শততম টি–টোয়েন্টি ম্যাচ বাংলাদেশের
২৮ নভেম্বর, ২০০৬—এদিন খুলনায় জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টি খেলে বাংলাদেশ। সেটি ছিল জিম্বাবুয়েরও প্রথম আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টি ম্যাচ। আজ সেই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেই নিজেদের শততম টি–টোয়েন্টি ম্যাচ খেলতে নেমেছে বাংলাদেশ।
নিজেদের শততম টেস্ট ও ওয়ানডেতে জিতেছে বাংলাদেশ। এবার টি–টোয়েন্টিতেও কি জয় দিয়ে নিজেদের শততম ম্যাচ উদযাপন করতে পারবে বাংলাদেশ?
টস হেরে ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ
হারারেতে আজ তিন ম্যাচ টি–টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে জিম্বাবুয়ের মুখোমুখি বাংলাদেশ। টস হেরে আগে ফিল্ডিং করবে বাংলাদেশ।
এর আগে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজে জিম্বাবুয়েকে ৩–০ ব্যবধানে ধবলধোলাই করে বাংলাদেশ।
প্রথম টি–টোয়েন্টি ম্যাচে বাংলাদেশ দল
মোহাম্মদ নাঈম, লিটন দাস, সাকিব আল হাসান, সৌম্য সরকার, মাহমুদউল্লাহ (অধিনায়ক), আফিফ হোসেন, নুরুল হাসান (উইকেটকিপার), মেহেদী হাসান, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, শরীফুল ইসলাম ও মোস্তাফিজুর রহমান।
সাড়ে চার বছর পর নুরুল!
২০১৭ সালের জানুয়ারিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দেশের হয়ে সর্বশেষ টি–টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেন উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান নুরুল হাসান। প্রায় সাড়ে চার বছর পর আজ দেশের হয়ে টি–টোয়েন্টিতে মাঠে নামছেন তিনি। ওয়ানডে সিরিজে সর্বশেষ ম্যাচে নুরুলের ব্যাটিং পারফরম্যান্স নজর কেড়েছিল সবার।
প্রথম টি–টোয়েন্টিতে জিম্বাবুয়ে দল
রেজিস চাকাভা (উইকেটকিপার), তাদিওয়ানাশে মারুমানি, তারিসাই মুসাকান্দা, ডিওন মায়ার্স, ওয়েসলি মাধেভেরে, সিকান্দার রাজা (অধিনায়ক), রায়ান বার্ল, ওয়েলিংটন মাসাকাদজা, লুক জঙ্গুয়ে, ব্লেসিং মুজারাবানি ও রিচার্ড এনগারাভা।
জিম্বাবুয়ের হয়ে টি–টোয়েন্টিতে অভিষেক হচ্ছে ডিওন মায়ার্সের।
দুইয়ে দুই হবে রাজার?
টি–টোয়েন্টিতে জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক হিসেবে এটি দ্বিতীয় ম্যাচ সিকান্দার রাজার। ছয় বছর আগে (১৯ জুলাই) এ মাঠেই ভারতের বিপক্ষে টি–টোয়েন্টিতে জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক হিসেবে নিজের প্রথম ম্যাচে জয় তুলে নিয়েছিলেন সিকান্দার রাজা। আজ পারবেন জয়ের খাতায় দুইয়ে দুই করতে?
সাইফউদ্দিনকে দিয়ে শুরু
ওয়ানডে সিরিজে শেষ ম্যাচে বল হাতে ভালো করতে পারেননি পেস অলরাউন্ডার মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। আজ প্রথম টি–টোয়েন্টি ম্যাচে তাঁকে দিয়ে বোলিং শুরু করান অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। প্রথম ওভারে ৩ রান দিয়ে ভালো শুরু করেছেন সাইফউদ্দিন। অন্য প্রান্তে আক্রমণে মোস্তাফিজুর রহমান।
প্রথম ছক্কা!
দ্বিতীয় ওভারে মোস্তাফিজুর রহমানের করা দ্বিতীয় বলে ছক্কা! বাংলাদেশি পেসারের লেংথ বল সনাথ জয়াসুরিয়ার মতো ফ্লিক করে ডিপ স্কয়ার লেগ দিয়ে ছক্কা মারেন মারুমানি। দারুণ শট!
