
রাজধানীর নটর ডেম কলেজের ভবন থেকে পড়ে মারা যাওয়া শিক্ষার্থী ধ্রুবব্রত দাসের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে গাইবান্ধা শহরের পৌর শ্মশানে তাঁর শেষকৃত্য অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় ধ্রুবব্রত দাসের আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুবান্ধব উপস্থিত ছিলেন।
ধ্রুবব্রত গাইবান্ধা শহরের মধ্যপাড়া এলাকার বাণীব্রত দাসের ছেলে। গাইবান্ধা সরকারি বালক বিদ্যালয় থেকে এসএসসিতে জিপিএ-৫ পাওয়ার পর তিনি নটর ডেম কলেজে ভর্তি হয়েছিলেন। এবার কলেজের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে তাঁর এইচএসসি পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল।
গতকাল সোমবার বাবার সঙ্গে কলেজ থেকে আগামী মাসে অনুষ্ঠেয় এইচএসসি পরীক্ষার প্রবেশপত্র আনতে গিয়েছিলেন ধ্রুবব্রত। ক্যাম্পাসে অভিভাবকদের ঢুকতে না দেওয়ায় বাবা কলেজের মূল ফটকের বাইরে অপেক্ষা করছিলেন। কিছুক্ষণ পর বাবা দেখতে পান, সহপাঠীরা তাঁর ছেলেকে রক্তাক্ত অবস্থায় রিকশায় তুলছেন। হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসকেরা ছেলেকে মৃত ঘোষণা করেন।
কলেজের শিক্ষার্থীরা জানান, সোমবার বেলা সোয়া তিনটার দিকে ধ্রুবব্রত দাস কলেজের ‘ফাদার টিম’ ভবনের পঞ্চম তলার বারান্দা থেকে নিচে পড়ে গুরুতর আহত হন। তাঁকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। বিকেল চারটার দিকে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
আজ সকালে অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকা থেকে ধ্রুবব্রতের লাশ গাইবান্ধায় আনা হয়। প্রথমে লাশ গাইবান্ধা শহরের মধ্যপাড়া এলাকার বাসায় নেওয়া হয়। সেখানে আত্মীয়স্বজন ও এলাকাবাসী লাশ একনজর দেখতে ভিড় করেন। অনেকে কান্নায় ভেঙে পড়েন। এরপর তাঁর লাশ শহরের পৌর শ্মশানে নিয়ে যাওয়া হয়। বেলা তিনটার দিকে পৌর শ্মশানে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।
তবে ছেলের মৃত্যু নিয়ে পত্রিকায় লেখালেখি হোক, চান না ধ্রুবব্রত দাসের বাবা বাণীব্রত দাস। তিনি কোনো ছবি না তুলতে সাংবাদিকদের অনুরোধ করেন। বাণীব্রত দাস বলেন, ‘আমার ছেলে গেছে। আমি লেখালেখি চাই না।’ এ সময় ধ্রুবব্রতের মা তমা রানী সিং আহাজারি করছিলেন।
আজ বিকেলে তমা রানী সিং নিজের ফেসবুক থেকে একটি পোস্ট করেন। পোস্টে লেখেন, ‘আমার ছেলেকে তার দুজন সহপাঠী ডেকে নিয়ে গিয়েছিল ফাদার টিম ভবনে। সে দুজন আসলে কারা, আমাদের জানানো হয়নি কলেজ থেকে। কলেজ কর্তৃপক্ষ চাইলেই সিসিটিভি ফুটেজ চেক করে জানাতে পারত। যে দুজন আমার ছেলেকে নিয়ে গেছে, তাদের জন্যই আমার ছেলে পড়ে গিয়েছে। অথচ কলেজ থেকে বলা হচ্ছে, সেলফি তুলতে গিয়ে পড়ে গিয়েছে, যা মিথ্যা। ধ্রুব কলেজে গিয়ে সেলফি তোলার ছেলে না। ওর সাথে শুধু বাটন ফোন ছিল। আমার ছেলে তো নাই; কিন্তু আপনারা কেন গল্প বানাচ্ছেন? আপনারা ভুল তথ্য দেবেন না।’