ব্যায়াম শুরু করার আগে একজন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া ভালো
ব্যায়াম শুরু করার আগে একজন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া ভালো

যে কারণে কেবল ভুঁড়ি কমানোর ব্যায়াম যথেষ্ট নয়

ভুঁড়ি কমানোর কাজটা বেশ কষ্টসাধ্য। শরীরচর্চা শুরু করার কিছুদিনের মধ্যেই আপনি দেহে বেশ কিছু পরিবর্তন অনুভব করতে পারেন। তবে আপনার মনে হতেই পারে, ভুঁড়ি তো কমছে না! পেটের মেদ কমাতে তাই ‘ভুঁড়ি কমানোর ব্যায়াম’ হিসেবে জনপ্রিয় অনেক শরীরচর্চাই করেন অনেকে। তবে নামে ভুঁড়ি কমানোর ব্যায়াম হলেও ভুঁড়ি কমাতে কেবল এসব ব্যায়াম যথেষ্ট নয়।

পেটের মেদ সহজে চোখে পড়ে। তবে দেহে যখন মেদ জমে, তা কেবল এই একটা জায়গাতেই জমে না। বরং দেহের বিভিন্ন অংশে জমা হতে থাকে। সবচেয়ে ক্ষতিকর হলো দেহের ভেতরকার অঙ্গপ্রত্যঙ্গের আশপাশে জমা হওয়া মেদ। এই মেদ বাইরে থেকে খুব একটা বোঝা যায় না, কিন্তু দীর্ঘমেয়াদি রোগের ঝুঁকি বাড়ে এর কারণেই। তাই এমন ব্যায়াম করা উচিত, যাতে এই মেদও কমানো যায়। এ ছাড়া কেবল ভুঁড়ি কমানোর ব্যায়ামগুলোর চর্চায় ভুঁড়িও কমে না খুব একটা। এ প্রসঙ্গে বলছিলেন রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতাল লিমিটেডের মেডিসিন বিভাগের অ্যাসোসিয়েট কনসালট্যান্ট ডা. তাসনোভা মাহিন

ক্যালরি পোড়ানো জরুরি

শরীরের যেকোনো জায়গার মেদ কমাতে হলে আপনাকে অবশ্যই বেশ খানিকটা ক্যালরি খরচ করতে হবে। কেবল নির্দিষ্ট স্থানের মেদ ঝরানোর ব্যায়াম করলে ততটা ক্যালরি পোড়াতে পারবেন না। মেদও কমবে না। বরং ওই নির্দিষ্ট ব্যায়ামে যেসব পেশি ব্যবহার করা হয়, কেবল সেগুলো কিছুটা শক্তিশালী হয়ে উঠবে। কিছুদিন ভুঁড়ি কমানোর ব্যায়াম করলে পেটের পেশিগুলো কিছুটা দৃঢ় হয়ে উঠবে। আপাতদৃষ্টে নিজেকে আগের চেয়ে ‘ফিট’ মনে করতে পারেন আপনি। তবে শুধু এই চর্চায় আদতে ভুঁড়ি কমে না। আর এই ব্যায়ামে পেশি যতটা সুগঠিত হতে পারত, মেদ রয়ে যাওয়ার কারণে পেশি ততটা সুগঠিত হয়ও না।

যেভাবে ব্যায়াম করবেন

ভুঁড়ি কমানোর জন্য আপনি বিভিন্ন ধরনের ব্যায়াম করতে পারেন। সবদিক থেকে ‘ফিট’ থাকার জন্য কার্ডিও এক্সারসাইজ জরুরি। জগিং, দৌড়, দ্রুতগতির হাঁটা—ভুঁড়ি কমাতে কাজে লাগবে সবই। মেদ কমাতে সাইকেল চালানো, দড়িলাফ, ভার উত্তোলন আর সাঁতার কাটা দারুণ ব্যায়াম। এগুলো ছাড়াও পেটের মেদ কমানোর জন্য বিভিন্ন রকম ক্রাঞ্চ, প্ল্যাঙ্ক বা টুইস্টও করতে পারেন। ঘোরাতে পারেন হুলা হুপ। হাই ইনটেনসিটি ইন্টারভ্যাল এক্সারসাইজের চর্চা করতে পারেন, যেখানে দ্রুতগতির বা তীব্র ধরনের ব্যায়ামের মাঝের বিরতিতে হালকা গতিতে ব্যায়াম করতে হয়। তবে মনে রাখবেন, সব ব্যায়াম সবার জন্য উপযোগী নয়। আর সবার জন্যই যে সব ব্যায়াম আবশ্যক, তেমনটাও নয়। ব্যায়াম শুরু করার আগে একজন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া ভালো। নিজে শুরু করতে গেলেও অবশ্যই হালকা ধরনের ব্যায়াম দিয়ে শুরু করুন। কিছু দিন পরপর দেহের প্রয়োজন বুঝে ব্যায়ামের তীব্রতা বাড়াতে পারবেন।

খাবার খাবেন বুঝেশুনে

যেকোনো মেদ কমাতে ক্যালরি গ্রহণ সীমিত রাখাও আবশ্যক। চিনি এড়িয়ে চলা খুব জরুরি। শর্করাজাতীয় যেকোনো খাবারই কমিয়ে দেওয়া প্রয়োজন। আঁশসমৃদ্ধ খাবার এবং আমিষ গ্রহণ করুন পর্যাপ্ত পরিমাণে। পানিও খাবেন ঠিকঠাক। ছোট ছোট এসব বিষয় খেয়াল রাখলে ভুঁড়ি কমানো সহজ হবে। কী খাবেন, কতটা খাবেন আর কী খাবেন না—এই বিষয়গুলো পুষ্টিবিদের কাছ থেকে জেনে নিতে পারেন। বিস্কুট, শিঙাড়া, পুরি প্রভৃতি ‘হালকা’ নাশতা যে আদতে হালকা নয়, সেটি মাথায় রাখুন।