সৌম্যর দারুণ ক্যাচ!
দ্বিতীয় ওভারে মোস্তাফিজকে আবারও তুলে মারার খেসারত গুণলেন জিম্বাবুয়ে ওপেনার মারুমানি। অফ স্টাম্পের বাইরের বল লেগে টেনে খেলতে গিয়ে টাইমিংয়ে গড়বড় করেন। সীমানা থেকে দৌড়ে এসে দারুণ এক ক্যাচ নেন সৌম্য সরকার।
২ ওভার শেষে জিম্বাবুয়ে ১ উইকেটে ১২। ক্রিজে রয়েছেন রেজিস চাকাভা ও ওয়েসলি মাধেভেরে।
তৃতীয় ওভারেই সাকিব
উইকেটে দুজনেই ডানহাতি ব্যাটসম্যান। তা দেখেই বুঝি বাঁহাতি স্পিনারকে আক্রমণে নিয়ে এলেন মাহমুদউল্লাহ? সাকিব! জিম্বাবুয়ের দুজন ডানহাতি ব্যাটসম্যান দেখে তৃতীয় ওভারেই বোলিংয়ে সাকিব আল হাসান। শুরুটা তেমন ভালো করতে পারেননি। দুটি চার হজম করে নিজের প্রথম ওভারে দিয়েছেন ১১ রান।
৩ ওভার শেষে জিম্বাবুয়ে ১ উইকেটে ২৩।
চার ওভারে ওরা আলাদা ‘চার’
প্রথম ওভার করেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। দ্বিতীয় ওভার মোস্তাফিজুর রহমান। তৃতীয় ওভার সাকিব আল হাসান। চতুর্থ ওভার শরীফুল ইসলাম। জিম্বাবুয়ের ইনিংসে প্রথম চার ওভারে চারজন আলাদা বোলার ব্যবহার করলেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। তাতে লাভ? ১টি উইকেট পড়লেও বিশেষ সুবিধা হয়নি। ওভারপ্রতি গড়ে ৯.৫০ করে রান তুলে জিম্বাবুয়ে ৪ ওভার শেষে ১ উইকেটে ৩৮।
চড়ে বসেছেন মাধেভেরে (১১ বলে ১৫*) ও চাকাভা (৬ বলে ১৪*)।
যে ট্রফির জন্য লড়াই
প্রথম টি–টোয়েন্টি ম্যাচের আগে সিরিজের ট্রফি হাতে পোজ দেন দুই দলের অধিনায়ক—সিকান্দার রাজা ও মাহমুদউল্লাহ।
পাওয়ার প্লে–তে জিম্বাবুয়ের ‘পাওয়ার’
দ্বিতীয় ওভারে মারুমানিকে হারালেও পাওয়ার প্লে–র প্রথম ৬ ওভার শেষে ভালো শুরু পেয়েছে জিম্বাবুয়ে। ৬ ওভার শেষে তাদের সংগ্রহ ১ উইকেটে ৫০। দলীয় ১০ রানে মারুমানি আউট হওয়ার পর দ্বিতীয় উইকেটে ২৫ বলে অবিচ্ছিন্ন ৪০ রানের ঝোড়ো গতির জুটি এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন চাকাভা–মাধেভেরে।
চাকাভা–মাধেভেরে জুটির ‘পঞ্চাশ’
অষ্টম ওভারে স্পিনার মেহেদী হাসানকে আক্রমণে আনেন মাহমুদউল্লাহ। তাঁকে প্রথম বলেই চার মেরে দ্বিতীয় উইকেটে ৫০ রানের জুটি গড়ে ফেলেন চাকাভা। মেহেদীর শুরুটা মোটেও ভালো হয়নি। হাফ ভলি ডেলিভারির খেসারত দিয়েছেন। দুটি ছক্কা ও এক চারে মোট ১৮ রান হজম করেন।
সাকিবের ভেলকি
দ্রুতগতিতে রান তুলে ক্রমেই বিপজ্জনক হয়ে উঠছিলেন চাকাভা–মাধেভেরে জুটি। নবম ওভারে বোলিংয়ে ফিরে প্রথম বলেই মাধেভেরেকে তুলে নেন সাকিব। তাঁকে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে ফেরার আগে ২৩ বলে ২৩ রান করেন মাধেভেরে। এর মধ্য দিয়ে ভাঙল চাকাভা–মাধেভেরের ৩৮ বলে ৬৪ রানের জুটি।
অভিষিক্ত ডিওন মায়ার্স এসে জুটি বেঁধেছেন খুনে মেজাজে থাকা চাকাভার সঙ্গে। জিম্বাবুয়ে ৯ ওভার শেষে ২ উইকেটে ৭৭।
আক্রমণে বাংলাদেশ অধিনায়ক, জিম্বাবুয়ের পাল্টা জবাব
দশম ওভারে বোলিংয়ে বাংলাদেশ অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। কিন্তু তিনিও সুবিধা করতে পারেননি। দুটি চার হজম করে ১৪ রান দেন তিনি। ১০ ওভার শেষে জিম্বাবুয়ে ২ উইকেটে ৯১।
স্বস্তি?
