
নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট ও প্রতিনিধি, ধর্মপাশা, সুনামগঞ্জ ও নালিতাবাড়ী, শেরপুর
সুনামগঞ্জ, শেরপুর ও সিলেটে বজ্রপাতে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। আজ শনিবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে দুপুরের মধ্যে বজ্রপাতের ঘটনাগুলো ঘটে। মারা যাওয়া চারজনের মধ্যে দুজন নারী।
শেরপুরের নালিতাবাড়ী ও নকলা উপজেলায় গতকাল দুপুরে বজ্রপাতে এক গৃহিণী ও এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। মারা যাওয়া দুজন হলেন হাজেরা খাতুন (৫৫) ও সমির উদ্দিন (৫৮)। হাজেরা নালিতাবাড়ী উপজেলার কাকরকান্দি ইউনিয়নের মানিককুড়া গ্রামের খোরশেদ আলমের স্ত্রী। কৃষক সমির নকলার টালকী ইউনিয়নের বড় পাগলা এলাকার বাসিন্দা।
সংশ্লিষ্ট পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দুপুরে ঝড়বৃষ্টির মধ্যে হাজেরা খাতুন তাঁর নাতনিকে আনতে কাকরকান্দি ইউনিয়নের হাজির মোড় এলাকার একটি মাদ্রাসায় গিয়েছিলেন। ফেরার পথে আকস্মিক বজ্রপাতে গুরুতর আহত হন তিনি। স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে কাকরকান্দি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। নকলার টালকী ইউনিয়নের বড় পাগলা এলাকায় ঝড়বৃষ্টি শুরু হলে কৃষক সমির উদ্দিন মাঠ থেকে গরু আনতে গিয়ে বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই মারা যান।
পৃথক স্থানে বজ্রপাতে দুজনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহেল রানা ও নকলা থানার ওসি হাবিবুর রহমান।
এদিকে সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলায় আয়োশা বেগম (৬৫) নামের এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। বেলা একটার দিকে উপজেলার সদর ইউনিয়নের মগুয়ারচর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ওই নারীর পরিবার সূত্রে জানা যায়, মগুয়ারচর গ্রামের আয়েশা বেগম বাড়ির সামনে একটি খালের পানিতে গোসল করতে যান। এ সময় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছিল। গোসল শেষে বাড়ির উঠানে আসামাত্র হঠাৎ বজ্রপাতে তিনি ঘটনাস্থলেই মারা যান।
ধর্মপাশা সদর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য জিয়া উদ্দিন বলেন, ঘটনাটি খুবই মর্মান্তিক। ওই নারী বিধবা ছিলেন। বজ্রপাতে তাঁর মাথার বেশ কিছু স্থান ঝলসে গেছে। ঘটনাস্থলেই তিনি মারা গেছেন। তাঁর তিন ছেলে ও তিন মেয়ে আছে। ধর্মপাশা থানার ওসি মোহাম্মদ এনামুল হক মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, বজ্রপাতে নারীর মৃত্যুর খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়।
বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সিলেটের কানাইঘাট উপজেলা সদরের বাজারে যাচ্ছিলেন মাঝি তাজুল ইসলাম (৩৫)। চাপনগরঘাট এলাকায় পৌঁছামাত্রই বিকট শব্দে নৌকায় বজ্রপাত পড়লে তাজুল পানিতে পড়ে যান। আধা ঘণ্টা পর কিছু দূরে তাঁর মরদেহ ভেসে ওঠে। বজ্রপাতে আহত হয়েছেন ওই নৌকার দুজন যাত্রী।
পুলিশ জানিয়েছে, উত্তর লক্ষ্মীপ্রসাদ নয়াগ্রামের বাসিন্দা তাজুল নৌকা দিয়ে কানাইঘাট বাজারে আসছিলেন। হঠাৎ বজ্রপাত হলে তিনি নদীতে পড়ে যান। প্রায় আধা ঘণ্টা পর তাঁর মরদেহ কানাইঘাট পৌরসভার খেয়াঘাট এলাকায় ভেসে ওঠে। স্থানীয় লোকজন দ্রুত তাঁকে উদ্ধার করে কানাইঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক তাজুলকে মৃত ঘোষণা করেন। তাজুলের নৌকায় থাকা দুজন যাত্রীও বজ্রপাতে আহত হন। তবে তাঁরা হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়িতে ফিরেছেন।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সন্ধ্যা সোয়া সাতটার দিকে যোগাযোগ করলে কানাইঘাট থানার ওসি মো. আবদুল আউয়াল প্রথম আলোকে জানান, নিহত ব্যক্তির মরদেহ পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হবে।