বজ্রপাতে বছরে ৩০৬ মৃত্যু। কর্মক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে অসহায় হয়ে পড়ে একেকটি পরিবার।

সুনামগঞ্জ শহর থেকে কাঠইর ইউনিয়নের হোসেননগর গ্রামের দূরত্ব ২৫ কিলোমিটারের মতো। গ্রামটির পাশ দিয়ে বয়ে গেছে ছিলকা নদী।
অটোরিকশায় হোসেননগরের কাছাকাছি গিয়ে হাঁটতে হলো। তারপর নদী পার হয়ে পৌঁছালাম খারাতুন বেগমের (৪০) বাড়িতে, গত ৫ আগস্ট। পথে যেতে যেতে চোখে পড়ল পুরো গ্রামেই দারিদ্র্যের ছাপ—ক্ষয়ে যাওয়া টিনের চাল, জরাজীর্ণ দরজা, বাসিন্দাদের পরনে মলিন পোশাক।
হোসেননগর গ্রামের শেষ প্রান্তে থাকেন বজ্রপাতে নিহত আতাউরের স্ত্রী খারাতুন বেগম। তাঁর তিন সন্তান। দুটি মেয়ে ও একটি ছেলে।
খারাতুন সেসব বিধবার একজন, যাঁরা হাওরে বজ্রপাতে স্বামী হারিয়েছেন। বেসরকারি সংস্থা ডিজাস্টার ফোরামের হিসাবে, ২০১৪ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত দেশে বজ্রপাতে ৩ হাজার ৬০ জন নিহত হয়েছেন। বছরে গড়ে মৃত্যু ৩০৬ জনের। মানে প্রায় প্রতিদিন একজন। ২০২৪ সালে নিহত হন ২৮৮ জন। এর মধ্যে নারী ও শিশু ৮১ জন। পুরুষ ২০৭ জন।
বাংলাদেশের বজ্রপাত পরিস্থিতি নিয়ে ২০২৪ সালে প্রকাশিত বাংলাদেশের পাঁচ গবেষকের একটি গবেষণা থেকে জানা যায়, ২০১৫-২০২২ সময়ে বজ্রপাতে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে সুনামগঞ্জে। ১২১ জন। তাঁদের একজন খারাতুনের স্বামী।
খারাতুন বললেন তাঁর স্বামীর মৃত্যুর ঘটনা। ২০২০ সালের আশ্বিন মাসের (অক্টোবর) পয়লা দিন, শনিবার ভোর। গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির মধ্যে নৌকা নিয়ে বাড়ির পেছনের হাওরে মাছ ধরতে যান আতাউর রহমান। সঙ্গে গ্রামেরই আরেক ব্যক্তি ছিলেন। বাড়ি থেকে তাঁরা যখন দুই মাইলের মতো দূরে, তখন বাজ পড়ল। সঙ্গে সঙ্গে পানিতে পড়ে গেলেন আতাউর।
আতাউরের সঙ্গী তাঁকে পানি থেকে নৌকায় তুলে বাড়িতে নিয়ে আসেন। খারাতুন বলেন, ‘ঠাঠায় (বজ্রপাত) মুখ, ঘাড় জ্বলি গিছলো আতাউরের। হাসপাতালে নিয়া যাওয়ার পরে ডাক্তারে জানাইন তাইন মারা গেছইন।’
বজ্রপাতে আতাউর রহমান মারা যাওয়ার আগে খেয়ে–পরে বাঁচার মতো অবস্থা ছিল তাঁদের। কিন্তু স্বামীকে হারিয়ে তিন সন্তানের জন্য খাবার জোগানোই কঠিন হয়ে পড়ে খারাতুনের জন্য। তিনি বলেন, স্বামীর মৃত্যুর পর মানুষের বাড়িতে গৃহস্থালি কাজ শুরু করেন তিনি। বিনিময়ে পান কিছু চাল। আতাউরের মৃত্যুর পর একটা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন একটি ঘর করে দিয়েছে তাঁদের। তবে একমাত্র ছেলেকে স্কুল থেকে ছাড়িয়ে কৃষিমজুরের কাজ করতে পাঠাতে হচ্ছে।
খারাতুন যখন কথা বলছিলেন, তখন তাঁর চোখ ভিজে আসছিল। তিনি বলছিলেন, ‘বাচ্চাডারে লেখাফড়া করাত ফারিনি।’
খারাতুন ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা কী খান, জানতে চাইলাম। তিনি বলেন, ভাতের সঙ্গে হাওরের শাকপাতা ও আলুভর্তা খেয়েই দিন কাটে। ছেলে যেদিন কাজে না যায়, সেদিন মাছ ধরে। বেশির ভাগ সময় মাছ বিক্রি করে দেয়। টাকা দিয়ে তেল-নুন কেনে।