সে তো বটেই! ২১ বলে ৪৩ রান করা চাকাভা স্রেফ খুনে মেজাজে ছিলেন। ১১তম ওভারের প্রথম বলে তাঁকে রান আউট করে বাংলাদেশ দলে স্বস্তি ফিরিয়েছেন উইকেটকিপার নুরুল হাসান। ২ ছক্কা ও ৫ চার মেরে ক্রমেই বিপজ্জনক হয়ে উঠছিলেন চাকাভা (২২ বলে ৪৩)।
এক ওভারে দুই উইকেট!
শরীফুলের করা ১১তম ওভারে খেলায় পাল্টা চাপ বিস্তার বাংলাদেশের। ওভারের প্রথম বলে চাকাভাকে রান আউট করেন উইকেটকিপার নুরুল। পঞ্চম বলে জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক সিকান্দার রাজার আউটেও আছে নুরুলের অবদান। খোঁচা মারতে গিয়ে তাঁকে ক্যাচ দেন রাজা (০)। জিম্বাবুয়ে ১১ ওভার শেষে ৪ উইকেটে ৯২।
সৌম্যর উইকেট!
জিম্বাবুয়ে রানের গতি বাড়ানোর চেষ্টা করছে। এতে উইকেটও হারাচ্ছে। সৌম্য সরকার এসে নিজের দ্বিতীয় ওভারে পেলেন উইকেটের দেখা। ইনিংসের ১৪তম ওভারে মুসাকান্দাকে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলেন সৌম্য। জিম্বাবুয়ে ১৪ ওভার শেষে ৫ উইকেটে ১১৫।
মায়ার্সের স্টাম্প!
অভিষেকে ৩৫ রান তুলে ফিফটির দিকে এগোচ্ছিলেন ডিওন মায়ার্স। ১৫তম ওভারে তাঁর স্বপ্ন ধুলিসাৎ করেন শরীফুল। শরীফুলের ফুল লেংথ ধরনের বলটি ব্যাটে খেলতে ব্যর্থ হন মায়ার্স। বোল্ড! ২২ বলে ৩৫ রান করে ফিরলেন তিনি।
শেষ ৫ ওভারে কী হবে?
প্রথম ১০ ওভার শেষে ২ উইকেটে ৯১ রান ছিল জিম্বাবুয়ের। পরের ৫ ওভারে মাত্র ২৯ রান তুলতে পেরেছে জিম্বাবুয়ে। ৪ উইকেট হারিয়ে পাল্টা চাপে পড়েছে তারা। এ সময় দারুণ বল করে ফিরেছেন বাংলাদেশের বোলাররা। কিন্তু বিপজ্জনক রায়ান বার্ল এখনো উইকেটে আছেন। শেষ ৫ ওভারে তাই আরও ভালো করতে হবে বোলারদের। ১৫তম ওভারে ১ রানে ১ উইকেট নিয়ে সেই ইঙ্গিতই দিয়েছেন শরীফুল।
তবে শেষ ৫ ওভারে বোলিংয়ে সাকিবকে পাচ্ছে না বাংলাদেশ। ৪ ওভারে ২৮ রানে ১ উইকেট নিয়ে ইনিংসের ১৩তম ওভারের মধ্যেই নিজের স্পেল শেষ করেছেন সাকিব।
জিম্বাবুয়ে ১৫ ওভার শেষে ৬ উইকেটে ১২০।
ইয়র্কার!
