
রাজশাহী খুলনাকে হারিয়েছে তিন দিনেই। আজ শেষ হওয়া অন্য তিনটি ম্যাচই ড্র হয়েছে। সিলেটে সেঞ্চুরি পেয়েছেন মুশফিকুর রহিম। সেঞ্চুরি পেয়েছেন বরিশালের সালমান হোসেনও।
সেঞ্চুরির উদ্যাপনটা একটু বুনোই হলো মুশফিকুর রহিমের। র্যাম্প শটে উইকেটকিপারের মাথার ওপর দিয়ে চার মেরে তিন অঙ্কে পৌঁছেই যেন ভেতরে জমে থাকা আগুনটা ছুড়ে দিলেন বাইরে। হাত তুলে আক্রমণাত্মক উদ্যাপন, তারপর বোলার এনামুল হকের দিকে আগুনঝরা দৃষ্টি! আগের দিন এনামুল কিছু বাউন্সার দিয়েছিলেন তাঁকে। সেগুলোর জবাবও যেন মাঠেই দিলেন মুশফিক।
সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে শেষ দিন সকালে মুশফিক ছিলেন ৯৩ রানে, দল ৭ উইকেটে ২৬০। কিছুক্ষণের মধ্যেই সিলেট হারাল নবম উইকেট—২৭১ রানে খালেদ আহমেদ আউট। তখন আশঙ্কা, সেঞ্চুরি হয়তো অধরাই থাকবে। শেষ ব্যাটসম্যান নাবিল সামাদও প্রায় আউট হয়ে যাচ্ছিলেন। শেষ মুহূর্তে বল ছেড়ে বেঁচে যান তিনি। আর তাতেই সুযোগ মেলে মুশফিকের।
পরের ওভারে এনামুলের প্রথম বলে ডিফেন্স আর দ্বিতীয় বলেই র্যাম্প শট—চার। আর সেই চারেই প্রথম শ্রেণিতে মুশফিকের ১৯তম সেঞ্চুরি। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে আসন্ন টেস্ট সিরিজের আগে এই ইনিংসটা তাঁর জন্য দারুণ প্রস্তুতি। পরে আরও ১৫ রান যোগ করে ২০৫ বলে ১১৫ রানে আউট হন মুশফিক। তাঁর ইনিংস সাজানো ছিল ৮টি চার ও ২টি ছক্কায়। দল অলআউট ২৯০ রানে।
শেষ পর্যন্ত ম্যাচের পরিণতি অনুমিতই—ড্র। দ্বিতীয় ইনিংসে ঢাকা ৬৪ ওভারে ২ উইকেটে ২২২ রান তুলে ইনিংস ছেড়ে দেয়। ফলে সিলেটের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ১২-১৩ ওভারে ২৪৩ রান। তারা ৪ ওভার খেলে ১৩ রান তুলে ড্র মেনে নেয়। ঢাকার হয়ে ওপেনার জিশান আলম করেছেন ৯৪ রান। চার ম্যাচের প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ারে দ্বিতীয়বার নব্বইয়ে আউট হলেন তিনি, তাও টানা দুই ম্যাচে! আগেরবার রংপুরের বিপক্ষে করেছিলেন ৯৭।
কক্সবাজার আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামেও বরিশাল–চট্টগ্রাম ম্যাচের পরিণতি ড্র। তৃতীয় দিনে ভেজা আউটফিল্ডে খেলা হয়েছিল মাত্র ১৫ ওভার। সেদিন বরিশালের প্রথম ইনিংসই শেষ হয়নি। আজ ২ উইকেটে ১৬৬ রান থেকে শুরু করে দলটি ৪ উইকেটে ২৫৯ রানে ইনিংস ঘোষণা করে। ১২০ রানে অপরাজিত ছিলেন সালমান হোসেন—এটি তাঁর দ্বিতীয় প্রথম শ্রেণির সেঞ্চুরি।
বেলা সাড়ে তিনটায় ইনিংস ঘোষণা করে বরিশাল। এরপর চট্টগ্রাম ৪ ওভারে বিনা উইকেটে ৩৫ রান তুলে দ্বিতীয় ইনিংস ছেড়ে দেয়। শেষ ঘণ্টায় বরিশালের লক্ষ্য দাঁড়ায় ১৩৫ রান। ৯ ওভারে ১৯ রান তুলেই ড্র মেনে নেয় দুই দল।
কক্সবাজার একাডেমি গ্রাউন্ডে তৃতীয় দিনে এক বলও গড়ায়নি বৃষ্টির কারণে। শেষ দিনেও ছিল বাধা। তবু ময়মনসিংহের বিপক্ষে বিপদে পড়ে রংপুর। ২ উইকেটে ১৮ রান নিয়ে শুরু করা দলটি প্রথম ইনিংসে অলআউট হয় ১২৭ রানে, পড়ে ফলো অনে।
দ্বিতীয় ইনিংসে মাঝ সেশনে শুরু করে রংপুর, এবার দৃঢ়ভাবে ব্যাট করেছে দলটি। ৩৩ ওভারে ২ উইকেটে ১১২ রান তুলে ড্রতে শেষ হয় ম্যাচ। অপরাজিত ছিলেন ওপেনার আবদুল্লাহ আল মামুন—৬৯ রানে।