Thank you for trying Sticky AMP!!

‘স্যার’ না বলে ‘ভাই’ বলায় শিক্ষকের ওপর খেপলেন সরকারি কর্মকর্তা

কিশোরগঞ্জ জেলার মানচিত্র

কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর উপজেলায় স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে সরকারি এক কর্মকর্তাকে ‘স্যার’ না বলে ‘ভাই’ বলায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের ওপর খেপে গিয়েছেন তিনি। আজ রোববার সকালে কুলিয়ারচর উপজেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে শহীদ সেলিম স্মৃতি ভাস্কর্যে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ অনুষ্ঠানে এই ঘটনা ঘটে।

সরকারি ওই কর্মকর্তার নাম মুহাম্মদ মুশফিকুর রহমান। তিনি কুলিয়ারচর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপারভাইজার। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করছিলেন তিনি। যে শিক্ষকের ওপর তিনি খেপে যান তাঁর নাম লুৎফুল আজাদ। লুৎফুল উপজেলার ছয়সূতি ইউনিয়নের উত্তরকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। তিনি বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির কুলিয়ারচর উপজেলা শাখার সভাপতি।

Also Read: ‘স্যার না বলায়’ জেলা প্রশাসকের ক্ষুব্ধ আচরণ, প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের অবস্থান কর্মসূচি

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, স্বাধীনতা দিবসের ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কুলিয়ারচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাদিয়া ইসলাম, কুলিয়ারচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মস্তুফা, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইমতিয়াজ বিন মুছাসহ উপজেলার বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষ। অনুষ্ঠান চলাকালে লুৎফুল আজাদ সরকারি কর্মকর্তা মুশফিকুর রহমানকে ‘ভাই’ বলে সম্বোধন করেন। এতে মুশফিকুর খেপে যান এবং তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘কে আপনার ভাই? নিজেকে কত বড় নেতা দাবি করেন? স্যার বলেন নাই কেন?’ মাইক্রোফোনের সামনেই এসব কথা বলা তা উপস্থিত সবাই শুনতে পান।

শিক্ষক লুৎফুল আজাদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি এসেছি আমার সংগঠনের পক্ষ থেকে ফুল দিতে। অনেকক্ষণ অপেক্ষার পরও সংগঠনের নাম বলা হচ্ছিল না। আমি গিয়ে ভাই সম্বোধন করে বিষয়টির খবর নিতে চাইলে তিনি সবার সামনে খেপে যান। মূলত স্যার না বলায় আমার প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। তখন আমি খুব অপমান বোধ করছিলাম।’

Also Read: জি স্যার! ইয়েস স্যার!! ওকে স্যার!!!

অভিযোগের বিষয়ে একাডেমিক সুপারভাইজার মুশফিকুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিষয়টি নিছক ভুল–বোঝাবুঝি ছিল। আসলে পুষ্পার্ঘ্য পর্বের আমি সঞ্চালক ছিলাম। সিরিয়াল নিয়ে সবাই আমাকে বিরক্ত করছিলেন। সবার দাবি তাঁদের সংগঠনের নাম আগে ডাকা হোক। লুৎফুল আজাদ সাহেবও এসে যখন আমার কাছে একই ইস্যুতে কথা বলতে চাচ্ছিলেন, তখন আমি মেজাজ ধরে রাখতে পারিনি। এই ক্ষোভ প্রকাশের সঙ্গে স্যার বলা না–বলার সম্পর্ক নেই।’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আজ দুপুর ১২টার দিকে ইউএনও ও উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি এই দুজনকে ডেকে বিষয়টির মীমাংসা করে দেন।

ইউএনও সাদিয়া ইসলাম বলেন, ‘ঘটনার সময় আমিও উপস্থিত ছিলাম। এ কথা ঠিক যে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ নিয়ে কিছু ঝামেলা সৃষ্টি হয়। সবাই সঞ্চালকের ওপর ক্ষুব্ধ হন। শিক্ষক লুৎফুল আজাদের সঙ্গে সঞ্চালকের সামান্য ভুল–বোঝাবুঝি হয়েছে। পরে একে অপরের ভুল বুঝতে পেরেছেন। উভয়েই খুশি মনেই বাড়ি ফিরেছেন।’

Also Read: ‘যিনি সরকারি চাকরি পাননি, তাঁদেরই স্যার বলতে কষ্ট লাগে’