পাকিস্তান অধিনায়ক সালমান আগা ও ভারত অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব
পাকিস্তান অধিনায়ক সালমান আগা ও ভারত অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব

এশিয়া কাপের ম্যাচ ফি: ভারত দেবে সেনাবাহিনীকে,পাকিস্তান বেসামরিক ক্ষতিগ্রস্তদের

এশিয়া কাপ শুরুর আগে থেকেই ভারত–পাকিস্তান ম্যাচকে ঘিরে জমছিল রাজনৈতিক উত্তেজনা। সেই উত্তেজনা বাড়তে থাকে গ্রুপ পর্বের ম্যাচে পাকিস্তান অধিনায়ক সালমান আগার সঙ্গে ভারতের অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদবের হাত না মেলানোয় এবং ম্যাচের পর দুই দেশের মে মাসের সংঘাত নিয়ে কথা বলার পর, যার জেরে সুপার ফোর পর্বে হারিস রউফ বিমান ভূপাতিতের অঙ্গভঙ্গি দেখান। আইসিসি পরে সূর্যকুমার ও রউফ দুজনকেই ম্যাচ ফির ৩০ শতাংশ জরিমানা করে।

টুর্নামেন্টের মাঝের সেসব ঘটনা ছাপিয়ে গেছে গতকাল রাতের ফাইনাল। দুবাইয়ে পাকিস্তানকে হারিয়ে শিরোপা জয়ের পর এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের (এসিসি) প্রেসিডেন্ট মহসিন নাকভির হাত থেকে পুরস্কার নিতে অস্বীকৃতি জানায় ভারত। যার জেরে শেষ পর্যন্ত ট্রফি ছাড়াই উদ্‌যাপন করতে হয়েছে সূর্যকুমার যাদবদের।

এমনকি পাকিস্তানকে ৫ উইকেটে হারিয়ে এশিয়া কাপ জয়কে ‘অপরাশেন সিঁদুর’-এর সঙ্গে তুলনা করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও। ক্রিকেটে দুই দেশের রাজনৈতিক সংঘাতকে জড়ানোর ঘটনা অবশ্য এটুকুতেই আটকে থাকেনি। ম্যাচ শেষে দুই দলের অধিনায়ক নিজেদের ম্যাচ ফিও রাজনৈতিক লড়াইয়ে সম্পৃক্তদের অনুদান হিসেবে দিয়ে দেওয়ার কথা জানিয়েছেন।

 গতকাল ম্যাচ–পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে ভারত অধিনায়ক সূর্যকুমার বলেছেন, ‘আমি এই টুর্নামেন্টে খেলা সব ম্যাচের আমার ম্যাচ ফি ভারতীয় সেনাবাহিনীর কাছে দিতে চাই।’

পাকিস্তানকে হারিয়ে এশিয়া কাপ জিতেছে ভারত

আর পাকিস্তান অধিনায়ক সালমান বলেছেন, ‘দলগতভাবে আমরা আমাদের ম্যাচ ফি ভারতের আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত বেসামরিক নাগরিকদের অনুদান হিসেবে দিয়ে দেব।’

পরবর্তী সময়ে পাকিস্তান দলের ম্যাচ ফি ক্ষতিগ্রস্ত বেসামরিকদের দেওয়ার কথা নিশ্চিত করে বিবৃতি দিয়েছে পিসিবিও। নিজেদের এক্স অ্যাকাউন্টে পিসিবি লিখেছে, ‘পাকিস্তান ক্রিকেট দল তাদের এশিয়া কাপ ফাইনালের ম্যাচ ফি উৎসর্গ করেছে ৭ মের হামলায় নিহত নিরীহ শহীদদের জন্য। যেখানে শিশুসহ সাধারণ মানুষ প্রাণ হারিয়েছিলেন। তাদের পরিবারের প্রতি আমাদের সমবেদনা ও প্রার্থনা রইল।’

গত এপ্রিলে ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলার পর মে মাসে পাকিস্তানে হামলা চালায় ভারত। পাল্টা হামলা শুরু হলে টানা চার দিন সামরিক সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে দুই দেশ। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় হামলা বন্ধ করে দুই দেশ।

তবে এ লড়াই যেন থেমেও থামার নয়। এশিয়া কাপজুড়ে দেখা গেছে এ সংঘাতের প্রভাব। এখন ভারত–পাকিস্তানের রাজনীতির এই উত্তাপ ক্রিকেট মাঠে আরও কত দূর গড়ায়, সেটাই দেখার অপেক্ষা।