১৮তম ওভারের দ্বিতীয় বলে দারুণ এক ইয়র্কারে লুক জঙ্গুয়েকে তুলে নেন সাইফউদ্দিন। ১৬ বলে ১৮ রান করে আউট হলেন জঙ্গুয়ে। জিম্বাবুয়ে ১৭.২ ওভারে ৭ উইকেটে ১৪০।
অবিশ্বাস্য!
মারকুটে রায়ান বার্লের অবিশ্বাস্য ক্যাচ নিলেন বদলি হয়ে নামা শামীম হোসেন। লিটন দাসের জায়গায় তাঁকে ফিল্ডিংয়ে নামানো হয়। লং অনে তুলে মেরেছিলেন বার্ল। অনেকটা পথ দৌড়ে এসে বলে নিচে গিয়ে ক্যাচটি নেন শামীম। সীমানার খুব কাছাকাছি থাকায় তা ছুঁয়ে ফেলার ঝুঁকিও ছিল। কিন্তু শরীরের ওপর অসাধারণ নিয়ন্ত্রণ থাকায় ক্যাচটি বৈধভাবেই নেন শামীম। তৃতীয় আম্পায়ার রিপ্লে দেখে আউট দেন।
৬ বলে ৪ রান করে ফিরলেন বিপজ্জনক বার্ল। জিম্বাবুয়ে ১৮ ওভার শেষে ৮ উইকেটে ১৪৩অ
এবার মোস্তাফিজের ইয়র্কার
ব্যাটিং অর্ডারে ‘লেজ’–এর ব্যাটসম্যানদের জন্য ইয়র্কার সব সময়ই মারাত্মক অস্ত্র। মোস্তাফিজ তার সফল ব্যবহারে ১৮.২ ওভারে তুলে নিলেন এনগারাভাকে।
হ্যাটট্রিকের সুযোগ?
এনগারাভাকে তুলে নেওয়ার পরের বলেই মুজারাবানিকে নুরুলের ক্যাচে পরিণত করেন মোস্তাফিজ। কিন্তু ক্যাচটি ঠিকমতো নিতে পারেননি নুরুল। নিজেই জানিয়ে দেন পরিষ্কার ক্যাচ ছিল না। বেঁচে গেলেন মুজারাবানি।
মোস্তাফিজেই শেষ জিম্বাবুয়ে
১৯তম ওভারের শেষ বলে ব্লেসিং মুজারাবানিকে বোল্ড করে জিম্বাবুয়ের ইনিংসের ইতি টেনে দেন মোস্তাফিজ। ১৯ ওভারে ১৫২ রানে অলআউট জিম্বাবুয়ে। শততম টি–টোয়েন্টি ম্যাচে বাংলাদেশের লক্ষ্য ১৫৩।
৪ ওভারে ৩১ রানে ৩ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের সেরা বোলার মোস্তাফিজ।
শেষ ১০ ওভারে ম্যাচে ফিরেছে বাংলাদেশ
টি–টোয়েন্টি ক্রিকেটের মেজাজ ধরে রাখার চেষ্টা করেছে জিম্বাবুয়ে। ইনিংসের শুরু থেকে উইকেট হারালেও রান তোলার গতি বাড়ানোর চেষ্টা করেছে তারা। সে কারণে ১০ ওভার শেষে জিম্বাবুয়ের সংগ্রহ ছিল ২ উইকেটে ৯১। কিন্তু পরের ১০ ওভারে বাকি ৮ উইকেট নেওয়ার বিনিময়ে মাত্র ৬১ রান দিয়ে বাংলাদেশকে ম্যাচে ফিরিয়ে এনেছেন বোলাররা। শেষ ৫ ওভারে ৩২ রানের বিনিময়ে বোলাররা নিয়েছেন ৪ উইকেট।
