টি-টোয়েন্টির অপর নাম ছক্কার ক্রিকেট। এটা আসলে নতুন করে বলার প্রয়োজনও নেই। আর এই ছক্কার খেলায় প্রতিবছর দেখা যাচ্ছে নতুন নতুন ছক্কাবাজকে। চলতি বছরে স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ ছক্কার তালিকার প্রথম তিনটি নামই বলা যায় অনেকটাই নতুন। শীর্ষে পাঁচে স্বাভাবিকভাবেই আছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের তারকারা।
চলতি বছর এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ ছক্কা মেরেছেন ডেভাল্ড ব্রেভিস। ১২ আগস্ট অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ১২৫ রানের ইনিংস খেলা এই ব্যাটসম্যান ছক্কা মেরেছেন ৮৫টি।
৩০ ইনিংস খেলে ৮৫টি ছক্কা মেরেছেন এই বেবি এবিখ্যাত এই ব্যাটসম্যান। ২৯ ইনিংসে ৪৫.২২ গড় ও ১৮৬.৬৭ স্ট্রাইক রেটে তিনি রান করেছেন ৯৯৫। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৭৭টি করে ছক্কা মেরেছেন পাকিস্তানের সাহিবজাদা ফারহান ও অস্ট্রেলিয়ার মিচেল ওয়েন।
ছক্কার সংখ্যা সমান হলেও ওয়েনের চেয়ে ১১টি ইনিংস কম খেলেছেন সাহিবজাদা। পাকিস্তানের এই ওপেনার মাত্র ২৫ ইনিংসে ৭৭টি ছক্কা মেরেছেন, ওয়েন ৩৬ ইনিংসে। গড় বিবেচনাতেও বেশ এগিয়ে সাহিবজাদা। পাকিস্তানের এই ওপেনারের গড় ৫৫.৭৮, ওয়েনের ২৫.৬২।
ওয়েন মিডল অর্ডারে ব্যাটিং করেন, তাঁর কাজ দ্রুত রান তোলা। সেটা তিনি অবশ্য বেশ ভালোই করছেন। এ বছর ১৯৬.৭১ স্ট্রাইক রেটে রান করেছেন। পাকিস্তানের ওপেনার সাহিবজাদার স্ট্রাইক রেটও ভালোই, ১৬৬.১৯।
গত বছর স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে ১৭০টি ছক্কা মেরে রেকর্ড গড়েছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের নিকোলাস পুরান, যা এক পঞ্জিকাবর্ষে টি-টোয়েন্টিতে সবচেয়ে বেশি ছক্কার বিশ্ব রেকর্ড। ২০১৫ সালে আন্তর্জাতিক ও ফ্র্যাঞ্চাইজি টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে মোট ১৩৫টি ছক্কা মেরেছিলেন ক্রিস গেইল। সেই রেকর্ড গত বছর ভাঙেন পুরান।
পুরান এবারও আছেন সর্বোচ্চ ছক্কার শীর্ষ পাঁচে। এবার অবশ্য সংখ্যাটা বেশ কম। ৩৭ ইনিংসে পুরান এবার ছক্কা মেরেছেন ৭৪। ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগ মাত্রই শুরু হয়েছে, পুরানের ছক্কা বেড়ে যাবে শিগগিরই। সমান ৭৪টি ছক্কা আছে অস্ট্রিয়ার করণবীর সিংহের।
মাত্র ২৪ ম্যাচে পুরানের সমান ছক্কা মেরেছেন তিনি। যদিও তিনি যেসব দলের বিপক্ষে খেলেন, তাদের বোলিংয়ের মান নিয়ে প্রশ্ন আছে। করণবীরের সব ছক্কাই আন্তর্জাতিক ম্যাচে। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে চলতি বছর তাঁর চেয়ে বেশি ছক্কা অন্য কেউ মারতে পারেননি। রানেও তিনি সেরা। চলতি বছর একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে হাজারের বেশি (১০১৩) রান তুলেছেন এই ব্যাটসম্যান।
টি-টোয়েন্টিতে এ সময়ে বাংলাদেশের সবচেয়ে বিধ্বংসী ব্যাটসম্যানই বোধ হয় দলের দুই ওপেনার তানজিদ হাসান ও পারভেজ হোসেন। দুজনেরই আছে টি-টোয়েন্টি মেজাজে ব্যাটিং করার সহজাত সামর্থ্য। এ সময়ের ক্রিকেটে ঝুঁকি নেওয়ার শুরুটা ওপেনারদেরই করতে হয়।
স্পিনারদের হাওয়ায় ভাসানো বলটাকে হাওয়ায় ভাসিয়ে গ্যালারিতে পাঠানোর দম, সাহস ও দক্ষতা ওপেনারদের থাকতে হয়। পেসারদের বিপক্ষে নতুন বলে ব্যাটটা চালাতেই হয়। আর এই দম, সাহস ও দক্ষতা পারভেজ ও তানজিদের আছে। সে কারণেই এই ছক্কার তালিকাতেও এই দুজনই বাংলাদেশের শীর্ষে।
তানজিদ চলতি বছরে ছক্কা মেরেছেন বাংলাদেশ সর্বোচ্চ ৫৫টি। ইনিংসও বেশি খেলেননি, ২২টি। চারের (৪৮) চেয়ে ছক্কাই বেশি। ২৮ গড় আর ১৪৪.৮৮ স্ট্রাইক রেটে মোট রান করেছেন ৭৬৫। সমান ২২ ম্যাচে পারভেজ ছক্কা মেরেছেন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪৩টি। পারভেজ করেছেন ৬১০ রান, গড় ৩০.৫০, স্ট্রাইক রেট ১৪১.২০।
পারভেজের চেয়ে ১ রান কম করা লিটন দাসের ছক্কা ২৮টি। তিনিও ইনিংস খেলেছেন ২২টি। সমান ২৮টি ছক্কা আছে জাকের আলীরও। লিটন জাকেরের চেয়ে একটি বেশি মানে ২৯টি ছক্কা আছে মোহাম্মদ নাঈমের। নাঈম ইনিংস খেলেছেন ১৭টি, জাকের ২১টি।