নারী ক্রিকেটার ও কর্মকর্তাদের জন্য ‘জেন্ডার সেনসিটিভিটি ট্রেনিং’য়ের একটি মুহূর্ত। গতকাল এই ট্রেনিংয়ের আয়োজন করে বিসিবি
নারী ক্রিকেটার ও কর্মকর্তাদের জন্য ‘জেন্ডার সেনসিটিভিটি ট্রেনিং’য়ের একটি মুহূর্ত। গতকাল এই ট্রেনিংয়ের আয়োজন করে বিসিবি

‘জেন্ডার সেনসিটিভিটি ট্রেনিংয়ে’ কী শিখলেন নারী ক্রিকেটাররা

নারী ক্রিকেটার জাহানারা আলমের তোলা যৌন নিপীড়নের অভিযোগের পর থেকেই নারী ক্রিকেটে এ নিয়ে চলছে আলোচনা। এর মধ্যেই কাল ইউএন ওমেনের সহযোগিতায় নারী ক্রিকেটার ও কর্মকর্তাদের জন্য ‘জেন্ডার সেনসিটিভিটি ট্রেনিংয়ের’ আয়োজন করেছে বিসিবি। যোগাযোগবিশেষজ্ঞ শারাত ইসলাম ও প্রোগ্রাম অ্যানালিস্ট তোসিবা কাশেম তাঁদের নিয়ে দেড় ঘণ্টার সেশন করেছেন।

বিসিবির আয়োজনের এই ট্রেনিং নিয়ে জাতীয় দলের ক্রিকেটার শারমিন আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, ‘একজন মেয়ে হিসেবে নিজেকে নিরাপদ রাখার কী উপায় আছে, যদি আপনি কোনো নিপীড়নের শিকার হন, কোথায় অভিযোগ করবেন বা এটার সময়সীমা কতটুকু—ট্রেনিংয়ে এসব বিষয়ে বলা হয়েছে।’

বাংলাদেশের বাস্তবতায় নারী ক্রিকেটারদের অনেক সামাজিক বাধা পেরিয়ে আসতে হয়। জাতীয় দলে পৌঁছে যাওয়ার পরও অনেককেই অনেক প্রতিকূল পরিস্থিতিতে পড়তে হয়। ট্রেনিংয়ে নিপীড়নের শিকার হওয়া অন্য ক্রিকেটারের পাশে দাঁড়ানোর বিষয়েও ধারণা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন শারমিন।

নারী ক্রিকেটাররা কীভাবে নিজেদের নিরাপদ রাখবেন তা বলা হয় ট্রেনিংয়ে

শারমিন বলেন, ‘সমাজ থেকেও আমাদের বাধা থাকে। নারী হিসেবে খেলায় আসাটা সহজ কাজ নয়। এই বাধাগুলো কীভাবে ভেঙে আসা যাবে, জুনিয়রদের কোনো সমস্যা হচ্ছে কি না, কীভাবে তা সমাধান করা যায়, এসব বিষয়ে ধারণা দেওয়া হয়েছে। এ ধরনের ওয়ার্কশপ করলে সবারই মানসিকভাবে একটা শক্তি আসবে।’

‘জেন্ডার সেনসিটিভিটি ট্রেনিংয়ের’ মাধ্যমে যৌন নিপীড়ন বা হেনস্তার ব্যাপারে সবাইকে সচেতন করা হয়েছে। বিসিবিতে কাজের নিরাপদ ও সম্মানজনক পরিবেশ নিশ্চিত করাই এই ট্রেনিংয়ের উদ্দেশ্য।

এ নিয়ে জাতীয় দলের ওপেনার ফারজানা হক প্রথম আলোকে বলেছেন, ‘নিপীড়ন অনেক সময় কথায়ও হতে পারে। গায়ে হাত দেওয়া, একটা পরিবেশ তৈরি করা—নিপীড়ন কেন, কখন, কীভাবে হয়, এই প্রেক্ষাপট বোঝানোর জন্য ক্লাসটা ছিল। আমরাও বোঝার চেষ্টা করেছি। এমন একটা জায়গা থাকা উচিত, যেন সবাই এসে মনের কথা বলতে পারে।’

২৫ জন নারী ক্রিকেটার ও বিসিবির বিভিন্ন বিভাগে কর্মরত স্টাফরা অংশ নেন ট্রেনিংয়ে

২৫ জন নারী ক্রিকেটারের পাশাপাশি ট্রেনিংয়ে অংশ নেন বিসিবির বিভিন্ন বিভাগে কর্মরত স্টাফরাও। তাঁদেরই একজন মিডিয়া বিভাগের সিনিয়র ম্যানেজার রাবীদ ইমাম। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘বিসিবির বিভিন্ন বিভাগে ছেলে ও মেয়েরা একসঙ্গে কাজ করছে। একটা অফিসের পরিবেশ কেমন হতে পারে—এসব বিষয়ে ধারণা দেওয়া হয়েছে। আমাদের ১৩–১৪ বছর বয়সের শিশুদেরকে নিয়েও কাজ করতে হয়।তাঁদেরকে কীভাবে সচেতন করতে হবে, নিপীড়ন হচ্ছে এটা বোঝাতে হবে। অনেক সময় মিথ্যা অভিযোগ হতে পারে, সেটা হলে কী প্রতিকার হতে পারে এসবও বোঝানো হয়েছে।’