ফিফার অর্থায়নে টেকনিক্যাল সেন্টার নির্মাণ করবে বাফুফে
ফিফার অর্থায়নে টেকনিক্যাল সেন্টার নির্মাণ করবে বাফুফে

ফিফার ৩০ কোটি টাকা বাফুফে হারাবে, যদি…

প্রতিষ্ঠার ৫৩ বছরেও নিজস্ব কোনো মাঠ হয়নি বাফুফের। ফিফার অর্থায়নে টেকনিক্যাল সেন্টার হলে সেই অপূর্ণতা দূর হয়ে যাবে।

‎বছর তিনেক আগে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) ‘সেন্টার ফর এক্সিলেন্সের’ জন্য অত্যাধুনিক টেকনিক্যাল সেন্টার নির্মাণের প্রক্রিয়া শুরু করেছিল।

শুরুতে কক্সবাজারের রামু উপজেলার খুনিয়াপালংয়ে জমি পেলেও পরে সেই জায়গার পরিবর্তে একই জেলার রশিদনগরে জমি দেওয়া হয়েছে বাফুফেকে। বর্তমানে এটি যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের অপেক্ষায়। মন্ত্রণালয়ের অনুমতি মিললেই কাজ শুরু করবে ফুটবল ফেডারেশন।

তবে বাফুফে চাইছে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শুরু করতে। কারণ, টেকনিক্যাল সেন্টার নির্মাণের জন্য ফিফার ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টের আওতায় প্রায় ৩০ কোটি টাকা পাবে বাফুফে। শর্ত অনুযায়ী, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে নির্মাণকাজ শুরু না করলে এই বরাদ্দ ফেরত যাবে। গত শনিবার অনুষ্ঠিত বাফুফের নির্বাহী কমিটির সভায় তাই বিষয়টি গুরুত্ব পেয়েছে।

ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনোর সঙ্গে বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়াল

টেকনিক্যাল সেন্টারের ব্যাপারে সর্বশেষ অবস্থা জানিয়ে বাফুফের নির্বাহী কমিটির সদস্য ও টেকনিক্যাল কমিটির প্রধান কামরুল হাসান গতকাল প্রথম আলোকে বলেছেন, ‘প্রথমে আমরা ২০ একরের মতো জমি চেয়েছিলাম। পরে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক বললেন, এত জমি দেওয়া যাবে না। এরপর আমাদের ১৫ একর জমি দেওয়া হয়েছে। এখন কিছু আনুষ্ঠানিকতা বাকি। মন্ত্রণালয় অনুমোদন দিলেই কাজ শুরু করতে পারব।’

প্রতিষ্ঠার ৫৩ বছরেও নিজস্ব কোনো মাঠ হয়নি বাফুফের। ফিফার অর্থায়নে টেকনিক্যাল সেন্টার হলে সেই অপূর্ণতা দূর হবে। মাঠসহ সব ধরনের আধুনিক সুযোগ-সুবিধা থাকবে এতে। থাকবে একটি ঘাসের মাঠ, একটি আর্টিফিশিয়াল টার্ফ, জিমনেসিয়াম ও সুইমিংপুল। ফুটবলারদের জন্য সেখানে একাডেমিক ভবন করারও পরিকল্পনা আছে বাফুফের।

মূলত ফিফার শর্তের কারণেই ডিসেম্বরের আগে কাজ শুরু করতে চায় ফেডারেশন। কামরুল হাসান বলেছেন, ‘আশা করি, ডিসেম্বরের আগে কাজ শুরু করতে পারব। এর বেশি দেরি করার সুযোগ নেই। ফিফা যে বরাদ্দ দেবে, সেটা পেতে হলে অবশ্যই ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শুরু করতে হবে। না হলে বরাদ্দ ফেরত যাবে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুব-উল-আলম বলেছেন, ‘এটা মূলত খাসজায়গা। তাই একটা প্রক্রিয়া মানতে হয়। আমরা জেলা প্রশাসককে চিঠি দেব। তিনি ওখানকার সরকারি রেট আমাদের জানাবেন। এরপর ভূমি মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার কাছে পাঠানো হবে। এভাবে জমি অধিগ্রহণ হওয়ার পর আমরা বাফুফেকে অনুমোদন দিয়ে দেব।’ ডিসেম্বরের আগেই এই প্রক্রিয়া শেষ হবে বলেও আশ্বস্ত করেছেন তিনি।

সংরক্ষিত বনাঞ্চলের মধ্যে পড়ায় কক্সবাজারের খুনিয়াপালং এলাকায় বাফুফের টেকনিক্যাল সেন্টার নির্মাণের অনুমতি দেওয়া হয়নি

২০২২ সালের জুলাইয়ে কক্সবাজার জেলার রামু উপজেলার খুনিয়াপালংয়ে ২০ একর জায়গা বাফুফের অনুকূলে হস্তান্তর করেছিল কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগ। বাফুফে সেখানে সেন্টার ফর এক্সিলেন্স নির্মাণের প্রক্রিয়া শুরু করার পর ফিফার কাছে ইএসআই (এনভায়রনমেন্ট সোশ্যাল ইমপ্যাক্ট অ্যানালাইসিস) রিপোর্ট পাঠায়। ‎

পরে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ জানায়, জায়গাটি সংরক্ষিত বনাঞ্চলের মধ্যে পড়ায় খুনিয়াপালংয়ে টেকনিক্যাল সেন্টার নির্মাণ করা যাবে না। পরিবেশের ওপর এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ার শঙ্কা আছে।

সে কারণেই জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ বাফুফেকে বিকল্প জায়গায় টেকনিক্যাল সেন্টার নির্মাণের প্রস্তাব দেয়। বিকল্প জায়গাটি একই উপজেলার রশিদনগর ইউনিয়নের ধলিরছড়ায়। জায়গার পরিমাণ ১৯ দশমিক ১ একর, যদিও বাফুফে পেয়েছে ১৫ একরের মতো।