হাওর অঞ্চলে বজ্রপাতে পরিবারের উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে দুঃখের জীবন পার করছেন খারাতুনের মতো অনেক বজ্রবিধবা। হাওরের বিস্তীর্ণ খোলা প্রান্তরে কৃষককে ধান কাটতে যেতে হয়, জেলেদের মাছ ধরতে যেতে হয়। বজ্রপাতের সময় তাঁদের খোলা আকাশের নিচে থাকতে হয়। এতে কৃষক ও জেলের মৃত্যু বেশি হয়।
কৃষক ও জেলে পরিবারের জন্য তেমন কোনো ক্ষতিপূরণ, সহায়তা বা বিমাসুবিধা নেই। অনেক ক্ষেত্রে তারা সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির ভাতাও পায় না। বজ্রপাতে মৃত্যু ঠেকাতে সরকার তালগাছ লাগিয়ে, বজ্রনিরোধক দণ্ড বসিয়ে অনেক টাকা খরচ করেছে। তাতে কাজের কাজ কিছু হয়নি।
হাওরে ঘুরে পাঁচজন বজ্রবিধবার সঙ্গে কথা জানা গেছে, তাঁরা কেউই সরকারের বিধবাভাতা পাননি। অসহায় পরিবারের মা সন্তানদের পড়াশোনা বাদ দিয়ে কাজে পাঠাতে বাধ্য হয়েছেন।
২০২০ সালের পয়লা আশ্বিন বাজ পড়ে আতাউরের মতো আরেকজনের মৃত্যু হয়। তাঁর নাম ফরিদ আহমদ। ফরিদের বাড়ি সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার পাথারিয়া ইউনিয়নের উত্তর গাজীনগর গ্রামে। তাঁর স্ত্রী মোছাম্মৎ রুমি বলেন, আকাশে মেঘ দেখে তাঁর স্বামী হাওরে গরু আনতে গিয়েছিলেন। তখন ব্রজপাত হয়। তাঁর স্বামীকে আর বাঁচানো যায়নি।
ফরিদের পাঁচ সন্তান। তাঁর স্ত্রী রুমি প্রথম আলোকে বলেন, ‘সন্তানর পড়ালিখা বন্ধ করি মাইনষের খেতে কাজ করতে পাঠাই। নিজেও হাজহাম করিয়া কোনো রহম বাঁইচা আছি।’
সরকার বিধবা ও স্বামী নিগৃহীত নারীদের ভাতা দেয়। সমাজসেবা অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ২৯ লাখ নারীর জন্য জনপ্রতি মাসিক ৬৫০ টাকা ভাতা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
সুনামগঞ্জে দারিদ্র্যের হার বেশি। ২০২২ সালের জাতীয় খানা আয়-ব্যয় জরিপ অনুযায়ী দেশে গড় দারিদ্র্যের হার ছিল ১৮ দশমিক ৯ শতাংশ। সুনামগঞ্জে হারটি ছিল ২৭ দশমিক ২ শতাংশ। সুনামগঞ্জে ৩৯ হাজার নারী বিধবা ও স্বামী নিগৃহীত ভাতা পান।
হাওরের বজ্রবিধবাদের ভাতার বিষয়ে জানতে চাইলে সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. ইলিয়াস মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘বজ্রপাতে নিহতদের ২০ হাজার টাকা এককালীন সহায়তা দেওয়া হয়। এরপর তাঁরা কী অবস্থায় থাকেন, সেটা আমরা জানি না। আমি তাঁদের বিষয়ে খবর নেব। আমরা দেখব তাঁদের জন্য কী কী করা যায়।’ তিনি বলেন, ‘বিধবাভাতার উপযুক্ত হলে আমরা তাঁদের জন্য সে ব্যবস্থা করব। এটা না হলে অন্যান্য যে সামাজিক সুরক্ষার কর্মসূচি আছে, সেগুলোতে তাঁদের অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা করব।’
দেশের পূর্বাঞ্চলে বজ্রপাতের পরিমাণ প্রাকৃতিকভাবেই বেশি। ২০১৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ সংস্থা নাসা ও মেরিল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় বলা হয়, ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্যের কারণে দেশের পূর্বাঞ্চলে বজ্রপাতের পরিমাণ বেশি। ভারতের খাসি পাহাড় ও মেঘালয় এলাকায় মার্চ থেকে মে মাসজুড়ে মেঘ জমে থাকে। স্তরীভূত মেঘে মেঘে ঘর্ষণের ফলে ওই এলাকার পাদদেশে অবস্থিত সুনামগঞ্জে বজ্রপাতের সংখ্যাও বেশি হয়ে থাকে।
