Thank you for trying Sticky AMP!!

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের পিএইচএ মাঠে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর চতুর্থ জানাজা অনুষ্ঠিত হয়

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের মাটিতেই চিরনিদ্রায় শায়িত ডা. জাফরুল্লাহ

চতুর্থ জানাজা শেষে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র চত্বরে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। আজ শুক্রবার জুমার নামাজের পর বেলা আড়াইটার দিকে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের পিএইচএ মাঠে জাফরুল্লাহ চৌধুরীর চতুর্থ জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

জানাজায় জাফরুল্লাহ চৌধুরীর পরিবারের সদস্য, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের কর্মকর্তা-কর্মচারী, বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিনিধিসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন। জানাজা শেষে বেলা তিনটার দিকে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের সূচনা ভবনের পাশে তাঁকে দাফন করা হয়৷

এর আগে সকাল ১০টার দিকে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের পিএইচএ মাঠের পশ্চিম পাশে লাশবাহী ফ্রিজিং গাড়িতে জাফরুল্লাহ চৌধুরীর মরদেহ শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য রাখা হয়। শ্রদ্ধা জানাতে আসা সবার চোখেমুখে ছিল শোকের ছায়া। এ সময় জাফরুল্লাহকে নিয়ে স্মৃতিচারণা করে কান্নায় ভেঙে পড়েন অনেকেই। মাঠের পশ্চিম দিকে অস্থায়ীভাবে টাঙানো শামিয়ানার নিচে গাড়ির স্বচ্ছ কাচটি খোলা হয়। গাড়ির কাচের ভেতর দিয়ে সারিবদ্ধভাবে শেষবারের মতো জাতির এ শ্রেষ্ঠ সন্তানকে একনজর দেখার পর ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন সবাই। শ্রদ্ধাজ্ঞাপন শেষে জাফরুল্লাহর জানাজায় অংশ নেন তাঁরা। জানাজা শেষে মরদেহ নেওয়া হয় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ভেতরে সূচনা ভবনের পাশে কবরের জন্য নির্ধারিত স্থানে। পরিবার, সহকর্মী, অনুরাগীদের উপস্থিতিতে সেখানেই শায়িত করা হয় তাঁকে।

জানাজা শেষে বেলা তিনটার দিকে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের সূচনা ভবনের পাশে জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে দাফন করা হয়

জাফরুল্লাহ চৌধুরীর প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন শেষে কৃষক শ্রমিক ও জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেন, ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী দলমতের ঊর্ধ্বে ছিলেন। একজন ভালো মানুষ ছিলেন, স্পষ্টভাষী মানুষ ছিলেন। মানুষের প্রয়োজনে তিনি কথা বলতে দ্বিধাবোধ করতেন না। তিনি মানুষের প্রয়োজনে ছুটে যেতেন। তাঁর চলে যাওয়াটা খুব কষ্টের।

জাফরুল্লাহ চৌধুরীর ছেলে বারিশ হাসান চৌধুরী বলেন, ‘বাবা সারা জীবন এ দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য লড়াই করেছেন। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র পারিবারিক প্রতিষ্ঠান হোক, সেটা কখনোই তিনি চাননি। তিনি চেয়েছেন, প্রতিষ্ঠানটির দায়িত্বে যাঁরা রয়েছেন, তাঁরাই সম্মিলিতভাবে এটি চালাবেন। আমরা চাই, বাবার ইচ্ছা অনুসারে আপনারাই প্রতিষ্ঠানটি দেখে রাখবেন।’

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে শ্রদ্ধা জানাতে এসেছিলেন বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষ। আজ শুক্রবার গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের পিএইচএ মাঠে

জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করতে আরও এসেছিলেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারপারসন অধ্যাপক আলতাফুন্নেসা, জাফরুল্লাহ চৌধুরীর সহধর্মিণী শিরীন হক, মেয়ে বৃষ্টি চৌধুরী, ভাই ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শহিদুল ইসলাম, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়–সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি ও ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা বেনজির আহমেদ, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের নির্বাহী প্রধান মঞ্জুর কাদের আহমেদ, গণবিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. আবুল হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম, কবি ও লেখক ফরহাদ মজহার, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, গণ অধিকার পরিষদের সদস্যসচিব নুরুল হক নুর, জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাত, বিএনপির সহপরিবার কল্যাণবিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য দেওয়ান মো. সালাউদ্দিন, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক মুক্তিযোদ্ধা শেখ রফিকুল ইসলাম, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক মহাসচিব নইম জাহাঙ্গীর প্রমুখ।

Also Read: অনুসরণীয় হয়ে থাকবেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী

গত মঙ্গলবার রাত ১১টায় রাজধানীর ধানমন্ডির গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮১ বছর। তিনি দীর্ঘদিন কিডনির জটিলতায় ভুগছিলেন। বার্ধক্যজনিত সমস্যাও দেখা দিয়েছিল তাঁর। তাঁর মরদেহ দাফন করার জন্য গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়। এর আগে ধানমন্ডির নিজ বাসভবনে তাঁর প্রথম, ঢাকা মেডিকেল কলেজে দ্বিতীয় ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে তৃতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

Also Read: জাফরুল্লাহ চৌধুরী সারা জীবনই উল্টো ধারার মানুষ ছিলেন