
নির্মাতা মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজের ‘সহযাত্রী’ নাটকে অভিনয় করে প্রশংসা কুড়িয়েছেন ছোট পর্দার অভিনেত্রী নাজনীন নীহা। নাটকটিসহ সমসাময়িক নানা বিষয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলেছে প্রথম আলো।
‘সহযাত্রী’ নাটকটি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনা চলছে...
অনেক ম্যারিড লাইফে (বিবাহিত জীবনে) অনেক ধরনের ছোটখাটো প্রবলেম (সমস্যা) থাকে। কখনো কখনো ছোটখাটো প্রবলেম (সমস্যা) বড় হয়। আমরা এই নাটকের মাধ্যমে একটা মেসেজ (বার্তা) দেওয়ার চেষ্টা করছি। আমরা প্রেম করার সময় অনেক স্যাক্রিফাইস (ত্যাগ) করি। এটা ওর ভালো লাগতেছে না, এইটা খারাপ লাগতেছে—মানিয়ে নিয়ে চলি। কিন্তু বিয়ের পর জিনিসগুলা ‘টেকেন ফর গ্র্যান্টেড’ হিসেবে নিয়ে নেয়। এই সময়ে তো অনেক বেশি ডিভোর্স (বিচ্ছেদ) হচ্ছে। অনেক সময় খুব বড়সড় কারণে নয়, ছোটখাটো কারণেও বিচ্ছেদ ঘটছে। নাটকে আমরা মেসেজ (বার্তা) দেওয়ার চেষ্টা করেছি, ডিভোর্সটা (বিচ্ছেদ) কোনো সমাধান হতে পারে না। আমরা চাইলে জিনিসগুলোকে সুন্দরভাবে সমাধান করতে পারি। আমার মনে হয়, নাটকটিকে সবাই খুব পজিটিভলি (ইতিবাচক) নিয়েছে। অনেক পজিটিভ সাড়া পাচ্ছি। বেশির ভাগ মানুষ পারসোনাল লাইফের (ব্যক্তিগত জীবন) সঙ্গে রিলেট (মিল পাওয়া) করতে পারছে। আর জোভান ভাইয়া ও আমার জুটিটাও অনেকে পছন্দ করে। রাজ ভাইয়ার সঙ্গে এটা আমার দ্বিতীয় কাজ। কাজটা খুব ভালো হয়েছে।
আপনি বিয়ের ক্ষেত্রে পাত্রের মধ্যে কোন গুণগুলো দেখবেন?
যখন ভাগ্যে থাকে, তখন এসব হয়ে যায়। তারপরও কিছু কিছু জিনিস তো থাকতে হবে। লয়্যাল থাকতে হবে, শ্রদ্ধা করতে হবে। সম্পর্কে সম্মান থাকতে হবে। ভালো মানুষ হতে হবে।
অভিনয় ক্যারিয়ারের এ যাত্রা কেমন?
সত্যি বলতে, এখনো যে খুব সহজ মনে হয়, তা নয়। এখনো আমার কাছে কঠিন মনে হয়। অনেক কিছু শেখার আছে। অর্ধেকটাও এখনো শিখিনি। যত মানুষ ভালোবাসবে, তখন দায়িত্বটা আরও বেশি বেড়ে যায়। যত দিন যাবে, আমাদের প্রতি মানুষের প্রত্যাশা তত বাড়বে। আমার থেকে আরও ভালো ভালো কাজ আশা করবে। ওই জায়গা থেকে আমার কাছে যাত্রাটা একটু কঠিন মনে হয়, সামনে আরও ভালো করতে হবে। নিজেকে ভালোভাবে প্রেজেন্ট (উপস্থাপন) করার চেষ্ট করব।
অল্প সময়ে আপনি জনপ্রিয়তা পেয়েছেন, একটা সময়ে এসে শিল্পীদের জনপ্রিয় কমতে থাকে। ওই সময়টা নিয়ে আপনার ভাবনা কী?
আমি যে ফ্লোতে এগোচ্ছি, আজ থেকে এক বছর পর এটা (জনপ্রিয়তা) আরও বেড়ে যেতে পারে, আবার কমতেও পারে। সবকিছুর জন্যই আমি মেন্টালি প্রিপেয়ার্ড (মানসিকভাবে প্রস্তুত)। কারণ, আমি জানি, দুনিয়ায় কোনো কিছুই স্থায়ী নয়। আমার এই জনপ্রিয়তা সব সময় থাকবে না। কারণ, আজকে আমি আছি, কালকে কেউ না কেউ আসবে। কিন্তু আমি চেষ্টা করব, আমার সম্মানটা যেন সব সময় থাকে। জনপ্রিয়তা ওইভাবে না থাকলেও আমাকে কেউ যেন অপছন্দ না করে।
নাটকের ভিউ, নাকি কোয়ালিটি—কোনটাকে আপনি প্রাধান্য দেন?
অবশ্যই কোয়ালিটি (গুণগত মান)। এখন তো ভিউটা একটা ট্রেন্ডের মতো হয়ে গেছে। ভিউটাও দরকার, কিন্তু আমার কাছে মনে হয়, ভিউটার পাশাপাশি অবশ্যই কোয়ালিটি থাকা দরকার। কোয়ালিটি থাকলে ভিউটা অটোমেটিক (স্বয়ংক্রিয়ভাবে) হবে। সব কাজে না হলেও কিছু কাজে তো হবেই।
এর আগে এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, আপনি শুধু নাটক নিয়েই ভাবছেন।
আমি এই জায়গাটা (নাটক) এনজয় (উপভোগ) করছি এবং এই জায়গাটার প্রতি আমার একটা ভালোবাসা তৈরি হয়েছে। আমি সামনে কী করব, সেটা আমি জানি না। তবে কখনো সিনেমা করব না, এ রকম কিছু নয়। তবে আপাতত সিনেমা নিয়ে ভাবছি না। আমি নাটক নিয়েই ভাবছি, নাটকে একদম মন দিয়ে কাজ করতে চাই।
সামনে কী কাজ আসছে?
একটা নাটকের শুটিং করেছি। ইতিমধ্যে আমরা ৯ দিন শুটিং করেছি। সামনে আরও তিন-চার দিন শুটিং হবে। কিন্তু নাটকটির ব্যাপারে আমি কিছু বলতে পারব না। পরিচালকের মানা আছে। আমি মাসে খুব বেশি কাজ করি না; তিন থেকে চারটার বেশি করি না। কোনো কোনো মাসে একটা কাজও করেছি।