দেশে এপ্রিল, মে ও জুন মাসে বজ্রপাত বেশি হয়। এ সময়টাতে হাওরের ফসল তোলায় ব্যস্ত থাকতে হয় কৃষকদের। তবে ২০২৪ সালে বজ্রপাতে নিহত হওয়ার ঘটনা বেশি ঘটেছে সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে।
সরকার ২০১৬ সালের রেকর্ড মৃত্যুর প্রেক্ষাপটে বজ্রপাতকে জাতীয় দুর্যোগ হিসেবে ঘোষণা দেয়। ওই বছর বজ্রপাতে দেশে মারা গিয়েছিলেন ৩৫০ জন (ডিজাস্টার ফোরামের হিসাব)। ওই বছরই বজ্রপাতে নিহতের পরিবারকে মাত্র ২০ হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেটা আর বাড়েনি।
সুনামগঞ্জ জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন অফিস বজ্রপাতে নিহতদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার হিসাব রাখে। সংস্থাটি বলছে, ২০২০ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বজ্রপাতে নিহত হয়েছেন ৪৬ জন। তাঁদের মধ্যে ১৭ জন মারা গেছেন হাওর থেকে ধান কাটার সময়। ১৫ জন মারা গেছেন মাছ ধরতে গিয়ে। বৃষ্টির সময় গরু আনতে গিয়ে মারা গেছেন ৪ জন। বাকিরা মারা গেছেন নদী পারাপার এবং পুকুরে গোসল করার সময়।
সুনামগঞ্জের কয়েকটি বেসরকারি সংস্থার মতে, জেলায় বজ্রপাতে নিহতের সংখ্যা আরও অনেক বেশি। অনেকেই সহায়তার জন্য জেলা প্রশাসনের কাছে যান না। প্রশাসনের কাছে পূর্ণাঙ্গ হিসাব থাকে না।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর ২০১৭ সালে ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ে দেশজুড়ে ৪০ লাখ তালগাছ লাগানোর উদ্যোগ নিয়েছিল। দুই বছর না যেতেই দেখা যায়, তালগাছের চারা কোথাও মরে গেছে, কোথাও চারা না লাগিয়ে টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। নানা ধরনের অনিয়ম ও দুর্নীতির খবর আসায় ২০২২ সালের ১১ মে মন্ত্রণালয় এ প্রকল্প বাতিল করে বজ্রনিরোধক দণ্ড লাগানোর সিদ্ধান্ত নেয়।
২০২৪ সালের ২৮ নভেম্বর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মাসিক সমন্বয় সভার কার্যবিবরণীতে আছে, দেশের বজ্রপাতপ্রবণ ১৫টি জেলার ১৩৫টি উপজেলায় সাড়ে ১৯ কোটি টাকা ব্যয়ে ৩৩৬টি বজ্রনিরোধক দণ্ড স্থাপনের কর্মসূচি নেওয়া হয়। সভায় বলা হয়, এর মধ্যে ৩০৯টি স্থাপন করা হয়েছে। এ ছাড়া টিআর (টেস্ট রিলিফ) কর্মসূচির অধীনে আরও ১৯টিসহ মোট ৩২৮টি দণ্ড স্থাপন করা হয়। এর মধ্যে ৩০৬টি সচল এবং ২২টি অচল বলে সভাকে জানানো হয়।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) একটি প্রকল্পে সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা ব্যয়ের একাংশ দিয়ে বজ্রনিরোধক দণ্ড বসাচ্ছে। ২০২৪ সালে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর ১ হাজার ৩২১ কোটি টাকার একটি প্রকল্পের উদ্যোগ নেয়, যেখানে বজ্রনিরোধক দণ্ড (লাইটনিং অ্যারেস্টার) বসানো এবং আশ্রয়কেন্দ্র তৈরির কথা বলা হয়েছে। গত সপ্তাহে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সরকার প্রকল্পটির অনুমোদন দেয়নি। কৃষি মন্ত্রণালয়ও একই কাজে আরেকটি প্রকল্পের উদ্যোগ নিয়েছিল। ব্যয় ধরা হয়েছিল ২৩১ কোটি টাকা। গতকাল বৃহস্পতিবার খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এই প্রকল্পও অনুমোদন পায়নি।
