Thank you for trying Sticky AMP!!

কারামুক্ত হয়ে এলাকায় ফিরছেন সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলি আহাম্মেদ হাসানুজ্জামান। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে

‘৮ তারিখে কিন্তু আমার এলাকায় আপনাকে থাকতে হবে’

‘৮ তারিখে কনে থাকবেন? ৮ তারিখে কোথায় যাবেন? ৮ তারিখে কিন্তু আমার এলাকায় থাকতে হবে। যদি আপনি আমার এলাকার সন্তান হন, আপনার সাথে কিন্তু দেখা হবে। এমন কিছু কইরেন না, ৮ তারিখের পর আপনার সাথে আমার কথা বন্ধ হয়ে যায়।’

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আলি আহম্মেদ হাসানুজ্জামান ওরফে মানিক এসব কথা বলেন। তিনি চুয়াডাঙ্গা-১ (আলমডাঙ্গা-সদর একাংশ) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী দিলীপ কুমার আগরওয়ালাকে অপহরণচেষ্টার মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। গতকাল মঙ্গলবার জামিনে মুক্তির পর এলাকায় ফিরে পথসভায় তিনি ওই বক্তব্য দেন। তাঁর ওই বক্তব্যের ভিডিওটি কুতুবপুর ইউপির ফেসবুক পেজে প্রচার করা হয়েছে। আজ বুধবার ভিডিওটি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে।

ছড়িয়ে পড়া ৩ মিনিট ৪৬ সেকেন্ডের ভিডিওতে আলি আহম্মেদ হাসানুজ্জামানকে বলতে শোনা যায়, ‘আমি জেলে গিছি কিন্তু আমার জন্য না। দলের জন্য, আমার নেতা-কর্মীর জন্য আমি জেলে গিছি। এরাম জেল হাজারবার খাটতে আমি রাজি আছি। যারা মিথ্যা মামলা দিয়েছিল, আমি তাঁদের বলতে চাই, ‘ভাই, আপনি এভাবে আর নেতা-কর্মীদের জালিয়েন না। ৮ তারিখে কনে থাকবেন? ৮ তারিখে কোথায় যাবেন? ৮ তারিখ কিন্তু আমার এলাকায় আপনাকে থাকতে হবে। আপনি যদি আমার এলাকার সন্তান হন, আপনার সাথে কিন্তু দেখা হবে। এমন কিছু কইরেন না, ৮ তারিখের পরে আপনার সাথে আমার কথা বন্ধ হয়ে যায়।’

আওয়ামী লীগের ওই নেতা আরও বলেন, ‘সংগ্রামী বন্ধুরা, আপনারা জানেন, মিথ্যা মামলা দিয়ে কাউকে আটকে রাখা যায় না। সত্যের জয় আছেই আছে। আমরা এই জয়কে আগামী ৭ তারিখের যে দ্বাদশ নির্বাচন, এই নির্বাচনে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে শেখ হাসিনাকে আরও একবার ক্ষমতায় নিয়ে আসব এবং টানা চতুর্থবারের মতো এই জেলার প্রাণপুরুষ সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন চাচাকে এমপি বানিয়ে দেখিয়ে দেব।’

Also Read: রিটার্নিং কর্মকর্তার সভায় নিরাপত্তা শঙ্কার কথা বললেন স্বতন্ত্র প্রার্থী দিলীপ কুমার

আলি আহম্মেদ হাসানুজ্জামান আরও বলেন, ‘আজকে দেখছি, আমার জন্য কত নেতা-কর্মী আছে, সবাই কান্নাকাটি করছে। এর চেয়ে বড় পাওয়া আমার জীবনে আর কিছুই নেই। প্রয়োজনে আমার জীবন আপনাদের জন্য উৎসর্গ করে দেব আমি। দলের জন্য উৎসর্গ করে দেব, নৌকা মার্কার জন্য উৎসর্গ করে দেব। আমরা যেভাবে নির্বাচন করছি, আমরা শান্তশিষ্টভাবে আগামী ৭ তারিখ পর্যন্ত, আপনারা সবাই এই নৌকা মার্কার জন্য একটু কষ্ট করেন। সবাই একটু কষ্ট করেন। আমি আপনাদের ভাই, কারও সন্তান, আমি আপনাদের সাথে আছি, ছিলাম, ভবিষ্যতেও থাকব।’

আওয়ামী লীগ নেতার ওই বক্তব্যের বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা কিসিঞ্জার চাকমা প্রথম আলোকে বলেন, ‘ভিডিও ক্লিপটি দেখেছি। যেহেতু তিনি স্থানীয় সরকারের একজন জনপ্রতিনিধি (ইউপি চেয়ারম্যান)। তাই বিষয়টি দেখতে স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক শারমিন আক্তারকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।’

Also Read: চুয়াডাঙ্গায় স্বতন্ত্র প্রার্থীকে অপহরণচেষ্টার অভিযোগ

পুলিশ সুপার আর এম ফয়জুর রহমান বলেন, হুমকি ও উসকানিমূলক কথাবার্তার কারণে নির্বাচন কমিশন ঘোষিত অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ বিষয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে।

এর আগে গত শনিবার রাতে সদর উপজেলার ভান্ডারদহে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক উপকমিটির সদস্য দিলীপ কুমারকে অপহরণচেষ্টা, কর্মী-সমর্থকদের মারধর ও প্রচারে বাধা দেওয়ার অভিযোগে দিলীপ কুমারের প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট আবদুল মালেক বাদী হয়ে রোববার ভোরে মামলাটি করেন। মামলায় ২২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত পরিচয় ১০০ থেকে ১২০ জনকে আসামি করা হয়। পুলিশ মামলায় আলি আহম্মেদ হাসানুজ্জামানসহ নৌকা প্রতীকের ৫ জন কর্মী-সমর্থককে গ্রেপ্তার করে। পরে হাসানুজ্জামান জামিনে ছাড়া পান। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে পাল্টা আরেকটি মামলা করা হয়। গত সোমবার দুপুরে নৌকার প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ওই মামলাকে ভিত্তিহীন দাবি করে আলি আহম্মেদ হাসানুজ্জামানসহ পাঁচ নেতা-কর্মীর গ্রেপ্তারের নিন্দা ও নিঃশর্ত মুক্তি দাবি জানান।

Also Read: স্বতন্ত্র প্রার্থী দিলীপ কুমারের সমর্থকদের বিরুদ্ধে পাল্টা মামলা

Also Read: স্বতন্ত্র প্রার্থী দিলীপকে অপহরণচেষ্টার অভিযোগ ভিত্তিহীন, দাবি নৌকার প্রার্থীর