সিটি গ্রুপ–প্রথম আলো ক্রীড়া পুরস্কার অনুষ্ঠানে অতিথিরা
সিটি গ্রুপ–প্রথম আলো ক্রীড়া পুরস্কার অনুষ্ঠানে অতিথিরা

সিটি গ্রুপ–প্রথম আলো ক্রীড়া পুরস্কার

গোটা ক্রীড়াঙ্গন যেন এসেছিল এক ছাদের নিচে

অনুষ্ঠান শুরুর ঘণ্টাখানেক আগেই সোনারগাঁও হোটেলের ওয়েসিস হলে সাবেক ও বর্তমান খেলোয়াড়, কোচ, সংগঠকদের আসা শুরু। খেলার জগতের চেনামুখদের সঙ্গে সাক্ষাতে গল্প-আড্ডা ও স্মৃতিচারণায় মেতে ওঠেন সবাই। ছিল রেড কার্পেটে মিলনমেলা নিয়ে অনুভূতি প্রকাশ। শনিবার বিকেল সাড়ে চারটা বাজতেই ওয়েসিস হল রূপ নেয় খেলার মানুষদের মিলনমেলায়।
২০০৫ থেকে প্রথম আলো এ আয়োজন করে আসছে। যেখানে শুধু সেরাদের স্বীকৃতিই দেওয়া হয় না, ক্রীড়াবিদের পুর্নমিলনীর সুযোগও তা। তাই তো এ আয়োজনের অপেক্ষায় থাকেন সবাই।
সিটি গ্রুপ–প্রথম আলো পুরস্কার অনুষ্ঠানে এসে তেমনটাই মনে করিয়ে দিলেন জাতীয় হকি দলের সাবেক অধিনায়ক রাসেল মাহমুদ জিমি। তাঁর কথা, ‘অনুষ্ঠান কিন্তু শেষ হলেও সবাই যে যার মতো করে আড্ডা দিচ্ছেন, কথা বলছেন। আবার হয়তো এক বছর পর কোনো অনুষ্ঠানে দেখা হতে পারে, আবার না–ও পারে। এই যেমন এখানে এসে আমার স্যারের দেখা পেয়ে গেলাম। এ রকম সবার সঙ্গে দেখা হয়। এটা খুবই ভালো লাগে।’

অনুষ্ঠানে আসছে অতিথিরা

২০০৪ সালে বর্ষসেরা উদীয়মান এবং ২০১২ সালে বর্ষসেরা রানারআপ হয়েছিলেন জিমি। এ অনুষ্ঠানের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কটা শুরু থেকেই। আর দশটা অনুষ্ঠানের চেয়ে এটাকে আলাদা মনে করেন জিমি। তাই প্রতিবারই এসে দিনটা উপভোগ করেন এই হকি তারকা, ‘আমি নিজেও এই অনুষ্ঠানে পুরস্কার পেয়েছি। পরিবেশটা দারুণ। কোনো ভেদাভেদ নেই। সবচেয়ে বড় কথা হলো, অনেক অনুষ্ঠানে দেখা যায় আসন বরাদ্দ থাকে, এখানে তা নেই। অনেকে সবাই সমান। নামীদামি খেলোয়াড়েরাও কম পরিচিত খেলোয়াড়ের সঙ্গে বসে অনুষ্ঠান উপভোগ করেন। কেউ আবার দাঁড়িয়েও উপভোগ করেন।’
ফুটবল–ক্রিকেট ছাড়াও অন্যান্য খেলার সাবেক ও বর্তমান খেলোয়াড়দের পাশাপাশি ক্রীড়া সংগঠক–সাংবাদিকেরা আজ বিকেলটা হাসি–আন্দন্দেই পার করেছেন। অনুষ্ঠানের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ছিলেন দেশবরণ্যে ক্রীড়া সাংবাদিক মুহাম্মদ কামরুজ্জামান।

