বজ্রপাত
বজ্রপাত

বজ্রপাতে ধ্বংস হচ্ছে বনাঞ্চল

বজ্রপাত খুব সাধারণ একটি প্রাকৃতিক ঘটনা। যদিও এই প্রাকৃতিক ঘটনার কারণে প্রতিবছরই অনেক মানুষের মৃত্যু হয়। বজ্রপাতকে বলা হয় প্রকৃতির সবচেয়ে শক্তিশালী শক্তির মধ্যে একটি। প্রাকৃতিক ঘটনা হলেও প্রতিবছর বিশ্বজুড়ে প্রায় ৩২ কোটি গাছ বজ্রপাতের আঘাতে উপড়ে পড়ে মারা যাচ্ছে বলে এক গবেষণায় জানিয়েছেন জার্মানির টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি অব মিউনিখের একদল বিজ্ঞানী। গবেষণার তথ্যমতে, বজ্রপাতের আঘাতে প্রতিবছর প্রায় ৩২ কোটি গাছ উপড়ে পড়ে মারা যাচ্ছে। এ ছাড়া বজ্রপাতের কারণে সৃষ্ট আগুনে আরও বেশি গাছ পুড়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটছে। বজ্রপাতে গাছের মৃত্যু গণনার জন্য প্রথমবারের মতো একটি মডেল তৈরি করা হয়েছে। সেই মডেল ব্যবহার করে এসব তথ্য জানা গেছে।

বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, জলবায়ু উষ্ণ হওয়ার কারণে বজ্রপাতের ঘটনা বাড়ছে। আর তাই প্রতিবছর অনুমানের চেয়েও বেশিসংখ্যক গাছের ক্ষতি হচ্ছে। বনের ওপর বজ্রপাতের প্রভাব বেশি পর্যবেক্ষণ করা হয় না বলে সঠিক কোনো তথ্য পাওয়া যায় না। যখন একটি গাছে বজ্রপাত আঘাত হানে তখন অভ্যন্তরীণ ক্ষতি বেশি হয়। অনেক গাছ টিকে থাকলেও টিস্যু পুড়ে গিয়ে ধীরে ধীরে মারা যায়। সেসব গাছের বাহ্যিক চিহ্ন বোঝা যায় না।

বিজ্ঞানী আন্দ্রেয়াস ক্রাউস বলেন, ‘আমরা বার্ষিক বজ্রপাতের ফলে কত গাছ মারা যায়, তা অনুমান করতে পেরেছি। একই সঙ্গে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চল শনাক্ত করা হয়েছে।’ বিশ্বব্যাপী কার্বন সঞ্চয় ও বন কাঠামোর ওপর বজ্রপাতের প্রভাবও মূল্যায়ন করা হয়েছে। আগামী দশকে বজ্রপাতের সংখ্যা বাড়বে। ভবিষ্যতে কানাডা, রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের কিছু নাতিশীতোষ্ণ ও বোরিয়াল অঞ্চলেও বজ্রপাত বেশি হবে।

গবেষণার তথ্যমতে, বজ্রপাতের আঘাতে গাছ মারা যাওয়ার পাশাপাশি কার্বন ভারসাম্যও নষ্ট হচ্ছে। বজ্রপাতের কারণে বেশির ভাগ গাছের ক্ষতি হচ্ছে গ্রীষ্মমণ্ডলীয় বনাঞ্চলে। এসব অঞ্চলে সারা বছর বেশ বজ্রপাত হয়ে থাকে। কঙ্গো অববাহিকা ও আমাজনের মতো জায়গায় বজ্রপাতের প্রভাব বেশি। গ্রীষ্মমণ্ডলীয় গাছও লম্বা হয় বলে আবার আঘাত পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।

সূত্র: আর্থ ডটকম