
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার যাদুকাটা নদীতে অবৈধভাবে বালু তোলার অভিযোগে ছয় ব্যক্তিকে কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। গতকাল সোমবার রাত ১২টা থেকে আজ মঙ্গলবার ভোর সাড়ে ৪টা পর্যন্ত নদীতে অভিযান চালিয়ে তাঁদের আটক করা হয়। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তাঁদের সাজা দেওয়া হয়।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে গতকাল রাতে দুজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে নদীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালিত হয়। বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন, ২০১০-এর আওতায় পরিচালিত এই অভিযানে বালুভর্তি নৌকাসহ ছয়জনকে আটক করা হয়।
ছাতক উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোজাহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে পরিচালিত অভিযানে অবৈধ বালুসহ একটি ট্রলার জব্দ এবং চারজনকে আটক করা হয়। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে চারজনকেই এক মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। একই রাতে দিরাই উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) জিয়াউল হাসানের নেতৃত্বে পরিচালিত অপর অভিযানে যাদুকাটা নদীর তীরের মাটি কাটার অভিযোগে দুই ব্যক্তিকে আটক করা হয়। তাঁদের প্রত্যেককে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্র জানায়, তাহিরপুর উপজেলার যাদুকাটা নদীতে সুনামগঞ্জের সবচেয়ে বড় দুটি বালুমহাল আছে। মামলা-সংক্রান্ত জটিলতায় পাঁচ মাস বন্ধ থাকার পর চলতি মাসে আবারও বালু উত্তোলন শুরু হয়। কিন্তু শুরুতেই লাউড়েরগড় সীমান্তসংলগ্ন এলাকায় ইজারার বাইরে গিয়ে একটি পক্ষ অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে। ৬ থেকে ১১ অক্টোবর পর্যন্ত ওই এলাকায় বালু লুটের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় প্রশাসন, পরিবেশ অধিদপ্তর ও ইজারাদার তিনটি মামলা করেছে।
স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, নদীর পাড় কেটে বালু তোলার কারণে আশপাশের গ্রাম ও স্থাপনাগুলো ভাঙনের ঝুঁকিতে পড়েছে। জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর যাদুকাটা নদীর দুটি বালুমহাল প্রায় ১০৭ কোটি টাকায় ইজারা দেওয়া হয়েছে। তবে মামলা-সংক্রান্ত জটিলতায় ইজারাদারদের মহাল বুঝিয়ে দিতে দেরি হয়। চলতি মাসে প্রশাসন মহাল হস্তান্তরের পর সেখানে আবার বালু তোলা শুরু হয়।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া বলেন, সুনামগঞ্জের কোথাও অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করতে দেওয়া হবে না। এ জন্য নিয়মিত অভিযান চলবে।