
অভিযোগগুলোর ব্যাপারে চেলসিকে ১৯ সেপ্টেম্বরের মধ্যে জবাব দিতে হবে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে শাস্তি হিসেবে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ক্লাবটিকে আর্থিক জরিমানা করা হতে পারে।
রুশ ধনকুবের রোমান আব্রামোভিচ মালিকানায় থাকতে চেলসি ফুটবল ক্লাব ৭৪টি নিয়ম ভঙ্গ করেছে বলে অভিযোগ এনেছে ইংলিশ ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (এফএ)। অভিযোগগুলোর বেশির ভাগই খেলোয়াড়দের এজেন্ট, মধ্যস্থতাকারী ও খেলোয়াড় কেনাবেচায় তৃতীয় পক্ষের বিনিয়োগ বা সম্পৃক্ততার সঙ্গে সম্পর্কিত।
চেলসি ২০১০–১১ থেকে ২০১৫–১৬ মৌসুমের মধ্যে বেশির ভাগ নিয়ম ভঙ্গ করলেও এফএ জানিয়েছে, ২০০৯ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত সময়জুড়ে এ ধরনের নিয়ম ভঙ্গের প্রমাণ তারা পেয়েছে।
অভিযোগগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো কোনো ক্লাব, খেলোয়াড় কিংবা এজেন্ট লেনদেন বা চুক্তি আলোচনার সময় আসল বিষয় গোপন বা বিকৃতভাবে উপস্থাপন করতে পারবে না—এই নিয়ম ভেঙেছে চেলসি।
এ ছাড়া ‘রুল জে১’ অনুযায়ী, কোনো ক্লাব অনুমোদনহীন এজেন্টকে সরাসরি বা পরোক্ষভাবে কাজে লাগাতে পারবে না এবং তাঁদের টাকা দিতে পারবে না। স্ট্যামফোর্ড ব্রিজের ক্লাবটির বিরুদ্ধে এই নিয়মও ভাঙার অভিযোগ তুলেছে এফএ।
সূত্রের বরাতে ইএসপিএন জানিয়েছে, অভিযোগগুলোর ব্যাপারে চেলসিকে ১৯ সেপ্টেম্বরের মধ্যে জবাব দিতে হবে। তবে প্রয়োজনে সময় বাড়ানো হতে পারে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে শাস্তি হিসেবে ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়ন দলটিকে আর্থিক জরিমানা করা হতে পারে। তবে পয়েন্ট কাটা বা মাঠের সঙ্গে সম্পর্কিত কোনো সাজা হওয়ার আশঙ্কা নেই।
২০২২ সালের মে মাসে মার্কিন ব্যবসায়ী টড বোয়েলি ও ক্লিয়ারলেক ক্যাপিটালের নেতৃত্বাধীন একটি কনসোর্টিয়াম চেলসির মালিকানা নেয়। তখন তারা আগের মালিক আব্রামোভিচের সময়ের কিছু আর্থিক গরমিল খুঁজে পায়।
সে বছর ইউক্রেনে আক্রমণের পর রাশিয়াকে আন্তর্জাতিক ক্রীড়াঙ্গন থেকে নিষিদ্ধ করা হয়। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের আস্থাভাজন আব্রামোভিচকেও চেলসির মালিকানা ছেড়ে দিতে হয়।
২০২৩ সালের জুলাইয়ে চেলসি স্বেচ্ছায় উয়েফাকে এক কোটি ইউরো (১৪২ কোটি টাকা) জরিমানা দেয়। কারণ, তারা আব্রামোভিচ যুগের অসম্পূর্ণ আর্থিক প্রতিবেদনের বিষয়টি ক্লাবটির নতুন মালিকপক্ষই প্রকাশ করেছিল।
গতকাল এফএ বিবৃতিতে বলেছে, ‘চেলসি ফুটবল ক্লাব এজেন্ট নিয়ন্ত্রণ, মধ্যস্থতাকারী নিয়ে কাজ এবং খেলোয়াড় কেনাবেচায় তৃতীয় পক্ষের বিনিয়োগ–সংক্রান্ত বেশ কিছু ধারা ভঙ্গ করেছে।’
চেলসি এরই মধ্যে জানিয়ে দিয়েছে, তারা এসব অভিযোগের বিরুদ্ধে আইনি লড়াই করবে না। বিষয়টি স্বাধীন নিয়ন্ত্রক কমিশন তদন্ত করবে। ক্লাবটির বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘এফএর সঙ্গে আমাদের স্বপ্রকাশিত বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা এখন প্রায় শেষের পথে। নতুন মালিক ২০২২ সালের ৩০ মে ক্লাবটি কিনে নেওয়ার পরই পুরোনো আর্থিক প্রতিবেদন ও নিয়ম ভঙ্গের সম্ভাব্য বিষয়গুলো শনাক্ত করে। এরপর সঙ্গে সঙ্গেই এফএসহ সব কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়।’
ক্লাবটি আরও বলেছে, ‘আমরা সব সময় স্বচ্ছ থেকেছি এবং ক্লাবের সব নথি ও পুরোনো তথ্য কর্তৃপক্ষকে দেখার সুযোগ দিয়েছি। আমরা এফএর সঙ্গে কাজ করে যত দ্রুত সম্ভব এই জটিল বিষয়ের সমাধান করতে চাই।’
ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠলেও রোমান আব্রামোভিচের সময়েই সর্বোচ্চ সাফল্য পেয়েছে চেলসি। ২০০৩ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ক্লাবটির মালিক ছিলেন এই ধনকুবের। তাঁর সময়ে পাঁচটি প্রিমিয়ার লিগ, দুটি চ্যাম্পিয়নস লিগ, দুটি ইউরোপা লিগ, একটি ক্লাব বিশ্বকাপসহ মোট ২১টি শিরোপা জিতেছে পশ্চিম লন্ডনের ক্লাবটি।