প্রিটোরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের সামনে দক্ষিণ আফ্রিকার শ্বেতাঙ্গরা। ছবিটি ১৫ ফেব্রুয়ারি তোলা
প্রিটোরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের সামনে দক্ষিণ আফ্রিকার শ্বেতাঙ্গরা। ছবিটি ১৫ ফেব্রুয়ারি তোলা

৭ হাজার শরণার্থীকে ঢুকতে দেবেন ট্রাম্প, দক্ষিণ আফ্রিকার শ্বেতাঙ্গদের অগ্রাধিকার

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০২৬ অর্থবছরের জন্য দেশটির ইতিহাসে সর্বনিম্ন শরণার্থী গ্রহণের সীমা ঘোষণা করেছেন। নতুন ঘোষণায় মাত্র সাড়ে সাত হাজার শরণার্থীকে সে দেশে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে।

প্রেসিডেন্টের কার্যালয় থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এক নথিতে এ ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। তবে নথিতে তারিখ উল্লেখ করা হয়েছে ৩০ সেপ্টেম্বর।
ট্রাম্প প্রশাসনের এ সিদ্ধান্তে কার্যত বিশ্বের কোটি কোটি বাস্তুচ্যুত মানুষের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের দরজা বন্ধ হচ্ছে। নতুন কোটা অনুযায়ী, দক্ষিণ আফ্রিকার শ্বেতাঙ্গদের শরণার্থী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। কারণ, ট্রাম্পের দাবি, তাঁরা জাতিগত বৈষম্যের শিকার।

যদিও দক্ষিণ আফ্রিকার সরকার ও দেশটির বিভিন্ন সম্প্রদায়ের শীর্ষ নেতারা ট্রাম্পের এ দাবিকে ভিত্তিহীন বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন।

নতুন সিদ্ধান্তে যুক্তরাষ্ট্রের শরণার্থী পুনর্বাসন কার্যক্রমেও বড় পরিবর্তন আসছে। এখন থেকে সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার পরিবর্তে এ–সংক্রান্ত সব তহবিল ও দায়িত্ব পালন করবে স্বাস্থ্য ও মানবসেবা বিভাগের অধীন থাকা শরণার্থী পুনর্বাসন দপ্তর।

সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসনের শেষ বছরে ১ লাখ ২৫ হাজার শরণার্থী যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের অনুমতি পেয়েছিলেন, কিন্তু ট্রাম্প সেটি বিশাল ব্যবধানে কমিয়ে এনেছেন।

জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে বিশ্বজুড়ে শরণার্থী ৪ কোটি ২৭ লাখের বেশি মানুষ।

মানবাধিকার ও অভিবাসন সংস্থাগুলো ট্রাম্পের এ সিদ্ধান্তকে ‘রাজনৈতিক ও বৈষম্যমূলক’ বলে মন্তব্য করেছে। আমেরিকান ইমিগ্রেশন কাউন্সিলের সিনিয়র ফেলো অ্যারন রাইকলিন-মেলনিক বলেছেন, ট্রাম্প প্রশাসন এখন এমন লোকজনকে শরণার্থী বলছে, যাঁরা আন্তর্জাতিক সংজ্ঞা অনুযায়ী শরণার্থী নন। এটি কার্যত শ্বেতাঙ্গদের অভিবাসনের নতুন অজুহাত।

ইন্টারন্যাশনাল রিফিউজি অ্যাসিসট্যান্স প্রজেক্ট অভিযোগ করেছে, ট্রাম্প কংগ্রেসের সঙ্গে বাধ্যতামূলক পরামর্শ ছাড়াই এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সংস্থার প্রেসিডেন্ট শরিফ আলী বলেন, এ সিদ্ধান্তে প্রমাণিত হয় যে যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বজুড়ে বাস্তুচ্যুত মানুষের প্রতি নিজের দায়িত্ব থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে।

দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই ট্রাম্প বিশেষভাবে দক্ষিণ আফ্রিকার শ্বেতাঙ্গদের পক্ষে অবস্থান নিচ্ছেন। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে তিনি এক নির্বাহী আদেশ জারি করে দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য নির্ধারিত সাহায্য কমিয়ে দেন। অভিযোগ করেন, দেশটি শ্বেতাঙ্গদের প্রতি ‘অন্যায্য আচরণ’ করছে।

ট্রাম্পের ওই অবস্থানের পর গত মে মাসে প্রথমবারের মতো দক্ষিণ আফ্রিকার একদল শ্বেতাঙ্গ নাগরিক নতুন কর্মসূচির আওতায় যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছান।