রিশাদ হোসেন
রিশাদ হোসেন

৪ ম্যাচে ৮ উইকেট, তবু কেন রিশাদকে বাদ দিল লাহোর কালান্দার্স

শুরুটা স্বপ্নের মতো। নিজের খেলা প্রথম দুই ম্যাচে নেন ৩টি করে উইকেট। পরের ম্যাচে ২টি। একটা সময়ে ছিলেন পিএসএলের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারিও। লাহোর কালান্দার্সের হয়ে খেলা সেই রিশাদ হোসেন টানা তিনটি ম্যাচে একাদশে সুযোগই পাচ্ছেন না। কেন ৪ ম্যাচে ৮ উইকেট নেওয়া রিশাদ এখন একাদশের বাইরে?

প্রশ্নের উত্তর পেতে সবার আগে লাহোরের বিদেশি ক্রিকেটারদের ওপর নজর দেওয়া যেতে পারে। পাকিস্তান পেসার শাহিন শাহ আফ্রিদির নেতৃত্বে খেলা দলটিতে তিনজন বিদেশি এবারের আসরে প্রতিটি ম্যাচেই খেলেছেন। মানে তাঁদের জায়গা নিয়ে প্রশ্ন নেই। লাহোরে চার নম্বর বিদেশি হিসেবেই সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলেছেন রিশাদ, ৪টি।নামিবিয়ার ডেভিড ভিসা খেলেছেন ১ ম্যাচ, ইংল্যান্ডের টম কারেন ৩টি।

ভিসা ও কারেন দুজনই পেস বোলিং অলরাউন্ডার। আর রিশাদ স্পিন বোলিং অলরাউন্ডার। সাধারণ ধারণা হলো, যে উইকেটে স্পিনারদের জন্য বাড়তি কিছু থাকবে, সেখানে রিশাদের খেলার কথা। আর যেখানে পেসারদের দাপট, সেখানে খেলবেন কারেন, ভিসা।

লাহোর সর্বশেষ চারটি ম্যাচই খেলেছে লাহোরে। এই মাঠে প্রথম ম্যাচটিতে খেলেছিলেন রিশাদ। যে মাঠে ২ ওভার বোলিং করে ১৮ রান দিয়ে কোনো উইকেট পাননি রিশাদ। এর পর থেকেই দল থেকে বাদ পড়েন এই লেগি।

লাহোর কালান্দার্সের অনুশীলনে রিশাদ হোসেন

এখানে হওয়া ৩ ম্যাচেই খেলেছেন কারেন। উইকেট নিয়েছেন ২টি। গত ২৬ এপ্রিল নিজের খেলা প্রথম ম্যাচে ৩ ওভারে ২৪ রান দিয়ে ১ উইকেটে নেন। পরের ম্যাচে ৪ ওভারে দেন ২৪, উইকেট পেয়েছেন ১টিই। বৃষ্টির কারণে লাহোরে হওয়া পরের ম্যাচটি হয়েছে পরিত্যক্ত। মানে ২ ম্যাচে বোলিং করে ভালোই করেছেন কারেন।  

লাহোরের উইকেটের জন্যই কি রিশাদ এখন দলের বাইরে? কিছুটা প্রভাব তো আছেই। পিএসএলে এই স্টেডিয়ামের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারির প্রথম চারজনই পেসার। সবচেয়ে বেশি উইকেট নিয়েছেন শাহিন আফ্রিদি, ৪৫টি।

তবে বেশি উইকেট নেওয়া স্পিনারদের প্রথম চারজনের তিনজনই লেগ স্পিনার। অর্থাৎ অন্য স্পিনারদের চেয়ে লেগ স্পিনাররা এখানে বাড়তি সুবিধা পান। লাহোরে সবচেয়ে বেশি উইকেট রশিদ খানের, ২২টি, তিনিও খেলেছিলেন লাহোরের হয়েই। এরপর শাদাব খানের, ১৮টি।  হয়তো রিশাদ যে এই স্টেডিয়াম রশিদ হয়ে উঠতে পারেন, সেই ভরসা পাচ্ছে না লাহোর ম্যানেজমেন্ট।

টিম কম্বিনেশনও একটা ভূমিকা রাখছে। এই দলে স্পিনার হিসেবে খেলেন পাকিস্তানের ৩৮ বছর বয়সী স্পিনার আসিফ আফ্রিদি। সিকান্দার রাজাও স্পিনার হিসেবে জ্বলে উঠতে পারেন।

রিশাদের পারফরম্যান্স আসলে কেমন? নিজের খেলা প্রথম ২ ম্যাচে রিশাদ উইকেট নিয়েছেন ৬টি। রানও বেশি খরচ করেননি। তবে মুলতান সুলতানের বিপক্ষে একটি ম্যাচে ২ উইকেট নিতে ৪৫ রান খরচ করেন রিশাদ।

নিজের খেলা প্রথম ২ ম্যাচে রিশাদ উইকেট নিয়েছেন ৬টি

আর পরের ম্যাচে ২ ওভারে ১৮ রান দিয়ে কোনো উইকেট পাননি। শেষ ২ ম্যাচে ভালো করতে না পারলেও ফর্মের কারণেই রিশাদ বাদ পড়েছেন, সেটাও বলা যাচ্ছে না। কারণ, লেগ স্পিনাররা মাঝেমধ্যে রান বেশি দেবেন, এমনটা হতেই পারে।

মূলত উইকেট ও দলের কম্বিনেশনের কারণেই বাদ পড়েছেন রিশাদ। সেই হিসাব পরের দুই ম্যাচেও রিশাদকে একাদশের বাইরে রাখা হতে পারে। কারণ, আগামী দুই ম্যাচও ঘরের মাঠেই খেলবে লাহোর কালান্দার্স।