
বায়ুদূষণ রোধে নাগরিকদের সম্পৃক্ত করতে নতুন উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। কোথাও বর্জ্য পোড়ানোর দৃশ্য চোখে পড়লে তার ছবি তুলে পাঠালেই মিলতে পারে পুরস্কার—এমন ঘোষণা দিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়।
আজ মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে মন্ত্রণালয়টি।
বায়ুদূষণে বিশ্বের কয়েকটি শীর্ষ দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান নিয়মিত ঘটনা। শীতকালে শুকনা মৌসুমে বায়ুদূষণের তীব্রতা বাড়ে। এমন পরিস্থিতিতে সাধারণ নাগরিকেরা কোথাও বর্জ্য পোড়াচ্ছে এমন ছবি তুলে মন্ত্রণালয়ে পাঠালে সরকার যাতে ব্যবস্থা নিতে পারে সেই লক্ষ্যে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে কোথাও বর্জ্য পোড়ানোর ঘটনা দেখা গেলে সেই ছবি climatechange2@moef.gov.bd ঠিকানায় ই-মেইলে পাঠাতে অনুরোধ জানানো হয়েছে। ছবির সঙ্গে প্রেরকের নাম, মুঠোফোন নম্বর, ঘটনার স্থান, এলাকার ঠিকানা ও সময় উল্লেখ করতে হবে।
প্রতি মাসে প্রাপ্ত ছবিগুলো যাচাই-বাছাই করে সেরা ১০টি ছবি নির্বাচন করা হবে। নির্বাচিতদের জন্য থাকবে উপযুক্ত পুরস্কার।
বিজ্ঞপ্তিতে এই উদ্যোগে নাগরিকদের সক্রিয় অংশগ্রহণ বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হবে বলে আশা করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের নভেম্বরে প্রকাশিত বিশ্বব্যাংকের ‘ক্লিয়ারিং দ্য এয়ার: অ্যাড্রেসিং বাংলাদেশ’স এয়ার পলিউশন ক্রাইসিস’ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার বায়ুদূষণে উন্মুক্ত স্থানে বর্জ্য পোড়ানোর অবদান ১১ শতাংশ।
গত আগস্টে এয়ার কোয়ালিটি লাইফ ইনডেক্সে (একিউএলআই) ২০২৫ সালের হালনাগাদ বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের মানুষের প্রত্যাশিত আয়ুর জন্য সবচেয়ে বড় বাহ্যিক হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে বায়ুদূষণ। বায়ুদূষণের কারণে বাংলাদেশের মানুষের আয়ু গড়ে সাড়ে পাঁচ বছর কমছে।
প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৯৮ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে বাংলাদেশের বাতাসে পিএম ২.৫ কণার ঘনত্ব ৬৬ দশমিক ২ শতাংশ বেড়েছে। এর ফলে মানুষের আয়ু আরও ২ দশমিক ৪ বছর কমে গেছে। সবচেয়ে দূষিত বিভাগ ঢাকা ও চট্টগ্রামে ডব্লিউএইচওর নির্দেশিকা অনুযায়ী পিএম ২.৫ কণার ঘনত্ব কমানো গেলে মানুষের আয়ু ৬ দশমিক ২ বছর বৃদ্ধি পেত।
বায়ুদূষণ নিয়ে স্বাস্থ্যবিদেরা বলেন, বায়ুদূষণজনিত রোগে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শিশুরা। বেশ কয়েক বছর ধরে শ্বাসতন্ত্রের সমস্যা নিয়ে শিশুদের হাসপাতালে ভর্তির হার বেড়ে গেছে। বিশেষ করে নিউমোনিয়া, ব্রঙ্কাইটিস ও অ্যাজমা সমস্যা বেড়ে গেছে শিশুদের। যক্ষ্মার প্রবণতাও বাড়ছে।
আরও পড়ুন