
শাটডাউনের মধ্যে অসুস্থতার অজুহাত দেখিয়ে কাজে না আসা এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলারদের বেতন কেটে নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি কাজে অনুপস্থিত বিমানবন্দর কর্মীদের ‘দেশদ্রোহী’ বলেছেন।
গতকাল সোমবার নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে এক পোস্টে ট্রাম্প এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলারদের হুমকি দিয়ে বলেন, যাঁরা কাজে ফিরবেন না তাঁদের বেতন উল্লেখযোগ্যভাবে কেটে নেওয়া হবে।
পোস্টে প্রেসিডেন্ট আরও লেখেন, ‘সব এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলারকে অবশ্যই কাজে ফিরতে হবে, এখনই।’
সোমবার রাতে মার্কিন কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটে একটি সমঝোতা বিল চূড়ান্ত অনুমোদন পেয়েছে। এখন এই বিল পাঠানো হবে প্রতিনিধি পরিষদে। সিনেটের মতো মার্কিন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদও রিপাবলিকান অধ্যুষিত।
ট্রাম্প আরও বলেন, যাঁরা শাটডাউনের সময়ে ছুটি নেননি, তাঁদের জন্য তিনি ১০ হাজার ডলার বোনাস দেওয়ার সুপারিশ করছেন এবং তাঁদেরকে ‘মহান দেশপ্রেমিক’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
শাটডাউনে কর্মীসংকটে যুক্তরাষ্ট্রে গতকাল অতিরিক্ত আরও ২ হাজারের বেশি ফ্লাইট বাতিল করতে হয়েছে। এদিন প্রায় ৭ হাজার ১০০ ফ্লাইট যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবন্দরগুলো থেকে দেরিতে ছেড়ে গেছে। উড়োজাহাজ ট্র্যাকিং ওয়েবসাইট ‘ফ্লাইটওয়্যার’ এ তথ্য জানিয়েছে।
এদিকে ট্রাম্প দেশদ্রোহী আখ্যা দিয়ে বেতন কেটে নেওয়ার হুমকি দিলেও ন্যাশনাল এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলারস অ্যাসোসিয়েশন (এনএটিসিএ) শ্রমিক ইউনিয়ন তাদের যেসব সদস্য বেতন ছাড়াই দিনের পর দিন কাজ করে যাচ্ছেন তাঁদের ‘নেপথ্যের নায়ক’ বলে বর্ণনা করেছে।
এনএটিসিএ এক বিবৃতিতে কংগ্রেসের প্রতি অবিলম্বে অচলাবস্থা শেষ করার আহ্বানও জানিয়ে বলেছে, ‘যথেষ্ট হয়েছে।’
সরকারে শাটডাউন শুরুর আগে থেকেই কর্মীসংকটে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান চলাচল ব্যবস্থা চাপের মধ্যে ছিল। সামনেই ‘থ্যাংক্সগিভিং ডে’। ছুটির এ সময়ে যুক্তরাষ্ট্রে বহু মানুষ যাতায়াত করেন। যাত্রীদের চাপ নিয়ন্ত্রণে বিমানবন্দরগুলোকে এখন হিমশিম খেতে হচ্ছে।
গত ১ অক্টোবর থেকে যুক্তরাষ্ট্র সরকারে এই শাটডাউন শুরু হয়। তারপর থেকে দেশটির ১০ লাখের বেশি ফেডারেল কর্মী বেতন পাচ্ছেন না। সরকারি সুযোগ-সুবিধা ও পরিষেবা বিঘ্নিত হওয়ার হার ক্রমশ বাড়ছে।
বিশেষ করে গত কয়েক দিনে উড়োজাহাজ চলাচলের ওপর মারাত্মক প্রভাব পড়েছে। প্রতিদিন গড়ে এক হাজারের বেশি ফ্লাইট বাতিল হচ্ছে। এ কারণে এই অচলাবস্থার অবসানে রাজনৈতিক চাপ বাড়ছে।
সব এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলারকে অবশ্যই কাজে ফিরতে হবে, এখনই!!!ডোনাল্ড ট্রাম্প, মার্কিন প্রেসিডেন্ট
এই অচলাবস্থার অবসানে সোমবার রাতে একটি গুরুত্বপূর্ণ সমঝোতায় উপনীত হয়েছেন মার্কিন সিনেটররা। সোমবার ছিল শাটডাউনের ৪১তম দিন।
সোমবার রাতে মার্কিন কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটে একটি সমঝোতা বিল চূড়ান্ত অনুমোদন পেয়েছে। এখন এই বিল পাঠানো হবে প্রতিনিধি পরিষদে। সিনেটের মতো মার্কিন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদও রিপাবলিকান অধ্যুষিত।
সমঝোতা বিল পাস নিয়ে আগামীকাল বুধবারের মধ্যে প্রতিনিধি পরিষদে ভোট হতে পারে। সেখানে এই সমঝোতা বাজেট প্রস্তাব পাস হলে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য তা প্রেসিডেন্টে ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে পাঠানো হবে।