ছিলেন জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক হাবিবুল বাশার ও খালেদ মাসুদ, সাবেক বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ, ধারাভাষ্যকার আতাহার আলী। বাফুফের নির্বাহী কমিটির সদস্য ছাইদ হাসান (কানন), সাখাওয়াত হোসেন, টিপু সুলতান, ইমতিয়াজ হামিদ, কামরুল হাসানরাও অনুষ্ঠান শুরুর আগে আসন গ্রহণ করেন।
কাবাডি, টেনিস, টেবিল টেনিস, ভলিবল, স্কোয়াশ, হকি, আর্চারি, সাঁতার, বক্সিং, ব্যাডমিন্টন, শুটিং ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদকেরা একসঙ্গে সময় কাটিয়েছেন। তাঁরা হলেন এস এ নেওয়াজ সোহাগ, ইশতিয়াক আহমেদ কারেন, মাকসুদ আহমেদ সনেট, বিমল ঘোষ, কামরুল ইসলাম, লে. কর্নেল (অব.) রিয়াজুল হাসান, তানভীর আহমেদ, মাহবুবুর রহমান, এম এ কুদ্দুস খান, রাসেল কবীর, আলেয়া ফেরদৌস।
অনুষ্ঠান আলোকিত করেন সাবেক ফুটবলার প্রতাপ শংকর হাজরা, আশরাফউদ্দিন আহমেদ চুন্নু, মোহাম্মদ মহসিন, শেখ মোহাম্মদ আসলাম, রুম্মন বিন ওয়ালি সাব্বির, কায়সার হামিদ, শফিকুল ইসলাম মানিক, জাহিদ হাসান এমিলি, রোকনুজ্জামান কাঞ্চন, বিপ্লব ভট্টাচার্য, মামুনুল ইসলামসহ আরও অনেকে।

ছিলেন জোবেরা রহমান লিনু, মনিরা মোর্শেদ হেলেন, কামরুন নাহার ডানা, খুকি জামান, লাজুল নাহার কস্তুরি, রেহানা পারভীনসহ অনেক নারী খেলোয়াগ–সংগঠক। সাবেক শুটার ও কোচ আসিফ হোসেন খান, সাবরিনা সুলতানা, সাইফুল আলম রিকিং, ভারোত্তোলক ও কোচ বিদ্যুৎ কুমার রায়, এসএ গেমসে সোনাজয়ী ভারোত্তোলক মাবিয়া আক্তার, শুটার শারমিন আক্তার রত্না, শারমিন আক্তার, কামরুন নাহার, স্কোয়াশের মারজান আক্তার, কাবাডি কোচ আবদুল জলিল, শাহনাজ পারভীন মালেকারাও।জাতীয় দলের কোচ শিরিন সুলতানা এসেছেন তাঁর খেলোয়াড়দের নিয়ে। এসেছেন ক্রীড়া সংগঠক ফজলুর রহমান বাবুল, আশিকুর রহমান মিকু, আসাদুজ্জামান কোহিনুর, কাজী রাজীব উদ্দিন আহমেদ, রেজাউর রহমান, সাবেক বক্সার আবদুল হালিমসহ অনেকে। ভারোত্তোলন ফেডারেশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ, টেবিল টেনিস ফেডারেশনের সহসভাপতি খন্দকার হাসান মুনীর। সাবেক হকি তারকা কামরুল ইসলাম কিসমত, রফিকুল ইসলাম কামালও ছিলেন অনুষ্ঠানে। সাবেক জাতীয় ব্যাডমিন্টন তারকা এনায়েত উল্লাহ খান, এলিনা সুলতানাও ছিলেন।

অনুষ্ঠানে এসেছেন দেশের প্রথম মহিলা আন্তর্জাতিক মাস্টার রানী হামিদের মতো কিংবদন্তিও। একফাঁকে বললেন, ‘এটা আমাদের খেলোয়াড়দের জন্য একটা বিশেষ দিন। সবাই আমরা একত্র হই, সময়টা উপভোগ করি। খুবই ভালো লাগে।’
সাবেক ভারোত্তোলক মোল্লা সাবিরার কণ্ঠে ভিন্ন উচ্ছ্বাস, ‘এই অনুষ্ঠানটা কত যে ভালো লাগে, ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না। আমাদের কিন্তু এই অনুষ্ঠান ছাড়া ওভাবে কারও সঙ্গে কারও দেখাও হয় না। সে জন্যই আসা।’