রুশ গ্র্যান্ডমাস্টার পিটার কিরিয়াকভের বিপক্ষে খেলছে মাত্র ৫ বছর ৮ মাস বয়সী আলিশা হায়দার
রুশ গ্র্যান্ডমাস্টার পিটার কিরিয়াকভের বিপক্ষে খেলছে মাত্র ৫ বছর ৮ মাস বয়সী আলিশা হায়দার

৫০ বছরের গ্র্যান্ডমাস্টারের সামনে ৫ বছরের আলিশা

চেয়ার দুটি মুখোমুখি। এক পাশে ৫০ বছরের অভিজ্ঞ রুশ গ্র্যান্ডমাস্টার পিটার কিরিয়াকভ। অন্য পাশে মাত্র ৫ বছর ৮ মাস বয়সী আলিশা হায়দার। বয়স যতই ছোট হোক, চোখের চাহনিতে কিন্তু কোনো ভয় নেই। বোর্ডের ওপারে তাকাতে হলে একটু হেলে বসতে হয়, গুটি ধরার সময়েও হাত কাঁপে। তবু খেলার উৎসাহে বিন্দুমাত্র ঘাটতি নেই।

আজ সকালে বাংলাদেশ দাবা ফেডারেশনের ক্রীড়াকক্ষে দেখা গেল সেই বিরল দৃশ্য। অনূর্ধ্ব–১৪ বয়সী ২৬ দাবাড়ুর বিপক্ষে একসঙ্গে খেললেন পিটার কিরিয়াকভ। একটার পর একটা বোর্ডে গিয়ে চাল দিয়েছেন, ২৩ জনকে হারিয়েছেন, দুজনের সঙ্গে ড্র, একজনের কাছে হেরেছেন। সবই অবশ্য হয়েছে মজার ছলে।

সেই মজার ছলে খেলাতেই ঢাকা চেস একাডেমির কিশোর সায়ান মীরাব হাসান রুশ গ্র্যান্ডমাস্টারকে হারিয়ে চমকে দিয়েছে সবাইকে। মহিলা ফিদে মাস্টার ওয়ারসিয়া খুশবু আর সাফায়েত কিবরিয়া আজান ড্র করে আলো কাড়লেন।

রুশ গ্র্যান্ডমাস্টার পিটার কিরিয়াকভের সঙ্গে ওয়ারসিয়া খুশবু (বাঁ থেকে প্রথম), সাফায়েত কিবরিয়া (বাথেকে দ্বিতীয়) ও সায়ান মীরাব হাসান (ডান থেকে প্রথম)।

তবু সবচেয়ে বেশি আলো পড়েছে এক ছোট্ট বোর্ডে—যেখানে ফল নয়, খেলা হয়েছে সাহসের। উত্তরা থেকে এসেছে আলিশা। মহিলা ক্যান্ডিডেট মাস্টার ওয়ারিসা হায়দারের ছোট বোন সে। হেরেছে ঠিকই, কিন্তু সেটি কেই–বা মনে রাখে? ৫ বছরের এক শিশু ৫০ বছরের এক গ্র্যান্ডমাস্টারের বিপরীতে বসে চাল দিচ্ছে। এ যেন শুধু খেলা নয়, একটা প্রেরণাও। ছোটরা দেখেছে—বিশ্বমানের খেলোয়াড়ের সামনেও বসা যায়, সাহস নিয়ে।

রুশ গ্র্যান্ডমাস্টার কিরিয়াকভ এখন ঢাকায় দুই মাসের জন্য। তাঁকে এনেছে বাংলাদেশ দাবা ফেডারেশন। ৫ অক্টোবর এসেছেন তিনি। আন্তর্জাতিক মাস্টার ফাহাদ রহমান ও মনন রেজাকে অনুশীলন করাচ্ছেন, যারা এ মাসের শেষ দিকে ভারতে বিশ্বকাপে খেলবেন। সপ্তাহে চার দিন তাঁদের কোচিং করান কিরিয়াকভ, বাকি সময় অন্য দাবাড়ুদের ক্লাস নেন। থাকবেন ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত। ১৯৯৮ সালে গ্র্যান্ডমাস্টার হয়েছেন কিরিয়াকভ।