বাংলাদেশের বড় সংগ্রহের ভিত গড়ে দেন দুই ওপেনার সৌম্য সরকার ও সাইফ হাসান
বাংলাদেশের বড় সংগ্রহের ভিত গড়ে দেন দুই ওপেনার সৌম্য সরকার ও সাইফ হাসান

জ্বর-ঠান্ডা ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে ৮০ রান করা সাইফের প্রশংসায় সৌম্য

সৌম্য সরকার ও সাইফ হাসান—দুজনের জন্যই গতকালটা ছিল বিশেষ। সাত মাসের বেশি সময় পর ওয়ানডেতে নামা সৌম্য খেলেছেন নিজের পুরোনো ছন্দে। ৭ চার ৪ ছক্কায় করেছেন ৮৬ বলে ৯১ রান।

অন্যদিকে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজেই ওয়ানডে অভিষেক হওয়া সাইফ কাল সিরিজের শেষ ওয়ানডেতে পেয়েছেন প্রথম ফিফটি। এই ওপেনার করেছেন ৭২ বলে ৮০ রান। দুজনের জুটিতে ওঠা ১৭৬ রান মিরপুরে ওপেনিংয়ে সর্বোচ্চ। ম্যাচ শেষে জুটি বেঁধেই সিরিজের সম্প্রচারক টেলিভিশন টি স্পোর্টসে কথা বলেছেন তাঁরা। সেখানে একে অন্যকে প্রশংসায় ভাসিয়েছেন সাইফ–সৌম্য।

সাইফের ইনিংস নিয়ে সৌম্য বলেন, ‘ও (সাইফ) দারুণ ব্যাট করেছে। শট সিলেকশন ছিল চমৎকার। সমস্যা হলেই ও বারবার কথা বলছিল। ওর শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল। এরপরও যেভাবে ও ব্যাটিং করেছে, লড়ে গেছে, সেটার জন্য ওকে আমাদের কৃতিত্ব দেওয়া উচিত।’

৭২ বলে ৮০ রানের ইনিংসে ৬টি করে চার ও ছক্কা মেরেছেন সাইফ হাসান

১৭৯ রানে জয়ের ম্যাচে সাইফও সৌম্যর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন, ‘দাদা (সৌম্য) আজ অনেক সাহায্য করেছে। তিন দিন ধরে আমার জ্বর-ঠান্ডা ছিল। আমি অনেকবার দাদার সঙ্গে খেলেছি—‘এ’ দল, রংপুর—তাই দাদার সঙ্গে ব্যাট করতে সব সময় স্বচ্ছন্দ বোধ করি। অবশ্যই শতক না পাওয়ায় কিছুটা আক্ষেপ আছে। আমরা উইকেটে থিতু ছিলাম, খুব স্বচ্ছন্দে খেলছিলাম। কিন্তু আমরা দলের জন্য অবদান রেখেছি এবং জিতেছি, এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তবে সামনে এ ধরনের (সেঞ্চুরির) সুযোগ এলে কাজে লাগানোর চেষ্টা করব।’

কাল সেঞ্চুরি পেলে ক্যারিয়ারের চতুর্থ ওয়ানডে সেঞ্চুরি হতো সৌম্যর। সাইফের চেয়ে তাঁর আক্ষেপ বেশি থাকার কথা। কারণ, তিনি আউট হয়েছেন ৯০–এর ঘরে। তবে সৌম্য বলছেন, সেঞ্চুরি মিসের আক্ষেপ নেই তাঁর, ‘শতক না পাওয়ায় কোনো আফসোস নেই। উইকেটটা কঠিন ছিল। তাই এমন জুটি গড়া অনেক গুরুত্বপূর্ণ ছিল, সেটা করতে পেরে আমি খুশি ছিলাম। যদি শতক পেতাম ভালো লাগত, কিন্তু দলের জয়ে অবদান রাখতে পেরেছে, এটাই আসল।’

ম্যাচসেরার পুরস্কার হাতে সৌম্য সরকার

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৩ ম্যাচের সিরিজে সৌম্য করেছেন ১৪০ রান, গড় ৪৬.৩৭ এবং স্ট্রাইক রেট ৭৭.৩৫। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে সুপার ওভারে এক রানে আউট হওয়া এই বাঁহাতি তৃতীয় ম্যাচে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ছিলেন। স্পিন–সহায়ক উইকেটে দুই দলই প্রথম দুই ম্যাচে ২২০ রান ছুঁতে হিমশিম খেয়েছিল। তবে এ ম্যাচে সৌম্য একের পর এক রিভার্স সুইপ খেলে রানের গতি ধীর হতে দেননি।

নিজের ব্যাটিং কৌশল নিয়ে তিনি বলেছেন, ‘কঠিন উইকেটে ব্যাট করে ভালো লাগছে, আমরা আমাদের দক্ষতার ওপর ভরসা রাখতে পারি। উইকেটে অনেক বড় টার্ন ছিল না, তাই রিভার্স সুইপ আমার কাছে সবচেয়ে ভালো বিকল্প মনে হয়েছে।’

সৌম্য আরও বলেন, ‘সাইফও একবার এই শটটা খেলেছিল। ও বুঝেছিল যে স্পিনারদের বিপক্ষে রিভার্স সুইপই ভালো বিকল্প।’

সাইফ জানান, ইতিবাচক মানসিকতাই ফাইনাল ম্যাচে পার্থক্য গড়ে দিয়েছে। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে যেখানে ৫০ ওভারই স্পিনাররা দাপট দেখিয়েছিলেন, সেখানে ব্যাটসম্যানদের আগ্রাসী মানসিকতা ভালো ফল বয়ে এনেছে। সাইফ বলেছেন, ‘উইকেট আগের দুই ম্যাচের মতোই ছিল। পিচ একই ছিল। পার্থক্য শুধু আমাদের মানসিকতায়—ইতিবাচক চিন্তা নিয়ে খেলতে নামাটা কাজে দিয়েছে।’