Thank you for trying Sticky AMP!!

লুৎফুন নাহার করিম লাকী

‘দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছে’ বলেছিলেন ভিকারুননিসার শিক্ষক ও তাঁর মেয়ে

মা, মেয়ে ও ছেলে একসঙ্গেই ছিলেন। কাজ শেষে মা-মেয়ে ঢোকেন বেইলি রোডে বহুতল ভবনে থাকা ‘কাচ্চি ভাই’ নামের খাবারের দোকানে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা থাকায় ছেলে সেখানে না গিয়ে বাসায় ফেরেন। বহুতল ভবনটিতে আগুন লাগলে মা-মেয়ে পরিবারের কাছে জরুরি বার্তা পাঠান। দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছে জানিয়ে তাঁরা তাঁদের বাঁচানোর জন্য আকুতি জানিয়েছিলেন। এই আগুনের ঘটনায় মা-মেয়ে দুজনই মারা গেছেন।

Also Read: মর্গে বিবর্ণ পুতুলের মতো পড়ে থাকা মৃত শিশুটি কার

মা লুৎফুন নাহার করিম লাকী রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের মূল প্রভাতি শাখার জ্যেষ্ঠ শিক্ষক ছিলেন। তাঁর মেয়ে জান্নাতিন তাজরী নিকিতা বেসরকারি ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তেন। দুজনের মৃত্যুর তথ্যের সত্যতা প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কেকা রায় চৌধুরী।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে সাততলা ভবনটিতে আগুন লাগে। এই অগ্নিকাণ্ডে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৬ জনে।

Also Read: ‘আমার মেয়ে বলছিল, বাবা, জন্মদিনটা কি মৃত্যুদিন হয়ে যাচ্ছে?’

ভবনটির দ্বিতীয় তলায় ‘কাচ্চি ভাই’ নামের খাবারের দোকান রয়েছে। তৃতীয় তলায় একটি পোশাকের দোকান ছাড়া ওপরের তলাগুলোতে রয়েছে খাবারের দোকান। প্রতিদিন সন্ধ্যার পর থেকে খাবারের দোকানগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় হয়। অনেকেই পরিবার নিয়ে সেখানে খেতে যান।

পরিবারের বরাত দিয়ে আজ শুক্রবার ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কেকা রায় চৌধুরী জানান, লুৎফুন নাহারের এক মেয়ে, এক ছেয়ে। তাঁর স্বামীর নাম মহিউদ্দিন খোকন। তিনি ব্যবসায়ী। তাঁদের বাসা রাজধানীর সার্কিট হাউস রোড এলাকায়।

Also Read: ইতালি ফেরার আগে স্ত্রী–তিন সন্তানকে নিয়ে রেস্তোরাঁয় খেতে গিয়েছিলেন, আগুনে প্রাণ গেল সবার

কেকা রায় চৌধুরীর তথ্যমতে, লুৎফুন নাহার ২০১০ সাল থেকে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে শিক্ষকতা করে আসছিলেন। তিনি নবম-দশম শ্রেণিতে হিসাববিজ্ঞান পড়াতেন। তাঁর মেয়ে নিকিতা এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেরই সাবেক শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তেন। আর লুৎফুন নাহারের ছেলে এবার বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিচ্ছেন। আজ শুক্রবার তাঁর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার কথা।

কেকা রায় চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, পরিবারটির সঙ্গে কথা বলে তিনি জেনেছেন, গতকাল রাতে চিকিৎসক দেখানো শেষে লুৎফুন নাহার তাঁর দুই ছেলেমেয়ে নিয়ে ফিরছিলেন। ফেরার পথে লুৎফুন নাহার ও তাঁর মেয়ে বেইলি রোডের বহুতল ভবনটিতে থাকা ‘কাচ্চি ভাই’ নামের খাবারের দোকানে ঢোকেন। পরদিন সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা থাকায় ছেলে আর সেখানে যাননি। ছেলে বাসায় ফেরেন। পরে ভবনটিতে আগুন লাগলে মা-মেয়ে পরিবারের সদস্যদের কাছে বার্তা পাঠান। বার্তায় তাঁরা দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছে জানিয়ে বাঁচানোর জন্য আকুতি জানিয়েছিলেন।

শিক্ষক লুৎফুন নাহারের মৃত্যুতে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের পক্ষ থেকে শোক জানানো হয়েছে।

Also Read: সন্তানদের নিয়ে খেতে গিয়েছিলেন মা, মর্গে হলো তাঁদের ঠিকানা

Also Read: বেইলি রোডে আগুন: ঢাকা মেডিকেলে এখন পর্যন্ত ২৭ জনের লাশ শনাক্ত

Also Read: ঢাকার বেইলি রোডে বহুতল ভবনে ভয়াবহ আগুনে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৪৫ জন, এ পর্যন্ত যা জানা গেল

Also Read: বেইলি রোডে আগুন: পরিচয় মিলেছে ৪০ জনের, লাশ হস্তান্তর ৩৫ জনের

Also Read: চার বন্ধু মিলে বেইলি রোডে গিয়েছিলেন নাজমুল, তাঁর সন্ধান পাচ্ছেন না বাবা