
শুরুর দিকে টেলিভিশনে সংবাদ পাঠ আর উপস্থাপনা করতেন ফারিহা শামস সেওতি। ১৭ বছর আগে ধারাবাহিক নাটক ৬৯ দিয়ে অভিনয় শুরু। সম্প্রতি আকরাম খান পরিচালিত ‘নকশী কাঁথার জমিন’ সিনেমায় অভিনয় করে আলোচনায় তিনি। অভিনয়সহ নানা প্রসঙ্গে গতকাল তাঁর সঙ্গে কথা বলল ‘বিনোদন’
‘একটি খোলা জানালা’র পর ‘নকশী কাঁথার জমিন’-এও আপনার কাজ প্রশংসিত হয়েছে। কিন্তু আপনার কাজের সংখ্যা এত কম কেন?
ফারিহা শামস সেওতি: শুরু থেকেই একটু বেছে বেছে কাজ করেছি। সংসার, সন্তান সব মিলিয়ে একটু ব্যস্ততার মধ্যে ছিলাম। যার জন্য সব কাজ করার সুযোগও হয়নি। এখন আবার করছি। আমি চাই, ভালো কিছু কাজের সঙ্গে থাকতে। যাতে সংখ্যায় অল্প হলেও উল্লেখযোগ্য হয়। মানুষ মনে রাখে এ রকম কাজ করতে চাই।
আকরাম খানের পরিচালনায়, জয়া আহসানের সঙ্গে ‘নকশী কাঁথার জমিন’-এ অভিনয়ের অভিজ্ঞতা কেমন?
ফারিহা শামস সেওতি: খুবই ভালো। পাশাপাশি ভয়ের অভিজ্ঞতাও ছিল। আমরা যখন শুটিং করেছি, তখন কোভিডের পিক টাইম, এই কারণে কিছুটা ভয় ছিল। তবে শুটিংয়ের সময় সবাই বেশ আন্তরিক ছিলেন। ভালো অভিনেতা, অভিনেত্রী মিলেই আমরা কাজটা করেছি। জয়া আপা, দিব্য, সৌম্য, রওনক, ইরেশ ভাই সবার সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা ভালো। শুটিংয়ের সময়টায় সবাই ছিলাম একটা পরিবারের মতো। পরিচালক আকরাম ভাই অসম্ভব স্নেহ করেন, ভীষণ যত্নবান একজন মানুষ। সুতরাং তাঁর সেটে খারাপ লাগার প্রশ্নই আসে না।
সিনেমাটি দেশের বাইরে একাধিক উৎসবে প্রদর্শিত হয়েছে। বাংলাদেশে মুক্তির পর সহকর্মীদের কেমন প্রতিক্রিয়া পেলেন?
ফারিহা শামস সেওতি: খুবই ভালো। আমার সহকর্মী, বন্ধু থেকে আত্মীয়স্বজন সবাই প্রশংসা করেছেন। আমার মা-বাবা পর্দায় ‘সালেহা’ চরিত্রটি দেখে খুব খুশি হয়েছেন। সবচেয়ে বড় কথা,আনু মুহাম্মদ স্যার, মামুনুর রশীদ স্যারসহ আরও গুণী মানুষেরা এত সুন্দর কথা বলেছেন, যেটা আমার কাছে পুরস্কারের চেয়ে কম না। অনেক গুণীজন নাম ধরে আমার অভিনয়ের প্রশংসা করেছেন। এটা আমার জন্য বিশাল পাওয়া।
ভিকি জাহেদের ‘একটি খোলা জানালা’য় স্বল্প সময়ের উপস্থিতিতেও আপনি নজর কেড়েছেন।
ফারিহা শামস সেওতি: আমি আমার অবস্থান থেকে চরিত্রটার ঠিকঠাক উপস্থানের চেষ্টা করেছি। বাকিটা আমার পরিচালক ভিকি যেভাবে বুঝিয়েছেন, সেভাবে চরিত্রটাকে নিজের মধ্যে ধারণ করার চেষ্টা ছিল। আমি কেমন করেছি, তা আমার পরিচালক আর দর্শকেরাই ভালো বলতে পারবেন।
অভিনয়ের শুরুটা কীভাবে?
ফারিহা শামস সেওতি: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নৃবিজ্ঞানে অনার্স-মাস্টার্স করেছি। এখানে পড়ার সময় খবর পড়া, উপস্থাপনা শুরু করি। তৃতীয় বর্ষে পড়ার সময় ৬৯ ধারাবাহিকের কাজও শুরু করি। সে সময় অনেক বিজ্ঞাপনচিত্রও করেছি। অভিনয় ভালো লাগত। তখন আমার কাছে মনে হতো, যখন ক্যামেরার সামনে থাকি; ভালো লাগে। এমনও ভেবেছি, লেগে থাকলে এটাই ভালো হবে। আমি আসলে অভিনয়ই করতে চাই।
সামনে আর কী কী কাজ আসছে?
ফারিহা শামস সেওতি: দুটি চলচ্চিত্র মুক্তির অপেক্ষায়। একটি ‘অন্তর্বর্তী’, অন্যটি ‘অমীমাংসিত’। এর বাইরে কয়েকটি কাজের কথাবার্তা চলছে, এখনো চূড়ান্ত করিনি কিছুই। অভিনয় ভালো লাগে, অভিনয় করতে চাই। ভালো চলচ্চিত্রে কাজ করতে চাই। বাংলাদেশের ইতিহাস ও সংস্কৃতিকে সমৃদ্ধ করবে—তেমন কিছু চলচ্চিত্রে কাজ করতে চাই।