এফডিসি কমপ্লেক্স কবে ‘মাথা তুলে’ দাঁড়াবে

রাজধানীর তেজগাঁওয়ে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএফডিসি) প্রধান ফটক। ছবিটি সম্প্রতি তোলাছবি: মানসুরা হোসাইন

অর্থসংকটে কর্মীদের নিয়মিত বেতন-ভাতা দিতে হিমশিম খাচ্ছে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফডিসি)।

২০১৮ সাল থেকে বলা হচ্ছে, নির্মাণাধীন এফডিসি কমপ্লেক্স ‘মাথা তুলে’ দাঁড়ালেই অর্থসংকটসহ প্রতিষ্ঠানটির সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।

তবে দফায় দফায় প্রকল্পের মেয়াদ আর ব্যয় বাড়লেও এফডিসি কমপ্লেক্সের নির্মাণকাজ এখনো শেষ হয়নি। সবশেষ ২০২৬ সালের জুন মেয়াদের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়া নিয়ে এফডিসির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সন্দেহ-সংশয়ে আছেন।

এফডিসির কর্মচারীদের বেতনের পেছনে মাসে খরচ ৯৭ লাখ টাকা। অন্যান্য খরচ মিলে ব্যয় দাঁড়ায় ১ কোটি ১০ লাখ টাকার কাছাকাছি।

আরও পড়ুন

অন্যদিকে প্রতিষ্ঠানটির আয় মাসে গড়ে ২৫ লাখ টাকা। এফডিসির কর্মচারীরা অবসরে যাচ্ছেন, কেউ মারা যাচ্ছেন—তাঁদের পাওনা ভাতা যোগ হচ্ছে খরচের খাতায়।

সবশেষ গত ২২ এপ্রিল ২৩ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর অবসরোত্তর ভাতার ৩ কোটি ৫৮ লাখ টাকার চেক হস্তান্তর করা হয়।

অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারীর অপরিশোধিত আনুতোষিক ও ছুটি নগদায়নে কর্মীর পাওনার পরিমাণ প্রায় ১৪ কোটি টাকায় গিয়ে ঠেকেছে। পাওনার এই অংক প্রতিনিয়ত বড় হচ্ছে।

আরও পড়ুন
এফডিসির স্থায়ী আয়ের উৎস তৈরিসহ চলচ্চিত্রশিল্পকে গতিশীল করতে তেজগাঁওয়ে এফডিসি কমপ্লেক্স নির্মাণের আলোচনা শুরু হয় ২০১৮ সালে। সে বছরের অক্টোবরে কমপ্লেক্স নির্মাণ প্রকল্প অনুমোদন দেয় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)।

গত ৮ এপ্রিল তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম এফডিসি পরিদর্শনে এসে প্রতিষ্ঠানটিকে ‘কম্পোজিট ফিল্ম সিটি’ বানানোর কথা বলেন। এফডিসির অনেক সম্ভাবনা আছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, এফডিসি লাভজনক প্রতিষ্ঠান হলে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা থেকে শুরু করে প্রণোদনা—সবই এখান থেকে দেওয়া সম্ভব হবে।

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে এফডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব পান মাসুমা রহমান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, কর্মীরা নিয়মিত বেতন-ভাতা পান না। তাই তাঁরা কাজ করার উৎসাহ পান না। সরকারের কাছ থেকে চেয়ে চেয়ে ঋণ করে কর্মীদের বেতন-ভাতা দিতে হয়।

আরও পড়ুন
নির্মাণাধীন এফডিসি কমপ্লেক্স। ছবিটি সম্প্রতি তোলা
ছবি: মানসুরা হোসাইন

আয় বাড়ানো যাচ্ছে না

এফডিসির অনুমোদিত জনবল ৫৯১ জন। বর্তমানে কর্মরত ১৮৮ জন। গত এপ্রিলে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টাকে একটি প্রতিবেদন দেয় এফডিসি। এতে উল্লেখ করা হয়, প্রতিষ্ঠানটির ২০২৫-২৬ অর্থবছরে বাজেটঘাটতি ২০ কোটি ৫৩ লাখ টাকা।

কর্মীদের বেতন, অবসরোত্তর সুবিধাসহ প্রতিষ্ঠানের আধুনিকায়নের জন্য ১১৮ কোটি ৭ লাখ টাকা অনুদান/থোক বরাদ্দ দিতে সরকারের কাছে আবেদন জানায় এফডিসি।

