
গণ বিশ্ববিদ্যালয় ৫: ০ ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটিনর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় ২: ১ স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশআমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ ০ (৩): ০ (১) ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি
গতবার ফাইনালে হারের প্রতিশোধ এবারই যেন নিল আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (এআইইউবি)। তাতে ইস্পাহানি–প্রথম আলো আন্তবিশ্ববিদ্যালয় ফুটবলের তৃতীয় আসরে গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিতে হলো চ্যাম্পিয়ন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিকে। নিজেদের মাঠেই শ্বাসরুদ্ধকর টাইব্রেকারে হেরে তারা ছিটকে গেছে।
আজ গ্রুপ পর্বে দুই দলের উত্তেজনাপূর্ণ গোলশূন্য ম্যাচ শেষে টাইব্রেকারে জাতীয় বয়সভিত্তিক দলে খেলা গোলকিপার মেহেদী হাসানের দুর্দান্ত নৈপুণ্যে ড্যাফোডিলকে ৩–১ গোলে হারিয়ে গ্রুপ ফাইনালে উঠেছে এআইইউবি। গত আসরের ফাইনালেও মুখোমুখি হয়েছিল এই দুই দল। তখন এআইইউবি হেরেছিল ১–২ গোলে, ড্যাফোডিলের হাজার হাজার সমর্থকের সামনে।
ড্যাফোডিল এবার প্রথম ম্যাচে ৮–০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছিল ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিককে। অন্যদিকে প্রথম ম্যাচে বাই পায় এআইইউবি। দ্বিতীয় ম্যাচে দুই দলের লড়াই যেন ফিরিয়ে আনে গতবারের ফাইনালের আবহ। ফাইনালের আগেই যেন ফাইনাল হয়ে যায়।
সাভারের বিরুলিয়ায় ড্যাফোডিলের মাঠে খেলা। ১০ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী ম্যাচ দেখেছেন। মাঠের চারপাশ, ব্যালকনি, ছাদ—সব জায়গা ভরে যায় দর্শকে। কোথাও ছিল না তিল ধারণের জায়গা। ঠিক যেন গত আসরের ফাইনালের দৃশ্য। কিন্তু শেষ পর্যন্ত হতাশ হতে হয়েছে ড্যাফোডিলের শিক্ষার্থীদের।
কারণ একটাই—এআইইউবির গোলকিপার মেহেদী হাসান। টাইব্রেকারে তিনি তিনটি শট ঠেকিয়ে দেন। একাই দলকে জেতান। হয়েছেন ম্যাচসেরা।
ড্যাফোডিল চারটি শট নিয়েছিল, গোল করতে পেরেছে শুধু দ্বিতীয়টিতে। অন্যদিকে এআইইউবি প্রথম তিন শটেই গোল করে। চতুর্থ শটটি ড্যাফোডিলের গোলকিপার জসিম উদ্দিন আটকান, কিন্তু তাতেও শেষ রক্ষা হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয় ফুটবলের পরাশক্তি ড্যাফোডিলকে হার মানতেই হলো।
ড্যাফোডিল চেষ্টা করেছে নির্ধারিত ৭০ মিনিটেই গোল করতে। কিন্তু দিনটা তাদের ছিল না। গতবারের সেরা খেলোয়াড় ও সর্বোচ্চ গোলদাতা মাহবুবুর রহমান জুয়েলকে ব্যবহার করেও ফল পায়নি। দ্বিতীয়ার্ধে তাঁকে বদল করেও এআইইউবির শক্ত রক্ষণ ভাঙতে পারেনি তারা। দুই দলেই খেলেছেন দেশের শীর্ষস্তরের কয়েকজন ফুটবলার। নামীদামি না হলেও বড় ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা আছে তাঁদের।
এই ম্যাচে ড্যাফোডিল পায়নি তারকা ডিফেন্ডার রহমত মিয়া, ইসা ফয়সাল, দিপক রায়ের মতো খেলোয়াড়দের। মাঠে ছিলেন শীর্ষ লিগে খেলার অভিজ্ঞতাসম্পন্ন সোহানুর রহমান, ফাহিম মোরশেদ। খেলেছেন খলিল ভূঁইয়া, জুয়েল, নাইজেরিয়ান আবু বক্কর ও সুলেইমান আবদুল্লাহি। গতবারের চ্যাম্পিয়ন হিসেবে ড্যাফোডিলই ছিল ফেবারিট। কিন্তু মাঠে ফেবারিটের মতো খেলতে পারেনি। সমানে টক্কর দিয়েছে এআইইউবি। বিশেষ করে এআইইউবির রক্ষণ আর গোলকিপার ছিলেন যেন চীনের প্রাচীর।
‘এফ’ গ্রুপের ফাইনালে এআইইউবির প্রতিপক্ষ ঠিক হয়নি এখনো। ৪ ডিসেম্বর ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ও শান্ত–মারিয়াম ইউনিভার্সিটি অব ক্রিয়েটিভ টেকনোলজির মধ্যে জয়ী দলের সঙ্গে তারা খেলবে।
‘ই’ গ্রুপ থেকে ফাইনালে উঠেছে প্রথম আসরের চ্যাম্পিয়ন গণ বিশ্ববিদ্যালয় ও নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়। এই দুই দল মুখোমুখি হবে ৪ ডিসেম্বর। দুই দলই আজ নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচ জিতে ফাইনালে পৌঁছেছে। দিনের প্রথম ম্যাচে ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটিকে ৫–০ গোলে হারিয়েছে গণ বিশ্ববিদ্যালয়। হ্যাটট্রিক করে ম্যাচসেরা হয়েছেন আরফাত মিয়া।
দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশকে ২–১ গোলে হারায় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়। একটি গোল করে এবং একটি করিয়ে ম্যাচসেরা হয়েছেন শাহজালাল সিজান।
ম্যাচসেরাদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক ইমতিয়াজ সুলতান জনি, ইস্পাহানি টি লিমিটেডের সেলস ম্যানেজার মোহাম্মদ এমদাদুল ইসলাম ও ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির প্রক্টর প্রফেসর ড. শেখ মোহাম্মদ আল্লাইয়ার।
টুর্নামেন্টের প্রচার সহযোগী এটিএন বাংলা।