মোট ৭ বোলার ব্যবহার করেন মাহমুদউল্লাহ। ৩১ রানে ৩ উইকেট নেওয়া মোস্তাফিজ সবচেয়ে উজ্জ্বল। ৩ ওভারে ১৭ রানে ২ উইকেট নেওয়া শরীফুল সবচেয়ে কিপটে। ২৩ রানে ২ উইকেট নেন সাইফউদ্দিন। ১টি করে উইকেট সাকিব ও সৌম্যর। মোট ৮ উইকেট নিয়েছেন পেসাররা (সৌম্যকে ধরে)।
জিম্বাবুয়ের হয়ে ২২ বলে ৪৩ রান করেন চাকাভা। তিনি উইকেট থাকতে মনে হয়েছে প্রায় দুই শ ছুঁইছুঁই স্কোর হতে পারে জিম্বাবুয়ের। ২২ বলে ৩৫ রান করেন ডিওন মায়ার্স। ২৩ রান করেন মাধেভেরে।
বাংলাদেশের রান তাড়া শুরু
জয়ের জন্য ১৫৩ রানের লক্ষ্যে ওপেনিং জুটিতে নেমেছেন সৌম্য সরকার ও মোহাম্মদ নাঈম। নিয়মিত ওপেনার লিটন দাসকে তিনে দেখা যেতে পারে। প্রথম ওভার শেষে বাংলাদেশ বিনা উইকেটে ৫ রান তুলেছে। পঞ্চম বলে রান আউট হওয়ার ঝুঁকিতে পড়েছিলেন সৌম্য।
এক ওভারে তিন চার!
চতুর্থ ওভারে এসে ইনিংসে প্রথম চারের দেখা পেল বাংলাদেশ। এনগারাভার উঠে আসা বল পয়েন্টে ভালো টাইমিং করে চার মারেন মোহাম্মদ নাঈম। বেশ সাবধানি শুরু করেছিলেন নাঈম–সৌম্য। এই ওভারের শেষ বলে পয়েন্ট দিয়ে নাঈমের মারা দ্বিতীয় ও তৃতীয় চারটি ছিল দেখার মতো।
৪ ওভার শেষে বাংলাদেশ বিনা উইকেট ২৩।
হাত খুললেন সৌম্যও
সৌম্যর হাত ও চোখের সমণ্বয় নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই। পঞ্চম ওভারে লুক জঙ্গুয়ের বলটা যে একটু খাটো লেংথে পড়বে তা যেন সৌম্য আগেই বুঝতে পেরেছিলেন! মিড উইকেট দিয়ে ছক্কা! দেখার মতো শট।
কবজির খেল নাঈমের
লুক জঙ্গুয়ের করা বলটা হাফ ভলি ছিল না। বেশ ভালো লেংথ থেকেই মাঝ স্টাম্পে ছিল। নাঈম পিক আপ শটে কবজির মোচড়ে পাঠালেন ডিপ স্কয়ার লেগে! দারুণ শট। ৫ ওভার শেষে বাংলাদেশ বিনা উইকেটে ৩৫। ১৬ বলে ২২ রানে অপরাজিত নাঈম। ১৪ বলে ১১ রান নিয়ে অন্য প্রান্তে সৌম্য।
পাওয়ার প্লে–তে শক্ত ভিত
জিম্বাবুয়ে পাওয়ার প্লে–তে ৬ ওভার শেষে ১ উইকেটে ৫০ রান তুলেছিল। বাংলাদেশ এ সময়ে ৪৩ রান রান তুললেও কোনো উইকেট হারায়নি। উল্টো উইকেটে সেট হয়ে ঝড়ের ইঙ্গিত দিচ্ছেন সৌম্য–নাঈম জুটি। ষষ্ট ওভারে এনগারাভাকে মিডউইকেটে ভীষণ জোরে পুল করে চার মারেন সৌম্য।
জিম্বাবুয়ের কৌশলের ঝুলিতে টান?
