রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ভবনে বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে আগুন ধরে যায়। আগুন নেভাতে পানি দিচ্ছেন ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা। ২১ জুলাই।
রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ভবনে বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে আগুন ধরে যায়। আগুন নেভাতে পানি দিচ্ছেন ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা। ২১ জুলাই।

চিঠিপত্র

দুর্যোগ মোকাবিলায় তথ্যই হোক শক্তি

যেকোনো প্রাকৃতিক বা মনুষ্যসৃষ্ট দুর্যোগ মোকাবিলায় তথ্যের আদান-প্রদান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সে সময় তথ্যই বড় শক্তি। তবে সেটি হতে হবে সঠিক, সময়মতো ও সমন্বিত।

একটি কার্যকর ‘ইন্টিগ্রেটেড ডিজাস্টার ইনফরমেশন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম’ আমাদের দেশের জন্য এখন সময়ের দাবি।

দুর্যোগ বা দুর্ঘটনা ঘটার সঙ্গে সঙ্গে জরুরিব্যবস্থার মাধ্যমে জানমালের ক্ষয়ক্ষতি কমানো যায়। ফায়ার সার্ভিস, চিকিৎসাসেবা, নিরাপত্তা বাহিনী ও মানসিক সহায়তা প্রদানকারী সংস্থাগুলোর মধ্যে কার্যকর সমন্বয় তখনই সম্ভব, যখন তারা একীভূত ও নির্ভরযোগ্য তথ্যভান্ডার ব্যবহার করতে পারে। তথ্যের ভিত্তিতে দ্রুত ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা চিহ্নিত, ক্ষতিগ্রস্ত জনসাধারণের অবস্থা নিরূপণ এবং সম্পদের যথাযথ বণ্টন নিশ্চিত করা যায়।

বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে তথ্য ব্যবস্থাপনায় একটি সুস্পষ্ট ঘাটতি পরিলক্ষিত হয়। বিভিন্ন সংস্থার মধ্যে তথ্য বিনিময়ের সমন্বয়হীনতা, প্রযুক্তিগত অসম্পৃক্ততা এবং যাচাইবিহীন তথ্যের অবাধ প্রচারের ফলে জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি, আতঙ্ক এবং আস্থাহীনতা তৈরি হয়। এতে উদ্ধার, ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রমে জটিলতা সৃষ্টি হয় এবং অনেক সময় গুজবের ভিত্তিতে ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠী আরও ঝুঁকিতে পড়ে। এই পরিস্থিতিতে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে অতি জরুরি তথ্যের সঠিক সংরক্ষণ ও দ্রুত সম্প্রচার দুর্যোগ ও দুর্ঘটনা ব্যবস্থাপনার একটি কার্যকর সহায়ক শক্তি হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।

তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে দুর্যোগ ও দুর্ঘটনার সময় জরুরি তথ্যের সংরক্ষণ, বিশ্লেষণ ও দ্রুত সম্প্রচার নিশ্চিত করা সম্ভব। ভূ-স্থানিক তথ্যপ্রযুক্তি (জিআইএস), রিয়েল-টাইম তথ্যসংগ্রহ ব্যবস্থা (যেমন: KoboToolbox), ড্রোন ও উপগ্রহ চিত্র বিশ্লেষণ এবং ক্লাউডভিত্তিক তথ্য সংরক্ষণ ও বিশ্লেষণ প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে একাধিক সংস্থার মধ্যে তথ্য বিনিময়কে গতিশীল করা যায়। ক্লাউড প্রযুক্তির মাধ্যমে কেন্দ্রীয় সার্ভারে বিপুল পরিমাণ তথ্য সংরক্ষণ ও তাৎক্ষণিকভাবে যেকোনো স্থান থেকে অ্যাকসেস করা সম্ভব, যা সমন্বয় ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে উল্লেখযোগ্য সুবিধা প্রদান করে।

এ ছাড়া পূর্বসতর্কীকরণ ব্যবস্থা, ভয়েস ও টেক্সটভিত্তিক অ্যালার্ট সেবা এবং মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে জনগণের কাছে দ্রুত বার্তা পৌঁছে দেওয়া যায়। এসব প্রযুক্তির সফল প্রয়োগ নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থাগুলোর মধ্যে প্রযুক্তিগত ইন্টিগ্রেশন, মানবসম্পদ দক্ষতা উন্নয়ন এবং কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে সমন্বিত তথ্য অবকাঠামো গড়ে তোলার সুস্পষ্ট কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা জরুরি।

  • ফোরকান বিন কাশেম ম্যানেজিং ডিরেক্টর, স্পেকট্রাম