বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচে আফগানিস্তান হারল ঠিক কোথায়? কিংবা প্রশ্নটি উল্টো করেও করা যায়, আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচে কোথায় জিতল বাংলাদেশ?
ফলটা তো এতক্ষণে নিশ্চয়ই জানা। আবুধাবিতে কাল এশিয়া কাপে নিজেদের বাঁচা-মরার ম্যাচে আফগানিস্তানকে ৮ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। আগে ব্যাট করে ৫ উইকেটে ১৫৪ রান তুলেছিল লিটন দাসের দল। তাড়া করতে নেমে রশিদ খানের দল ইনিংসের শেষ বলে ১৪৬ রানে অলআউট হয়।
ম্যাচটি দেখা থাকলে নিশ্চয়ই জানেন, আফগানিস্তানের ইনিংসে পাওয়ার প্লে-তে অসাধারণ বোলিং করেছে বাংলাদেশ। ওভারপ্রতি ৭.৭ করে রান তোলার লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে আফগানিস্তান প্রথম ৬ ওভারে ২ উইকেটে মাত্র ২৭ রান তুলতে পারে। আফগানিস্তানের সামনে (আস্কিং) প্রয়োজনীয় রান রেট তখন ৯–এর বেশি। আসলে পাওয়ার প্লে-তেই বেশি খানিকটা পিছিয়ে পড়েছিল আফগানিস্তান।
কিন্তু ঘুরেও দাঁড়িয়েছে। গুলবদিন নাঈবের সঙ্গে রহমানউল্লাহ গুরবাজের তৃতীয় উইকেটে ৩৩ রানের জুটি ও ষষ্ঠ উইকেটে করিম জানাতের সঙ্গে আজমতউল্লাহ ওমরজাইয়ের ৩২ রানের জুটিতে ম্যাচটা শেষ পর্যন্ত নিয়ে যায় আফগানিস্তান। জয়ের জন্য একপর্যায়ে ১৫ বলে ২৯ রান দরকার ছিল তাদের। হাতে ৩ উইকেট।
আফগানিস্তান অধিনায়ক রশিদ খান মনে করেন, এই পর্যায়ে এসে ম্যাচটা হেরে যায় তাঁর দল।
গতকাল ম্যাচ শেষে রশিদ বলেন, ‘আমরা শেষ পর্যন্ত ম্যাচে ছিলাম। আমি আউট হওয়ার আগপর্যন্ত আশা ছিল। কিন্তু আমরা শেষ করতে পারিনি। এখন ১৫ বলে ৩০ তোলা সম্ভব। কিন্তু আমরা নিজেদের ওপর অনেক চাপ নিয়ে নিই এবং শটগুলো ভালোভাবে খেলতে পারিনি।’
আফগানিস্তান ১৫ বলে যখন ২৯ রানের দূরত্বে তখন ক্রিজে ছিলেন রশিদ খান। ৮ বলে ১৫ রানে ব্যাট করছিলেন। ১৯তম ওভারে মোস্তাফিজুর রহমানের প্রথম বলে ‘নো লুক ফ্লিক’ শটে চার মেরে আফগান দর্শকদের তিনি জাগিয়েও তুলেছিলেন। তবে রশিদ আউট হওয়ার পরের বলে আল্লাহ গজনফরও আউট হওয়ায় আর জয়ের বন্দরে নোঙর করতে পারেনি আফগানিস্তান। শেষ ওভারে ২২ রানের সমীকরণে পিছিয়ে থেকে ১৩ রান তুলতে পারে রশিদের দল।
আফগানিস্তানকে কিন্তু বোলিংয়েও ঘুরে দাঁড়াতে হয়েছে। প্রথম ১০ ওভার শেষে ১ উইকেটে ৮৭ রান তুলেছিল বাংলাদেশ। সেখান থেকে পরের ১০ ওভারে ৪ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশকে মাত্র ৬৭ রান তুলতে দেওয়াটা আফগান বোলারদের জন্য সাফল্যই। রশিদ এ নিয়ে বলেন, ‘বোলিংয়ে আমরা যেভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছি, সেটা অনেক বড় ব্যাপার। প্রথম ১০ ওভারে তারা ৯০ (৮৭) রান তোলার পর ১৬০–এর নিচে থামাতে পেরেছি। এটা ১৬০-১৭০ রানের উইকেট ছিল। তবে আমরা কিছু অপ্রয়োজনীয় শট খেলেছি, যার দরকার ছিল না।’
হারের পর সুপার ফোরে উঠতে আফগানিস্তানকে এখন আগামীকাল শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে গ্রুপপর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচটি জিততে হবে। রশিদ এ নিয়ে বলেছেন, ‘সময়টা গুরুত্বপূর্ণ। এশিয়া কাপে কম ম্যাচই পাওয়া যায় আর এখানে প্রতিটি ম্যাচই গুরুত্বপূর্ণ। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে পরের ম্যাচটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের ভালো প্রস্তুতি নিতে হবে। ভুল থেকে শিক্ষা নেওয়া দরকার এবং মানসিকভাবে শক্ত থাকতে হবে, এটা আমাদের সবার জন্যই চ্যালেঞ্জ হবে।’