘা রাজনীতিককে পেছনে ফেলে জোহরান মামদানি বাজিমাত করেছেন। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের পছন্দের প্রার্থী ছিলেন কুমো। এবারের নির্বাচনে ট্রাম্প প্রকাশ্যে সমর্থন দিয়েছিলেন কুমোকে।