Thank you for trying Sticky AMP!!

মহানবী (সা.) সম্পর্ক ছিন্ন করতে নিষেধ করেছেন

কারও সঙ্গে সম্পর্ক ত্যাগ না করার কথা বলা হয়েছে বুখারি শরিফের হাদিসে। হাদিসে আছে মানুষের মধ্যে আল্লাহর কাছে সর্বাধিক উত্তম সেই ব্যক্তি যিনি আগে সালাম দেন। ভাইদের সঙ্গে তিন দিনের বেশি কথা না বলে থাকতে নিষেধ করেছেন মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)। কারও সঙ্গে সম্পর্ক ত্যাগ করা মন্দ।

হজরত আয়িশা (রা.)-র বৈপিত্রেয় ভ্রাতুষ্পুত্র আওফ ইবনু মালিক ইবনু তুফায়ল (রা.) বর্ণনা করেছেন, ‘আয়িশা (রা.)-কে জানানো হলো যে তাঁর কোনো বিক্রি বা দান সম্পর্কে আবদুল্লাহ ইবনু যুবায়র বলেছেন, আল্লাহর কসম! আয়িশা (রা.) অবশ্যই বিরত থাকবেন, নতুবা আমি নিশ্চয়ই তার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করব। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, সত্যিই কি তিনি এ কথা বলেছেন? তারা বললেন হ্যাঁ। তখন ‘আয়িশা (রা.) বললেন, আল্লাহর কসম! আমি আমার ওপর মানত করে নিলাম যে আমি ইবনু যুবায়রের সঙ্গে আর কখনো কথা বলব না। যখন এ বর্জনকাল দীর্ঘ হলো, তখন ইবনু যুবায়র (রা.) ‘আয়িশা (রা.)-র কাছে সুপারিশ পাঠালেন। তখন তিনি বললেন, না, আল্লাহর কসম! এ ব্যাপারে আমি কখনো কোনো সুপারিশ গ্রহণ করব না। আমার মানতও ভাঙব না।

Also Read: সুরা কাফে আল্লাহ বলেছেন মানুষ সৃষ্টির কারণ

‘এভাবে যখন বিষয়টি ইবনু যুবায়র (রা.)-র জন্য দীর্ঘ হতে লাগল, তখন তিনি জহুরা গোত্রের দুজন ব্যক্তি মিসওয়ার ইবন মাখরামাহ ও আবদুর রহমান ইবনু আসওয়াদ ইবনু আবদ ইয়াগুসের সঙ্গে আলোচনা করলেন। তিনি তাদের দুজনকে বললেন, আমি তোমাদের আল্লাহর কসম দিয়ে বলছি যে তোমরা দুজন আমাকে আয়িশা (রা.)-র কাছে নিয়ে যাও। কারণ আমার সঙ্গে তাঁর বিচ্ছিন্ন থাকার মানত জায়েজ নয়। তখন মিসওয়ার (রা) ও আবদুর রহমান (রা.) দুজন চাদর দিয়ে ইবনু যুবায়রকে ঢেকে নিয়ে এলেন এবং আয়িশা (রা.)-র কাছে অনুমতি চেয়ে বললেন, আসসালামু আলাইকা ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহু, আমরা কি ভেতরে আসতে পারি? আয়িশা (রা.) বললেন, আপনারা ভেতরে আসুন। তাঁরা বললেন আমরা সবাই? তিনি বললেন হ্যাঁ, আপনারা সবাই আসুন। তিনি জানতেন না যে তাঁদের সঙ্গে ইবনু যুবায়র (রা.) রয়েছেন। তাই যখন তাঁরা ভেতরে ঢুকলেন, তখন ইবনু যুবায়র (রা.) পর্দার ভেতর ঢুকে গেলেন এবং আয়িশা (রা.)-কে জড়িয়ে ধরে তাঁকে আল্লাহর কসম দিয়ে কাঁদতে শুরু করলেন।

‘তখন মিসওয়ার (রা.) ও ‘আবদুর রহমান (রা.)–ও তাঁকে আল্লাহর কসম দিতে শুরু করলেন। তখন আয়িশা (রা.) ইবনু যুবায়র (রা.)-র সঙ্গে কথা বললেন এবং তাঁর ওজর গ্রহণ করলেন।

Also Read: সুরা তাগাবুনে পরম লাভক্ষতির আলোচনা

‘তাঁরা বলতে লাগলেন, আপনি তো নিশ্চয়ই জানেন যে নবী (সা.) সম্পর্ক বর্জন করতে নিষেধ করেছেন। তিনি বলেছেন, কোনো মুসলিমের জন্য তার ভাইয়ের সঙ্গে তিন দিনের বেশি সম্পর্ক ছিন্ন রাখা অবৈধ।

‘যখন তাঁরা আয়িশা (রা.)–কে বেশি বোঝাতে এবং চাপ দিতে লাগলেন, তখন তিনিও তাদের বোঝাতে ও কাঁদতে লাগলেন। তিনি বললেন, আমি মানত করে ফেলেছি। মানত তো কঠিন ব্যাপার। কিন্তু তাঁরা বারবার চাপ দিতেই থাকলেন, অবশেষে তিনি ইবনু যুবায়র (রা.)-এর সঙ্গে কথা বললেন এবং তাঁর নজরের জন্য (কাফফারা হিসেবে) ৪০ জন দাস মুক্ত করে দিলেন।

‘এর পরে, যখনই তিনি তাঁর মানতের কথা মনে করতেন, তখন তিনি এত বেশি কাঁদতেন যে, চোখের পানিতে তাঁর ওড়না ভিজে যেত।

Also Read: মহানবী (সা.)–এর হিজরত কেন মদিনায় হলো?