তিন প্যানেলই চায় ই–ক্যাব ও সদস্যদের উন্নয়ন
১৮ জুন অনুষ্ঠেয় ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ই-ক্যাব) ২০২২-২৪ মেয়াদের নির্বাচনে অগ্রগামী, দ্য চেঞ্জ মেকারস ও ঐক্য নামে তিনটি প্যানেলে ২৭ জনসহ মোট ৩১ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ই-কমার্স খাতের এই সংগঠনের ভোটার সংখ্যা ৭৯৫। ভোটারদের কাছে নিজেদের প্রতিশ্রুতি তুলে ধরতে তিনটি প্যানেলই নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছে। নির্বাচিত হলে প্রতিটি প্যানলেই সংগঠনের সদস্যদের জন্য কাজ করতে চায়। সবার ইশতেহারেই দেশের ই–কমার্স খাতের উন্নয়নের কথা বলা হয়েছে।
ইশতেহারে সাতটি বিষয়ে অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলছে অগ্রগামী প্যানেল। ই-ক্যাবের জন্য স্বতন্ত্র সচিবালয় প্রতিষ্ঠা, সদস্যদের অগ্রাধিকার সেবার নীতি কার্যকর, সদস্যদের দক্ষতা উন্নয়নে নিয়মিত নির্দিষ্ট বিষয়ে কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়নের পাশাপাশি নতুন উদ্যোগ বা স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠানগুলোর উন্নয়নে বিনিয়োগ ও পরামর্শসেবা দিতে চায় তারা। উদ্যোক্তাবান্ধব নীতি তৈরির জন্য সরকারকে সহযোগিতার পাশাপাশি নারী উদ্যোক্তাদের উন্নয়নে বাস্তবমুখী বিভিন্ন পদক্ষেপ নেবে। দেশি ই-কমার্সকে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে দিতেও কাজ করবে।
অগ্রগামী প্যানেলের সদস্য মোহাম্মাদ আবদুল ওয়াহেদ বলেন, ‘আমরা ই–কমার্স খাতের বাজার পাঁচ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার পাশাপাশি এ খাতে ১০ লাখ নতুন কর্মসংস্থান তৈরি করতে চাই। সচিবালয় ও সহায়তা কেন্দ্র স্থাপন, সদস্যদের মানোন্নয়ন, স্মার্টআপ প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য ফান্ড তৈরির পাশাপাশি ই–কমার্স খাতের উন্নয়নে সরকারের সঙ্গে বিভিন্ন নীতিমালা তৈরিতেও কাজ করব।’
দ্য চেঞ্জ মেকার্স প্যানেলের ইশতেহারে কার্যালয়ের মান উন্নত করার পাশাপাশি ই-ক্যাব শক্তিশালী করতে নির্বাহী পরিচালক বা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। সদস্যদের ব্যাংক থেকে জামানতবিহীন ঋণ বা বিনিয়োগ সংগ্রহের দিকনির্দেশনা দেওয়ার পাশাপাশি আয়কর ও ট্যাক্স বিষয়েও সহায়তা করতে চায় তারা। ব্যবসার মানোন্নয়নে সদস্যদের প্রশিক্ষণ ও পরামর্শসেবা দিতে ইনকিউবেশন সেন্টার চালুর পাশাপাশি ই-কমার্স এক্সপোর আয়োজন করবে প্যানেলটি। সরকারি কেনাকাটায় ১ শতাংশ ই-ক্যাব সদস্যদের জন্য বরাদ্দ রাখতে কাজ করারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তারা।
নিজেদের কাজের পরিকল্পনা তুলে ধরে দ্য চেঞ্জ মেকারস প্যানেলের সদস্য বিপ্লব ঘোষ বলেন, ‘আমরা দুই বছর সময়কে কয়েক ভাগে ভাগ করে ই–ক্যাব এবং সদস্যদের উন্নয়নে কাজ করার পরিকল্পনা করেছি। এ জন্য ১০০ দিনের মধ্যেই আমরা সদস্যদের প্রশিক্ষণ ও ব্যবসা উন্নয়নের জন্য ইনকিউবেশন সেন্টার স্থাপন করব। পর্যায়ক্রমে সদস্যদের জন্য বিভিন্ন সচেতনরতামূলক কার্যক্রম গ্রহণের পাশাপাশি আয়কর ও ট্যাক্স নিয়েও সহায়তা কেন্দ্র চালু করা হবে।’
ঐক্য প্যানেলের ইশতেহারে ই-ক্যাবের নিজস্ব কার্যালয় চালুসহ ই-কমার্সের বাজার সম্প্রসারণ, উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগ, ই-কমার্সবান্ধব বাজেট ও নীতি প্রণয়নে জোরালো ভূমিকা রাখার কথা বলা হয়েছে। এ ছাড়া ক্ষুদ্র ও নারী উদ্যোক্তাদের উন্নয়ন, উদ্যোক্তা সুরক্ষা ও বিনিয়োগ, সেবাভিত্তিক ই-কমার্স খাতের উন্নয়ন, ই-কমার্সবান্ধব নীতিমালা বাস্তবায়ন, বিদেশে ই-কমার্সের বাজার সম্প্রসারণসহ বিভিন্ন উদ্যোগ বাস্তবায়ন করতে চায় প্যানেলটি। দেশের ই-কমার্স খাতের উন্নয়নে উদ্যোক্তা ও গ্রাহকদের জন্য সার্বক্ষণিক কল সেন্টার চালুর পরিকল্পনা রয়েছে তাদের।
এ বিষয়ে ঐক্য প্যানেলের সদস্য আবদুল আজিজ বলেন, ‘আমরা ই–ক্যাবকে সদস্যবান্ধব সংগঠন হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। এ জন্য প্রথমেই ই–ক্যাবের জন্য স্থায়ী কার্যালয় চালুর উদ্যোগে নেওয়া হবে। ই-কমার্সের বাজার সম্প্রসারণ, উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগ, তথ্য ও প্রশিক্ষণপ্রাপ্তি সহজ করার পাশাপাশি উদ্যোক্তাবান্ধব নীতি প্রণয়নেও কাজ করব।’
Also Read: ই-ক্যাব নির্বাচনে ‘ঐক্য’ নামে প্যানেল
এই নির্বাচন পরিচালনা বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন আমিন হেলালী। বাকি সদস্যরা হচ্ছেন মো. আবদুর রাজ্জাক, এ এইচ এম বজলুর রহমান ও আবদুল আজিজ।