
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে রাতের আঁধারে কাভার্ড ভ্যান থেকে তৈরি পোশাক চুরির ঘটনা বেড়ে গেছে। চুরির পর কার্টনের ওজন ঠিক রাখতে ঝুট ও মাটি ভরে দেওয়া হয়। ওই ঝুট আর মাটি রপ্তানি পণ্যের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপসহ বিভিন্ন দেশের ক্রেতাদের কাছে চলে যাচ্ছে। এতে একদিকে ক্রেতারা চাহিদা অনুযায়ী পোশাক পাচ্ছেন না, অন্যদিকে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে।
তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি ফারুক হাসান সোমবার ঢাকায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এসব তথ্য দেন। ঢাকা-চট্টগ্রাম সড়কে রপ্তানিমুখী পোশাকপণ্য চুরি প্রতিরোধের বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এ বৈঠকের আয়োজন করা হয়। বিজিএমইএর পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
আসাদুজ্জামান খান ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে চুরি বন্ধের জন্য হাইওয়ে পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শককে প্রধান করে বিজিএমইএ, বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও কাভার্ড ভ্যান মালিক সমিতির প্রতিনিধি সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করে দেন। তিনি বলেন, কমিটির মূল কাজ হবে চুরি বন্ধে স্ট্যান্ডার্ড অপারেশনাল প্রসিডিউর (এসওপি) নির্ধারণ করা।
বৈঠকে বিজিএমইএর সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে দীর্ঘদিন ধরে পোশাক খাতের রপ্তানি ও আমদানি পণ্য চুরির ঘটনা ঘটছে। মাঝখানে এটা বন্ধ থাকলেও আবার ঘন ঘন ঘটছে। একটি সংঘবদ্ধ চক্র কাভার্ড ভ্যানের চালকদের যোগসাজশে রাতের বেলায় কাভার্ড ভ্যান দাঁড় করিয়ে মালামাল চুরি করে। এতে রপ্তানিকারকেরা যেমন আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ছেন, তেমনি ক্রেতাদের কাছে দেশের সুনাম নষ্ট হচ্ছে।
বৈঠকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দীন, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ, অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মো. শফিকুল ইসলাম, হাইওয়ে পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মল্লিক ফখরুল ইসলাম, বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান, বর্তমান সহসভাপতি এস এম মান্নান, শহিদউল্লাহ আজিম, রফিকুল ইসলাম, মো. নাসির উদ্দিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সভায় আইজিপি বেনজীর আহমেদ চুরি প্রতিরোধে সংশ্লিষ্টদের নিয়ে একটি কমিটি গঠনের প্রস্তাব দেন। এ কমিটি চুরি বন্ধের জন্য এসওপি (স্ট্যান্ডার্ড অপারেশনাল প্রসিডিউর) নির্ধারণের কাজ করবে। অন্যদিকে হাইওয়ে পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মল্লিক ফখরুল ইসলাম চুরি প্রতিরোধে রপ্তানি পণ্যবাহী কাভার্ড ভ্যানে বিশেষ স্টিকার দেওয়ার প্রস্তাব করেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, যেভাবেই হোক মহাসড়কে রপ্তানি পণ্য চুরি হওয়া বন্ধ করতেই হবে। এ ব্যাপারে বর্তমান সরকারের অবস্থান জিরো টলারেন্স। তিনি বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে নজরদারি বাড়াতে বিভিন্ন স্থানে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনের কাজ ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। কাজটি আগামী চার মাসের মধ্যে শেষ হবে।