‘ছেলে দেশে ফিরলে কী বুঝ দেব?’—কান্নাজড়িত কণ্ঠে এ কথা বলছিলেন বজ্রপাতে নিহত বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী রাশেদুল ইসলামের দাদা অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষক আবদুল বাতেন। তাঁর ছেলে রাহেনুর ইসলাম আজ সোমবার রাতে সৌদি আরব থেকে ঢাকায় ফিরবেন।
রাশেদুল ইসলাম (২২) ময়মনসিংহের ত্রিশালের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিল্ম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের স্নাতক শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি কুমিল্লার হোমনা উপজেলার আসাদপুর ইউনিয়নের খোদেদাউদপুর গ্রামের রাহেনুর ইসলামের ছেলে।
গতকাল রোববার বেলা তিনটার দিকে ময়মনসিংহ যাওয়ার পথে কুমিল্লার হোমনার ভবানীপুর-ঘাঘুটিয়া খেয়াঘাট এলাকায় বজ্রপাতে তাঁর মৃত্যু হয়। একই ঘটনায় নালা দক্ষিণ গ্রামের নার্সিং ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী জাকিয়া আক্তারও (২৩) নিহত হন।
আজ সোমবার দুপুরে খোদেদাউদপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, রাশেদুলের ঘরে দাদা আবদুল বাতেন, দাদি রহিমা বেগম, মা লাভলী আক্তার, ছোট বোন আয়েশা আক্তার ও চাচি হাজেরা আক্তার কাঁদছিলেন। সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা হারিয়ে ফেলেছেন প্রতিবেশীরা।
স্থানীয় ব্যবসায়ী বাবুল মিয়া বলেন, রাশেদ ছোটবেলা থেকেই মেধাবী ছিলেন। সবাইকে সম্মান করতেন। তাঁর মৃত্যু কেউ মেনে নিতে পারছেন না।
গতকাল রাত ১১টার দিকে খেদেদাউদপুর গ্রামের হাসনা ভানু স্টেডিয়ামে জানাজা শেষে রাশেদুল ইসলামকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। আজ ত্রিশাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এসে তাঁর কবর জিয়ারত ও পরিবারের সদস্যদের সান্ত্বনা দেন।
সহপাঠী জিহাদুজ্জামান জিশান বলেন, ‘রাশেদুল খুবই মেধাবী ছাত্র ছিল। তার মৃত্যু আমরা মেনে নিতে পারছি না।’
হোমনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ক্ষেমালিকা চাকমা বলেন, এক মেধাবী শিক্ষার্থীর অকালমৃত্যুতে উপজেলাজুড়ে শোক নেমে এসেছে। তিনি তাঁর পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। এ ছাড়া ঝড়-বৃষ্টির সময় সবাইকে সতর্ক থাকতে ও নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেওয়ার আহ্বান জানান।