আজ আন্তর্জাতিক পরিবার দিবস। জাতিসংঘের উদ্যোগে ১৯৯৩ সাল থেকে প্রতিবছর ১৫ মে দিবসটি পালিত হয়ে আসছে বিশ্বব্যাপী। বিশেষ এই দিবসে জেনে নেওয়া যাক গ্রিন ফ্যামিলি বা সবুজ পরিবার সম্পর্কে। পরিবেশ নিয়ে সচেতন পরিবারকে বলা হয় সবুজ পরিবার। এ ধরনের পরিবারের সদস্যরা টেকসই জীবনযাপনে বিশ্বাসী। তাঁরা দৈনন্দিন কর্মকান্ডের মাধ্যমে পরিবেশের ওপর নেতিবাচক প্রভাব কমিয়ে আনার চেষ্টা করেন। সবুজ পরিবারের অন্যান্য অভ্যাসগুলো কী?
সবুজ পরিবার এনার্জি সেভিং এলইডি লাইট ব্যবহার করে। পারতপক্ষে এসি ব্যবহার করে না। আশপাশে যথেষ্ট গাছপালা থাকলে আর এসির প্রয়োজন হয় না। ঘর থেকে বের হওয়ার সময় ফ্যান ও লাইট বন্ধ করার মাধ্যমে বিদ্যুতের অপচয় রোধ করে ‘কিছু না করেও’ গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। পানি যেটুকু প্রয়োজন, কেবল সেটুকুই ব্যবহার করে। বৃষ্টির পানি ধরে রেখে ব্যবহার করে এবং কাজে লাগায় সৌরশক্তি।
কাপড়ের আলমারিটা গোছাতে গেলে দেখবেন, কিছু ‘নতুন’ কাপড় বেরোবেই, যেসবের কথা আপনি ভুলেই গিয়েছিলেন! তাই নিত্যনতুন পোশাক না কিনে পুরোনোগুলোই যত্ন করে রাখুন এবং ব্যবহার করুন। সবুজ পরিবার এটাই করে। এ ধরনের পরিবার প্লাস্টিকের ‘সিঙ্গেল-ইউজ’ করে না। অর্থাৎ প্লাস্টিকের একই বোতল বা ব্যাগ বারবার ব্যবহার করে। সম্ভব হলে প্লাস্টিকের ব্যবহার কমিয়ে আনে। পুরোনো বা অব্যবহৃত জিনিসগুলো ফেলে না দিয়ে এমন কাউকে দেয়, যার কাজে লাগে। অথবা সেসব অন্য কাজে ব্যবহার করে। যেমন জিনস দিয়ে ফ্যাশনেবল টোটব্যাগ বানিয়ে ফেলে। ফেলনা জিনিসপত্র দিয়ে বানিয়ে ফেলে শিল্পকর্ম। এককথায় যেকোনো জিনিসের ব্যবহারের সময় বা আয়ু বাড়ায়।
সবুজ পরিবার যথাসম্ভব প্যাকেট ও বোতলজাত খাবার পরিহার করে। টাটকা ও মৌসুমি খাবার খায়। প্রতিদিন, প্রতিবেলার খাবারের তালিকায় মৌসুমি শাকসবজি ফল রাখে। মাংস খাওয়া কমায়। খাবার কেনার সময় প্লাস্টিকের প্যাকেজিং পরিহার করে। খাবার অপচয় করে না। বিভিন্ন খাবারের খোসা থেকেই বানায় জৈব সার।
সবুজ পরিবার হাঁটে। হেঁটে হেঁটে বাজার করে। সাইকেল তাদের প্রিয় বাহন। রিকশা অথবা গণপরিবহনও বেছে নেয়।
সবুজ পরিবার কিছু কেনার আগে নিজেদের জিজ্ঞাসা করে, এটা আমাদের কতটা প্রয়োজন? শখের বশে, কেবল জিনিসটা পছন্দ হয়েছে বা ‘শো অফ’–এর খাতিরে কিছু কেনে না। নিতান্তই প্রয়োজন ছাড়া জিনিস কেনা বাদ দেয়। এখন ঘর থেকে বের হলেই সবকিছু পাওয়া যায়। তাই জিনিসপত্র কিনে ঘর ভর্তি করে ফেলার প্রবণতাও তারা বাদ দেয়। কেননা, খাবার কিনে ঘরে সংরক্ষণ করার ফলে খাবার নষ্ট হওয়া বা অপচয়ের প্রবণতা বাড়ে।
সবুজ পরিবার ঘরে, বারান্দায়, ছাদে, বাইরে যেখানে পারে গাছ লাগায়। ঘরে বা আঙিনায় যদি যথেষ্ট গাছ থাকে, আলাদা করে এসির প্রয়োজন হয় না। গাছ কার্বন ডাই–অক্সাইড শোষণ করে বাতাস রাখে নিরাপদ। সবুজ পরিবারের একটা গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো তারা প্রকৃতির সংস্পর্শে সময় কাটাতে পছন্দ করে। প্রাণীর প্রতি সহানুভূতিশীলতাও সবুজ পরিবারের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য।
সূত্র: ফ্রন্টিয়ার ডটআইও