৬ ওভারের মধ্যে বাংলাদেশের ওপেনিং জুটি ভাঙতে না পারায় স্বয়ং জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক সিকান্দার রাজা বল হাতে তুলে নিলেন। তেমন সুবিধা করতে পারেননি সপ্তম ওভারে। ৬ রান দেন। ৭ ওভার শেষে বাংলাদেশ বিনা উইকেটে ৪৯।
সৌম্য–নাঈমের ‘ফিফটি’
বেশ সাবধানি শুরু করেছিলেন দুজন। উইকেটে সেট হওয়ার পর হাত খুলেছেন দুই ওপেনার সৌম্য সরকার ও মোহাম্মদ নাঈম। ৭.১ ওভারে ৫০ রানের জুটির দেখা পান দুজন। মাঝে এক বল পর মাধেভেরেকে দারুণ এক চার মারেন সৌম্য। দুই ওপেনার স্বাচ্ছন্দ্যে ব্যাট করছেন। ৮ ওভার শেষে বাংলাদেশ বিনা উইকেটে ৫৬।
সৌম্যর ভয়াল ছক্কা!
সৌম্যর ডাউন দ্য উইকেট তাঁর ও বোলার––দুজনের জন্যই বিপজ্জনক। এ যাত্রায় অবশ্য বিপদে পড়লেন বোলার ওয়েলিংটন মাসাকাদজা। এগিয়ে এসে মাসাকাদজাকে লং অনের ওপর দিয়ে বিশাল ছক্কা হাঁকালেন বাঁহাতি এ ওপেনার। ৯ ওভার শেষে বাংলাদেশ বিনা উইকেটে ৬৬।
লারা হতে চাইলেন নাঈম?
ক্যারিবিয়ান কিংবদন্তি ব্রায়ান লারা স্পিনারদের ড্রাইভ কিংবা তুলে মারতে গিয়ে অনেক সময় এক হাত ব্যবহার করতেন শট খেলার শেষ মুহূর্তে। মোহাম্মদ নাঈম কি তাঁকে অনুকরণ করার চেষ্টা করলেন?
১০ম ওভারে সিকান্দার রাজার দ্বিতীয় বলটি একটু সামনে পড়েছিল। স্ট্রেট তুলে খেলতে গিয়ে নাঈম সম্ভবত শেষ মুহূর্তে নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছিলেন। অগত্যা এক হাতেই শটটি খেলা সম্পুর্ণ করতে হয় বাঁহাতি এ ওপেনারকে। চার!
১০ ওভার শেষে বাংলাদেশ বিনা উইকেটে ৭৬। জয়ের জন্য শেষ ১০ ওভারে চাই ৭৭ রান।
সৌম্য–নাঈমের রেকর্ড!
গত বছর ঢাকায় এই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেই ওপেনিংয়ে ৯২ রানের জুটি গড়েছিলেন তামিম ইকবাল ও লিটন দাস। সেটি ছিল টি–টোয়েন্টিতে ওপেনিংয়ে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রানের জুটি।
ছিল––কারণ, তামিম ও লিটনের সেই জুটির রেকর্ড আজ সেই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেই ভাঙলেন সৌম্য–নাঈম। ১২তম ওভারে রেকর্ডটি নতুন করে লেখান তারা। ১২ ওভার শেষে বাংলাদেশ বিনা উইকেটে ৯৯।
সৌম্য–নাঈমের ১০০ রানের জুটি
জিম্বাবুয়ের হয়ে ১৩তম ওভারে দারুণ বল করেন মুজারাবানি। মাত্র ২ রান দেন তিনি এই ওভারে। তবে ১৩তম ওভারেই ওপেনিং জুটিতে এক শ রান পেরিয়ে যান সৌম্য–নাঈম। বাংলাদেশ বিনা উইকেটে ১০১।
সৌম্য ফিফটি করে আউট!