সুনামগঞ্জ জেলার বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার সলুকাবাদা ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের ছাদে এ রকম একটি বজ্রনিরোধক দণ্ড বসানো হয়েছে ২০২৩ সালের আগস্ট মাসে। ৭ সেপ্টেম্বর সেখানে গিয়ে দেখা যায়, দুই তলা ভবনের ছাদে প্রায় ২৫ ফুট উঁচু বজ্রনিরোধক দণ্ডটি রয়েছে।
পরিষদের সচিব বিজিত মৈত্র্য প্রথম আলোকে বলেন, ‘এটা কাজ করে কি করে না, সেটা আমি জানি না।’
পরে যোগাযোগ করা হয় সুনামগঞ্জ জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা হাসিবুল হাসানের সঙ্গে। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ১০০ মিটারের মধ্যে বজ্রপাত হলে সেটা বজ্রনিরোধকের সঙ্গে থাকা মিটারে হিসাব থাকার কথা। কিন্তু এ পর্যন্ত সব বজ্রনিরোধক দণ্ডের মিটারে হিসাব শূন্য দেখাচ্ছে। যন্ত্র নষ্ট দেখে এমন হচ্ছে, নাকি ১০০ মিটারের মধ্যে বজ্রপাত হয়নি—সেটা তাঁরা বুঝতে পারছেন না।
বজ্রনিরোধক দণ্ডের সঙ্গে পরিষদের ভবনের পেছনের দেয়ালে দুটি বাক্সে সরঞ্জাম সংযুক্ত করা। এর মধ্যে একটি বাক্স ছিল খোলা ও ভেতরের যন্ত্রপাতি জং ধরা। এগুলো কীভাবে পরিচালনা করতে হয়, তার কোনো ধরনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়নি বলে জানান ইউনিয়ন পরিষদের সহকারী সচিব মো. জুয়েল।
হাওরের সাত জেলায় ৯০টি বজ্রনিরোধক দণ্ড স্থাপনের কাজ পেয়েছিল ক্রিয়েটিভ সোলার অ্যান্ড টেকনোলজি। প্রতিষ্ঠানটির মালিক শামিমা নাসরিন প্রথম আলোকে বলেন, এ বজ্রনিরোধক দণ্ডগুলোর প্রতিটির জন্য ৬ লাখ টাকা বরাদ্দ ছিল। ফ্রান্স ও তুরস্ক থেকে এসব আমদানি করা হয়েছে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক রেজওয়ানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, বজ্রনিরোধক দণ্ডগুলো কাজে আসেনি। তাঁরা এখন আর্লি ওয়ার্নিং সিস্টেম (বজ্র পূর্বাভাস সতর্কীকরণ পদ্ধতি) তৈরি করছেন। সচেতনতাও তৈরি করা হবে।
বজ্রপাতে স্বামী হারানো সুফিয়া খাতুন, জেসমিনসহ অনেক নারীর জীবনের গল্প খারাতুনের মতোই। তাঁদের সামান্য মজুরি অথবা চালের বিনিময়ে মানুষের বাড়িতে কাজ করতে হয়। হাওরের গ্রামগুলোতে সচ্ছল পরিবারের সংখ্যা কম। ফলে কাজের সুযোগও সীমিত। কখনো দেড় কেজি, কখনো দুই কেজি চালের বিনিময়ে তাঁরা বাড়িতে গৃহস্থালি কাজ করেন। বাজারে দুই কেজি চালের দাম ১০০ টাকার আশপাশে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় আমাদের অর্জন বইয়ের লেখক গওহার নঈম ওয়ারা প্রথম আলোকে বলেন, হাওরে বজ্রনিরোধক দণ্ড বসিয়ে মৃত্যু রোধ করা একটি অবাস্তব চিন্তা। মৃত্যু ঠেকাতে কী করতে হবে, তা নিয়ে গবেষণা দরকার, বজ্রপাতে আহতদের চিকিৎসার প্রটোকল ঠিক করা দরকার এবং বজ্রপাতে স্বজন হারানো পরিবারগুলোকে অগ্রাধিকারভিত্তিতে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় নিয়ে আসা জরুরি।
গওহার নঈম ওয়ারার মতে, বজ্রপাতে নিহতদের পরিবারকে যে ২০ হাজার সহায়তা দেওয়া হয়, তা কাফনের কাপড় কেনা ও দাফনসংশ্লিষ্ট কাজেই শেষ হয়ে যায়। তিনি বলেন, বজ্রপাতে মরে যান গরিব কৃষক। তাঁদের নিয়ে কারও খুব একটা মাথাব্যথা নেই।