Thank you for trying Sticky AMP!!

কলকাতা হাইকোর্ট

কলকাতা হাইকোর্টের ঐতিহাসিক রায়ে প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিল

পশ্চিমবঙ্গে চলমান লোকসভা নির্বাচনের মধ্যেই কলকাতা হাইকোর্টের এক ঐতিহাসিক রায়ে ২০১৬ সালে নিয়োগ হওয়া ২৫ হাজার ৭৫৩ জনের চাকরি বাতিল করা হয়েছে। আজ সোমবার এ রায় দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে গঠিত হওয়া কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক ও বিচারপতি শাব্বর রশিদির নেতৃত্বে গড়া ডিভিশন বেঞ্চ।

২০১৬ সালে চাকরির জন্য ৩০ লাখ আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্য সরকার ঘুষের বিনিময়ে ও প্রার্থীদের উত্তরপত্র বা ওএমআর শিট জাল করে চারটি স্তরে চাকরি দেয়। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরে শিক্ষক বা শিক্ষিকা এবং গ্রুপ সি ও ডি শ্রেণিভুক্ত আবেদনকারীদের মধ্যে ২৫ হাজার ৭৫৩ জনের নিয়োগ দেয়। এই নিয়োগপ্রক্রিয়া ছিল সম্পূর্ণ জালজালিয়াতিতে ভরা।

অভিযোগ আছে, লাখ লাখ টাকার বিনিময়ে এই চাকরি বিক্রি করেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, শিক্ষা দপ্তরের কর্মকর্তা ও তৃণমূলের নেতারা। এরপর সিবিআইয়ের অভিযানে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বান্ধবীর বাসভবন থেকে উদ্ধার হয় ৫০ কোটি রুপি। এখন পার্থসহ শিক্ষা দপ্তরের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা ও তৃণমূলের নেতা কারাগারে। এই নিয়োগ দুর্নীতির মামলার তদন্ত করছে সিবিআই।

এর ফলে চাকরিপ্রার্থীদের মধ্যে যাঁরা মেধাতালিকায় উত্তীর্ণ হন, তাঁদের বঞ্চিত করে চাকরি দেওয়া হয় ঘুষের বিনিময়ে। এরই প্রতিবাদে মামলা শুরু হয় কলকাতা হাইকোর্টে। হাইকোর্টের তৎকালীন বিচারপতি অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় এই নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় বেশ কিছু অযোগ্য প্রার্থীর চাকরি বাতিলও করেন।

এই নিয়ে রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টের শরণাপন্ন হলে সুপ্রিম কোর্ট রাজ্য সরকারের আবেদন খারিজ করে একটি ডিভিশন বেঞ্চ গঠন করেন। সব নিয়োগ মামলাকে একত্র করে বিচার করার নির্দেশ দেওয়া হয়। সাড়ে তিন মাস ওই ডিভিশন বেঞ্চ এ মামলার শুনানি শেষে আজ ২৭১ পাতার এক নির্দেশে জানিয়ে দেন, জালিয়াতি করে চাকরি পাওয়া ২৫ হাজার ৭৫৩ জনের চাকরি অবৈধ। পাশাপাশি আরও নির্দেশ দেন, দ্রুত চাকরির প্রক্রিয়া শুরু করার। ওই নির্দেশ অনুযায়ী, যাঁরা চাকরি পেয়েছিলেন, তাঁদের ১২ শতাংশ সুদসহ আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে ওই টাকা ফেরত দিতে হবে। এ নিয়ে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকেও নির্দেশ দেন।

রায়ে শুধু এক শিক্ষকের চাকরি বহাল রাখা হয়েছে। তাঁর নাম সোমা দাস। তিনি ক্যানসারে আক্রান্ত। তাই মানবিক বিবেচনায় তাঁর চাকরি বহাল রেখেছেন আদালত।