১৪তম ওভারের প্রথম বলে ২ রান নিয়ে ফিফটির দেখা পাওয়ার পর আউট সৌম্য। দ্বিতীয় রান নিতে গিয়ে রান আউট হন তিনি। মাসাকাদজার থ্রো থেকে তাঁকে রান আউট করেন জিম্বাবুয়ে উইকেটকিপার চাকাভা। ২ ছক্কা ও ৪ চারে ৪৫ বলে ৫০ রানে আউট হলেন সৌম্য।
১৪ ওভার শেষে বাংলাদেশ ১ উইকেটে ১০৯। ৪৭ রানে অপরাজিত নাঈমের সঙ্গে উইকেটে রয়েছেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ (৬*)।
শেষ ৫ ওভারে চাই ৩৮ রান।
লক্ষ্যটা সহজ। কিন্তু বল নষ্ট করলে কঠিন হয়ে উঠবে। ১৫ ওভার শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ১ উইকেটে ১১৫। জয়ের জন্য শেষ ৩০ বলে চাই ৩৮ রান। উইকেটে ৪৯ রানে অপরাজিত মোহাম্মদ নাঈম। অন্য প্রান্তে ১০ রানে ব্যাট করছেন মাহমুদউল্লাহ।
নাঈমের ফিফটি
১৬তম ওভারের প্রথম বলে ১ রান নিয়ে টি–টোয়েন্টিতে নিজের দ্বিতীয় ফিফটি তুলে নেন নাঈম। ৪০ বলে ৫০ রানে তিনি অপরাজিত। ৫টি চার মেরেছেন তিনি।
রান আউট!
১৭তম ওভারে মাসাকাদজার প্রথম দুই বল থেকে বাউন্ডারি না আসায় চাপ নিয়ে নেন ব্যাটসম্যানরা। তৃতীয় বলে রান নিতে গিয়ে আউট মাহমুদউল্লাহ (১২ বলে ১৫)। মুজারাবানির সরাসরি থ্রো–য়ে রান আউট হন তিনি।
১৮ বলে চাই ২৭ রান
ফিফটি তুলে নেওয়া নাঈমের সঙ্গে উইকেটের অপর প্রান্তে নুরুল হাসান। দুজনেই হাত খুলে খেলতে পারেন। তবে জিম্বাবুয়ের বোলারদের নিয়ন্ত্রিত লাইন–লেংথে তেমন সুবিধা করতে পারছেন না উইকেটে সেট হওয়া নাঈম। ১৭ ওভার শেষে বাংলাদেশ ২ উইকেটে ১২৬।
চাপমুক্ত!
এনগারাভার করা ১৮তম ওভারে এসেছে ১৬ রান। এতে ম্যাচ কঠিন হওয়ার চাপ থেকে বেরিয়ে এল বাংলাদেশ। একটি করে বাউন্ডারি মারেন নুরুল হাসান ও মোহাম্মদ নাঈম। ‘নো’ এবং ওয়াইডও দিয়েছেন এনগারাভা। জয়ের জন্য শেষ দুই ওভারে ১১ রান চাই বাংলাদেশের।
নুরুলের ছক্কা!
১৯তম ওভারের দ্বিতীয় বলে মুজারাবানিকে ছক্কা মেরে জয়কে সময়ের ব্যাপারে পরিণত করেন নুরুল হাসান। ৯ বলে ৩ রান দরকার বাংলাদেশের।
বাংলাদেশের শততম টি–টোয়েন্টিতে ৮ উইকেটের জয়
খেলাটা শেষ ওভারে যেতে দিলেন না নুরুল হাসান ও মোহাম্মদ নাঈম। ১৯তম ওভারেই ৮ উইকেটের জয় নিশ্চিত করল বাংলাদেশ। জয়ের জন্য শেষ দুই ওভারে দরকার ছিল ১১ রান। ১৯তম ওভারেই ১৪ রান তুলে নিয়ে তিন ম্যাচ টি–টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে জয় এনে দিলেন নাঈম–নুরুল জুটি। তৃতীয় উইকেটে তাদের ১৫ বলে অবিচ্ছিন্ন ৩৩ রানের জুটি ভীষণ কাজে লেগেছে বাংলাদেশের।
৭ চারে ৫১ বলে ৬৩ রানে অপরাজিত ছিলেন নাঈম। অন্য প্রান্তে ১ ছক্কা ও ১ চারে ৮ বলে ১৬ রানে অপরাজিত নুরুল। আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টিতে এটি ছিল বাংলাদেশের শততম ম্যাচ।
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলতে পারবেন না মুশফিক!
