১৮ বছরের মার্কিন তরুণ জ্যাক ইয়াদেগারি। ব্যর্থ হয়েছিলেন আইভি লিগে ভর্তিতে। তবে সাফল্যের পথে বাধা হতে পারেনি তা। কোটি ডলারের ব্যবসা দাঁড় করিয়েছেন নিজের গড়া প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান দিয়ে। এই তরুণ উদ্যোক্তার সাফল্যের গল্প এখন অনেকের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস।
মাত্র সাত বছর বয়সে কোডিং শেখা শুরু করেন ইয়াদেগারি। ১০ বছর বয়সেই তিনি অন্যদের কোড শেখাতে শুরু করেন এবং ঘণ্টাপ্রতি ৩০ ডলার আয় করতেন। স্কুলে পড়ার সময়ই তিনি তৈরি করেন একটি জনপ্রিয় ওয়েবসাইট—‘Totally Science’, যেখানে শিক্ষার্থীরা বিনা ডাউনলোডে ও রেজিস্ট্রেশন ছাড়াই গেম খেলতে পারত। এই ওয়েবসাইট থেকেই আসে তাঁর প্রথম ছয় অঙ্কের (ডলার) আয়।
১৬ বছর বয়সে ইয়াদেগারি একটি নতুন অ্যাপ তৈরিতে কাজ শুরু করেন, যা পরবর্তী সময় রূপ নেয় Cal AI-এ—একটি ক্যালরি ট্র্যাকিং অ্যাপ, যা ছবি বিশ্লেষণের মাধ্যমে ডায়েট মনিটর করতে সাহায্য করে। ২০২৪ সালের মে মাসে তিনি তাঁর তিন সহযোগী—হেনরি ল্যাংম্যাক, ব্লেক অ্যান্ডারসন ও জেক কাস্টিলোর সঙ্গে অ্যাপটি চালু করেন। কয়েক মাসের মধ্যেই অ্যাপটির বার্ষিক আয় ছুঁয়ে ফেলে ৩ কোটি ডলার।
এই অ্যাপের ধারণা আসে নিজের ফিটনেস রুটিনে ক্যালরি ট্র্যাক করতে গিয়ে সমস্যার মুখোমুখি হওয়ার পর। জটিল হিসাব না করে শুধু একটি ছবি তুলেই ব্যবহারকারীরা সহজে দৈনিক খাদ্য গ্রহণের তথ্য সংরক্ষণ করতে পারেন।
৪ জিপিএ ও ৩৪ স্কোর একাডেমিক রেজাল্ট থাকা সত্ত্বেও ইয়াদেগারি ভর্তি হতে পারেনি বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয়। তবে তিনি অফার পান জর্জিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি, মায়ামি বিশ্ববিদ্যালয় ও টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। শেষ পর্যন্ত তিনি মায়ামি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। প্রেস্টিজ নয়; বরং বাস্তব অভিজ্ঞতা ও নতুন মানুষের সঙ্গে পরিচয়ের সুযোগকেই অগ্রাধিকার দিয়ে।
ইয়াদেগারির গল্প দেখিয়ে দেয়—সাফল্যের একমাত্র পথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নামী ডিগ্রি নয়। সৃজনশীলতা, নিজে শেখার আগ্রহ ও নিরবচ্ছিন্ন পরিশ্রম দিয়েও তৈরি করা যায় সফল ক্যারিয়ার। তিনি ক্লাসে উপস্থিত থাকলেও মূল সময় ব্যয় করেন নিজের প্রযুক্তি প্রকল্প ও ব্যবসা পরিচালনায়।
জ্যাক ইয়াদেগারির যাত্রা প্রমাণ করে—তরুণেরা চাইলে নিজেদের মতো করে সফল হতে পারেন। প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থার বাইরেও বাস্তব দক্ষতা, অভিজ্ঞতা আর অদম্য ইচ্ছাশক্তিই হতে পারে সফলতার চাবিকাঠি।