রাজধানীর তেজগাঁও এলাকায় এফডিসি অবস্থিত। এখানে এফডিসির ৭ দশমিক ৬৩ একর, ভাষানটেকে ১ একর, গাজীপুরের বাংলাদেশ ফিল্ম সিটিতে ১০৫ দশমিক ৫৭৭ একর জমি আছে। চট্টগ্রামে সরকার থেকে ১ দশমিক ৩৭ একর জমি পেলেও জায়গাটিকে শুটিং উপযোগী করা হয়নি।

আরও পড়ুন
প্রকল্প পরিচালক ও ঠিকাদার নিয়োগে বিলম্ব, ঘন ঘন প্রকল্প পরিচালক বদল, প্রকল্পের জন্য একজন স্থায়ী প্রকল্প পরিচালক নিয়োগ না হওয়া, করোনা মহামারি—এসব কারণে নির্দিষ্ট মেয়াদে কাজ শেষ হয়নি। গত আগস্ট পর্যন্ত প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি ৪৮ দশমিক ৯১ শতাংশ। এখন পর্যন্ত পাঁচজন প্রকল্প পরিচালক পরিবর্তন হয়েছে।
মো. মনিরুজ্জামান খান, প্রকল্পের অতিরিক্ত পরিচালক

এফডিসির ৬টি ফ্লোর, ডিজিটাল ভবন, শব্দ ভবন, অফিস ভবন, ঝরনা স্পট, বাগান, খোলা জায়গা, করিডোর, ১০টি মেকআপ রুম চলচ্চিত্রনির্মাতারা ভাড়ায় ব্যবহার করেন।

এফডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুমা রহমান প্রথম আলোকে বলেন, প্রতিষ্ঠানটিকে কর্মমুখর করতে ভাড়া কমিয়ে শুটিংয়ের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ২০১৬ সালের পর প্রতিষ্ঠানটিতে নতুন কোনো যন্ত্রপাতি কেনা হয়নি। ফলে নির্মাতারা পুরোনো যন্ত্রপাতি ভাড়া নিতে চান না। গাজীপুরের ফিল্ম সিটিতে শুটিং করতেও অনেকে আগ্রহী হন না। ফলে প্রতিষ্ঠানের আয় বাড়ানো সম্ভব হচ্ছে না।

আরও পড়ুন

‘মৃতপ্রায়’ প্রতিষ্ঠান

অ্যানালগ যুগের ৩৫ মিলিমিটার ফরম্যাটের বিভিন্ন ধরনের কাঁচা ফিল্ম—যেমন সাউন্ড নেগেটিভ, পিকচার নেগেটিভ ও পজিটিভ আমদানি করে চলচ্চিত্র নির্মাতাদের কাছে বিক্রি করার একচেটিয়া প্রতিষ্ঠান ছিল এফডিসি। একসময় লাভজনক ছিল প্রতিষ্ঠানটি। এখন এফডিসিকে ‘মৃতপ্রায়’ বলছেন প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকা আধা স্বায়ত্তশাসিত এই সরকারি সংস্থাকে নিজ আয়ে চলতে হয়। এফডিসির তথ্য অনুসারে, ২০০৬ সাল থেকে প্রতিষ্ঠানটি লোকসান গুনতে শুরু করে।

আরও পড়ুন
গত বছরের জুনে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ এফডিসি কমপ্লেক্স নির্মাণ প্রকল্পের নিবিড় পরিবীক্ষণ প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এতে বলা হয়, প্রকল্পের অগ্রগতি মোটেই সন্তোষজনক নয়।

২০১২ সালে জাজ মাল্টিমিডিয়ার হাত ধরে দেশে ডিজিটাল সিনেমার যাত্রা শুরু হয়। এফডিসির কর্মকর্তারা বলছেন, মূলত এরপরই অ্যানালগ (৩৫ মিমি ফরম্যাট) প্রযুক্তির এফডিসিতে কাজের সংখ্যা দ্রুত কমতে থাকে। ২০১৫ সাল থেকে কর্মচারীদের বেতন পরিশোধে প্রায় পুরোপুরি অনুদানের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে প্রতিষ্ঠানটি। ৯ সেপ্টেম্বর এফডিসির জায়গাসহ সম্পদের বিকল্প ব্যবহার এবং কর্মীদের ‘গোল্ডেন হ্যান্ডশেক’ নিয়ে সচিবালয়ে বৈঠক ডেকেছিল মন্ত্রণালয়।

