Thank you for trying Sticky AMP!!

কাঁঠাল নিয়ে সংঘর্ষে নিহত ৪: পাঁচ দিনেও মামলা হয়নি

সুনামগঞ্জ জেলার মানচিত্র

সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জে একটি কাঁঠাল নিলামকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে চার ব্যক্তি নিহত হওয়ার পাঁচ দিনেও কোনো মামলা হয়নি। এদিকে ঘটনার পর গ্রেপ্তারের ভয়ে গ্রাম ছেড়ে পালিয়েছেন দুই পক্ষের পুরুষেরা। গ্রামে এখন মামলা করার মতো লোক নেই। পুলিশ মামলা নেওয়ার জন্য অপেক্ষা করছে। কিন্তু কোনো লোক অভিযোগ নিয়ে যাচ্ছেন না।

এদিকে এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আজ শুক্রবার আরও তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ। এর আগে একইভাবে ১৫ জনকে আটক করে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠায় পুলিশ।

Also Read: সুনামগঞ্জে ‘কাঁঠাল’ নিয়ে সংঘর্ষ: আরও একজনের মৃত্যু

শান্তিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা খালেদ চৌধুরী আজ বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, এমনিতে গ্রামের পরিস্থিতি শান্ত, পুলিশ মোতায়েন আছে। কিন্তু পুরুষেরা গ্রামে নেই। মূলত বাদী না পাওয়ায় এখনো মামলা হয়নি।

গত সোমবার সকালে শান্তিগঞ্জ উপজেলার জয়কলস ইউনিয়নের হাসনাবাদ গ্রামের মসজিদে দানের একটি কাঁঠালের নিলামের জেরে মালদর আলী ও দ্বীন ইসলাম পক্ষের লোকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে চারজন নিহত হন। আহত হন আরও ২০ জন। নিহত ব্যক্তিরা হলেন হাসনাবাদ গ্রামের নজরুল ইসলাম (৪০), বাবুল মিয়া (৫০), শাহজাহান মিয়া (৫০) ও মোখলেছুর রহমান (৬২)। এর মধ্যে নজরুল ও বাবুল দ্বীন ইসলাম পক্ষের এবং শাহজাহান ও মোখলেছুর হলেন মালদর মিয়া পক্ষের লোক।

Also Read: সুনামগঞ্জে একটি কাঁঠাল নিয়ে সংঘর্ষ, তিনজনের মৃত্যু

ঘটনার পাঁচ দিনেও মামলা না হওয়া প্রসঙ্গে জয়কলসের ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল বাসিত আজ বিকেলে বলেন, ‘মূলত মামলার বাদী হবেন এ রকম লোকই মিলছে না। আজও ওই গ্রামে গিয়েছি। পুলিশ আছে, পরিবেশও শান্ত। কিন্তু কোনো পুরুষ নেই। আমরাও চেষ্টা করছি, যাতে মামলা হয়।’

এ প্রসঙ্গে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু সাঈদ বলেছেন, কেউ অভিযোগ নিয়ে এলে পুলিশ সেটি নেবে। কিন্তু কেউ তো আসছে না। এ বিষয়ে সহযোগিতার জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদেরও বলা হয়েছে।

হাসনাবাদ ও আশপাশের গ্রামের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এখন বাড়িতে শুধু নারী-শিশুরা আছে। সংঘর্ষে নিহত ব্যক্তিদের লাশ দাফন করেছেন আশপাশের গ্রামের লোকজন।

হাসনাবাদ গ্রামের বাসিন্দা মকসুদ আলীর স্ত্রী রাজিয়া বেগম জানান, ঘটনার পর থেকে তাঁর স্বামী ও দুই ছেলে বাড়িছাড়া। তাঁরা কোথায় আছেন, রাজিয়া জানেন না।

পাশের জামলাবাজ গ্রামের বাসিন্দা পারভেজ আহমদ বলেন, পুরো গ্রামটাই এখন নীরব। মনে হয়, কোনো মানুষ নেই। বাড়িঘর খালি। তবে গ্রামে পুলিশ মোতায়েন আছে।

Also Read: সুনামগঞ্জে কাঁঠাল নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনায় এখনো মামলা হয়নি, গ্রেপ্তার ১৫

পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, হাসনাবাদ গ্রামের মসজিদে গত শুক্রবার জুমার নামাজের পর একজনের দান করা একটি কাঁঠাল নিলামে বিক্রি হয়। ২৫০ টাকা সর্বোচ্চ দরে এটি কেনেন মালদর আলী পক্ষের খসরু মিয়া। পর মুহূর্তেই দ্বীন ইসলাম পক্ষের আবদুল বাহার সবাইকে থামিয়ে দেন। তাঁর দাবি, নিলাম ডাক নিচু স্বরে বলায় তিনি শুনতে পারেননি। তিনি কাঁঠালটি আরও বেশি দাম দিয়ে কিনতে আগ্রহী। তাই আবার নিলাম ডাকের দাবি করেন তিনি। এ নিয়ে খসরু ও বাহারের মধ্যে একপর্যায়ে তর্কাতর্কি শুরু হয়। পরে মুরব্বিরা তাঁদের শান্ত করে বিদায় করে দেন। এরপর এ নিয়ে গ্রামের দ্বীন ইসলাম ও মালদর মিয়ার পক্ষের লোকজনের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। স্থানীয়ভাবে জনপ্রতিনিধিরা এ বিষয়ে কোনো ঝগড়ায় না জড়ানোর জন্য দুই পক্ষকেই অনুরোধ করেন। কিন্তু তাতেও কাজ হয়নি।

Also Read: গ্রামে নেই দুই পক্ষের পুরুষেরা, মামলা করার লোক মিলছে না