জিম্বাবুয়ে সফরে তিন ম্যাচ টি–টোয়েন্টি সিরিজে প্রথম ম্যাচ জয়ের সুসংবাদের সঙ্গে একটি দুঃসংবাদও পেল বাংলাদেশ। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দেশের মাটিতে টি–টোয়েন্টি সিরিজে খেলতে পারবেন না মুশফিকুর রহিম।
ওপেনিং জুটিতে জয়ের ভিত
আগে ব্যাট করে ১৯ ওভারে ১৫২ রান তুলেছে জিম্বাবুয়ে। এই রান তাড়া করে জিততে শুরুটা ভালো হওয়া দরকার ছিল বাংলাদেশের। সৌম্য সরকার এবং মোহাম্মদ নাঈমের ব্যাটে সেই ভিত মিলছে ওপেনিং জুটিতে। ৮০ বলে ১০১ রানের জুটি গড়েন তারা।
মাহমুদউল্লাহ তিনে নেমে নাঈমের সঙ্গে জুটি গড়ে ম্যাচ শেষ করে আসতে পারতেন। দূর্ভাগ্য, রান আউট হন বাংলাদেশ অধিনায়ক। এরপর নাঈমের সঙ্গে নুরুল হাসানের ১৫ বলে অবিচ্ছিন্ন ৩০ রানের জুটি জয়ের শেষ কাজটা সেরেছে বাংলাদেশের জন্য। ওয়ানডে সিরিজের শেষ ম্যাচে স্নায়ুচাপ ধরে রেখে দারুণ ইনিংস খেলা নুরুল আজও প্রমাণ করলেন চাপের মুহূর্তে খেলতে পারেন মাথা ঠান্ডা রেখে।
৫১ বলে ৬৩ রানে অপরাজিত ছিলেন নাঈম। তিনি এক প্রান্ত ধরে রাখায় অন্য প্রান্তে কাজটা সহজ হয়েছে বাকিদের জন্য। এর আগে সৌম্য সরকারের ব্যাট থেকে এসেছে ৪৫ বলে ৫০ রানের ভালো একটা ইনিংস। সব মিলিয়ে টি–টোয়েন্টি সিরিজে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে শুভসূচনা করল বাংলাদেশ। কাল হারারেতে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচ।
জিম্বাবুয়ের ছয় বোলার মিলে কোনো উইকেট নিতে পারেননি। কারণ যে দুটি উইকেট পড়েছে বাংলাদেশের, দুটোই রান আউট! সৌম্যও রান আউট হন।
তিন সংস্করণেই শততম ম্যাচ জয়!
অস্ট্রেলিয়া ও পাকিস্তানের পাশে নাম লেখাল বাংলাদেশ। তিন সংস্করণেই নিজেদের শততম ম্যাচে এর আগে জয়ের মুখ দেখেছিল শুধু অস্ট্রেলিয়া ও পাকিস্তান। আজ নিজেদের শততম টি–টোয়েন্টি ম্যাচ জিতে তাদের পাশে বসেছে বাংলাদেশ দল। এর আগে নিজেদের শততম টেস্ট ও ওয়ানডে ম্যাচে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ।
ম্যাচসেরা সৌম্য সরকার
জিম্বাবুয়ের ইনিংসে বল হাতে ২ ওভারে ১৮ রানে ১ উইকেট নেন সৌম্য। দারুণ একটি ক্যাচও নেন তিনি। ব্যাটিংয়ে ৪৫ বলে খেলেছেন ৫০ রানের ইনিংস। ব্যাটে–বলে এই অবদান রেখে ম্যাচসেরা সৌম্য, ‘সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ যে এখানে আসতে পেরেছি। ক্যাচটা ভালো ধরেছি। বোলিংয়ে অধিনায়ক যেভাবে চেয়েছেন সেভাবে বল করার চেষ্টা করেছি। তবে ব্যাটিংয়ে ম্যাচটা শেষ করে আসতে পারলে আরও ভালো হতো।’