আরও পড়ুন

এফডিসি কমপ্লেক্স

২০৩০ সালের মধ্যে এফডিসিকে বিশ্বের অন্যতম সেরা চলচ্চিত্র কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে প্রতিষ্ঠানটি। প্রতিষ্ঠানের স্থায়ী আয়ের উৎস তৈরিসহ চলচ্চিত্রশিল্পকে গতিশীল করতে তেজগাঁওয়ে এফডিসি কমপ্লেক্স নির্মাণের আলোচনা শুরু হয় ২০১৮ সালে। সে বছরের অক্টোবরে কমপ্লেক্স নির্মাণ প্রকল্প অনুমোদন দেয় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)।

কমপ্লেক্সের নির্মাণকাজ কবে শেষ হবে, সে আশায় আমরা বসে আছি। কমপ্লেক্স হলে প্রতিষ্ঠানের আয়টা বাড়বে।
মাসুমা রহমান, এফডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক

২০১৮ সালের অক্টোবর থেকে ২০২১ সালের ডিসেম্বর মেয়াদে এফডিসি কমপ্লেক্স নির্মাণ প্রকল্পটি অনুমোদিত হয়েছিল। তবে কমপ্লেক্সের নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০২২ সালে। ২০২৩ সালের আগস্টে কমপ্লেক্সের ভিত্তিপ্রস্তর আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়। কমপ্লেক্সের মূল ভবন হবে ১২ তলা। ১০ তলার ছাদ ঢালাই হবে ৩০ সেপ্টেম্বর।

কাজ শেষ না হওয়ায় গত বছরের জুন পর্যন্ত প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছিল। এরপর ২০২৬ সালের জুন পর্যন্ত প্রকল্পের মেয়াদ আরেক দফা বাড়ানো হয়।

তথ্য মন্ত্রণালয়ের প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে এফডিসি। এফডিসি সূত্র বলছে, ইতিমধ্যে প্রকল্পের ব্যয় ৩২২ কোটি ৭৭ লাখ ৮৬ হাজার টাকা থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৬৫ কোটি ৫১ লাখ ৫৩ হাজার টাকা।

আরও পড়ুন

কমপ্লেক্স কী থাকবে

এফডিসি কমপ্লেক্সর ১টি সিনেপ্লেক্সে তিনটি স্ক্রিন বা হল থাকবে। এ ছাড়া থাকবে—১টি সুইমিং পুল। বেসমেন্ট ও নিচ তলায় প্রায় ৩০০টি গাড়ি পার্কিং। ৩টি শুটিং ফ্লোর,৬টি মেকআপ রুম। চলচ্চিত্র অঙ্গনের লোকজন ও সাধারণের জন্য পৃথক এন্ট্রি লবি ও রিসেপশন। স্যুভেনির শপ, ফুড কোর্ট। জাদুঘর ও লাইব্রেরি। ডান্সিং ফ্লোর, নাট্যমঞ্চ। চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টদের জন্য শিশুদিবাযত্ন কেন্দ্র। অটিস্টিক ও বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী শিশুদের কর্নার। ব্যায়ামাগার। বলরুম বা মাল্টিপারপাস হল। ভিএফএক্স স্টুডিওসহ পোস্ট–প্রোডাকশনের আধুনিক সুবিধা। দেশি-বিদেশি চলচ্চিত্রনির্মাতা, কলাকুশলী ও পর্যটকদের জন্য আবাসিক হোটেল। মিটিং রুম। জুস ও কফি বার, রেস্টুরেন্ট। প্রদর্শনীর জায়গা। ঝরনা। শিশুদের খেলার জায়গা। প্রবীণদের গল্প করার জায়গা। সেমিনার হল। বাগানসহ আরও নানা ব্যবস্থা। অফিসসহ ভবনের কমপ্লেক্সের বিভিন্ন অংশ বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের কাছে ভাড়া দেওয়া হবে।

আরও পড়ুন
এফডিসির ভেতরে থাকা পুরোনো ভবন। ছবিটি সম্প্রতি তোলা
ছবি: মানসুরা হোসাইন

এফডিসির পরিচালক (কারিগরি ও প্রকৌশলী) মামুনূর রশীদ প্রথম আলোকে বলেন, কমপ্লেক্সটি মাথা তুলে দাঁড়াতে পারলে এখান থেকে বছরে ৫২ কোটি টাকা আয় হবে বলে প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

২১ সেপ্টেম্বর এফডিসিতে গিয়ে প্রতিষ্ঠানটিতে কর্মরতদের সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। তাঁরা বলেন, আপাতত গত মাস পর্যন্ত বেতন পেয়েছেন। তবে আবার বেতন-ভাতা আটকে যাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে আছেন। কমপ্লেক্স নিয়ে সবাই স্বপ্ন দেখছেন। কিন্তু সেই স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নেওয়ার জন্য তো আগে কমপ্লেক্স নির্মাণের কাজ শেষ হতে হবে। তারপর কমপ্লেক্স থেকে আয়ের বিষয়টি আসবে। ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ হবে কি না, তা নিয়ে তাঁরা সন্দিহান।

আরও পড়ুন

কাজের গতি কেন মন্থর

প্রকল্পটির অতিরিক্ত পরিচালক মো. মনিরুজ্জামান খান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, প্রকল্প পরিচালক ও ঠিকাদার নিয়োগে বিলম্ব, ঘন ঘন প্রকল্প পরিচালক বদল, প্রকল্পের জন্য একজন স্থায়ী প্রকল্প পরিচালক নিয়োগ না হওয়া, করোনা মহামারি—এসব কারণে নির্দিষ্ট মেয়াদে কাজ শেষ হয়নি। গত আগস্ট পর্যন্ত প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি ৪৮ দশমিক ৯১ শতাংশ। এখন পর্যন্ত পাঁচজন প্রকল্প পরিচালক পরিবর্তন হয়েছে।

সূত্র জানায়, প্রকল্প শেষ না হওয়া পর্যন্ত একই খরচে কাজ শেষ করবে—এই শর্তে নির্মাণকাজের জন্য নির্বাচিত হয় মেসার্স বিশ্বাস ট্রেডিং অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন। তবে চুক্তিতে মূল্য সমন্বয় সম্পর্কিত অতিরিক্ত একটি শর্ত যুক্ত করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি। এই শর্ত সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির (সিসিজিপি) অনুমোদিত দলিলে ছিল না। নির্ধারিত সময়ে প্রকল্প শেষ হয়নি, অন্যদিকে সবকিছুর দাম বেড়ে যায়। মূল্য সমন্বয়ের জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান প্রকল্প কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আদালতে যায়। রায় আসে এফডিসির পক্ষে। এতেও কাজের গতি মন্থর হয়।

আরও পড়ুন

গত বছরের জুনে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ এফডিসি কমপ্লেক্স নির্মাণ প্রকল্পের নিবিড় পরিবীক্ষণ প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এতে বলা হয়, প্রকল্পের অগ্রগতি মোটেই সন্তোষজনক নয়।

এফডিসির নিজস্ব ৯৪ কাঠা জমিতে সরকারের অর্থায়নে প্রকল্পটিতে অর্থছাড়ে বিলম্ব, প্রকল্পের কার্যক্রম সুনির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত না করা, প্রয়োজন অনুযায়ী জনবল নিয়োগে ব্যর্থতা, বাৎসরিক কর্মপরিকল্পনা প্রস্তুত ও বাস্তবায়ন না করা, নিয়মিত নজরদারি না করা, উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবে (ডিপিপি) ভবনের পূর্ণাঙ্গ ও চূড়ান্ত নকশা সংযোজিত না থাকার মতো বিষয়গুলোকে দুর্বল দিক হিসেবে চিহ্নিত করা হয় প্রতিবেদনে।

আরও পড়ুন
এফডিসির ভেতরের দৃশ্য। ছবিটি সম্প্রতি তোলা
ছবি: মানসুরা হোসাইন

প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২২-২৩ অর্থবছর ছাড়া আর কোনো বছরে প্রকল্পটিতে পুরো অর্থ ছাড় করা হয়নি। ছাড় করা অর্থের পুরোটা খরচ হয়নি। ডিপিপি অনুযায়ী, তৃতীয় পে-গ্রেডের একজন ইঞ্জিনিয়ারের প্রকল্প পরিচালক হওয়ার কথা, তবে তা হয়নি। কোনো প্রকল্প পরিচালকের মেয়াদ ছিল তিন মাস, কারও পাঁচ মাস, কেউ এক বছর বা তিন বছর, তা ছাড়া নির্মাণকাজে বিভিন্ন গ্রেডের রডের মিশ্রণ ঘটানো হয়েছে, যা গ্রহণযোগ্য না। গভীর নলকূপ নির্মাণ করতে গিয়ে প্রকল্পের একাংশের কাজ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এফডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুমা রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘কমপ্লেক্সের নির্মাণকাজ কবে শেষ হবে, সে আশায় আমরা বসে আছি। কমপ্লেক্স হলে প্রতিষ্ঠানের আয়টা বাড়বে।’