
খুলনা-২ (সদর ও সোনাডাঙ্গা) আসনে বিএনপি–দলীয় প্রার্থী হিসেবে কাজ শুরু করতে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নির্দেশনা পেয়েছেন বলে দাবি করেছেন সাবেক সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম মঞ্জু। খুলনা মহানগর বিএনপির সাবেক এই সভাপতি বলেন, রোববার বিকেল সোয়া পাঁচটার দিকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডন থেকে ফোন করে তাঁকে প্রার্থী হিসেবে কাজ শুরু করতে বলেছেন।
এর আগে গত সোমবার ঢাকায় বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সঙ্গে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের মতবিনিময় সভায় অংশ নেন নজরুল ইসলাম। চার বছর পর ওই বৈঠকের মাধ্যমে তিনি দলে সক্রিয়ভাবে ফেরেন। বৈঠক শেষে খুলনায় ফেরার পর তিনি জ্বরে আক্রান্ত হন। পরদিন চিকুনগুনিয়া শনাক্ত হয়। বর্তমানে তিনি নিজ বাড়িতে চিকিৎসাধীন আছেন।
নজরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বিকেল সোয়া পাঁচটায় ফোন করে কাজ শুরু করতে বলেন। আমি বলেছিলাম, আমি চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত। তিনি বলেছেন, ‘‘সুস্থ হয়ে মাঠে নেমে পড়ুন, সবাইকে নিয়ে কাজ শুরু করুন। নির্বাচনে সবাইকে লাগবে। ভালো-মন্দ, পছন্দ-অপছন্দ থাকতে পারে, তারপরও সবাইকে সঙ্গে নিন।”’ সুস্থ হওয়ার পর সবাইকে নিয়ে বসবেন বলে জানান নজরুল ইসলাম।
এদিকে দলের সিদ্ধান্তের জন্য শুকরিয়া প্রকাশ এবং নেতাকর্মীদের ধৈর্য ও সংযম বজায় রাখার আহ্বান জানিয়ে নজরুল ইসলাম রোববার বিকেলে ফেসবুকে একাধিক পোস্ট দেন।
প্রথম পোস্টে তিনি লেখেন, ‘মহান আল্লাহ তায়ালার প্রতি শুকরিয়া। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে খুলনা-২ আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী হিসেবে দ্রুত সবাইকে নিয়ে কাজ শুরু করার জন্য দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নির্দেশনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।’
আরেক পোস্টে তিনি নেতা–কর্মীদের উদ্দেশে লেখেন, ‘দলীয় মনোনয়ন প্রাপ্তি নিয়ে উল্লাস প্রকাশ, আনন্দমিছিল ও মিষ্টি বিতরণ নিষেধ। কাউকে খাটো করা বা বিদ্বেষমূলক মনোভাব পোষণ করা থেকেও বিরত থাকুন। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নির্দেশনাই আমাদের পথনির্দেশ।’
পোস্টগুলো প্রকাশের পর থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁর অনুসারী নেতা–কর্মীরা মঞ্জুকে অভিনন্দন জানাচ্ছেন এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছেন।
২০২১ সালের ডিসেম্বরে খুলনা মহানগর বিএনপির সভাপতি পদ হারান নজরুল ইসলাম। সে সময় আহ্বায়ক করা হয় শফিকুল আলম মনাকে এবং সদস্যসচিব করা হয় শফিকুল আলম তুহিনকে। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে নজরুল ইসলামের অনুসারীরা খুলনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে পদত্যাগের ঘোষণা দেন। তাঁর অনুসারী পাঁচ শতাধিক নেতা সেসময় পদত্যাগ করেন। এরপরই তাঁকে কেন্দ্রীয় বিএনপির খুলনা বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদকের পদ থেকেও অব্যাহতি দেওয়া হয়।
সমর্থকেরা বলছেন, দলীয় পদ হারানোর পরও রাজনীতি থেকে সরে যাননি নজরুল ইসলাম। বিভিন্ন ব্যানারে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে গেছেন, কেন্দ্রীয় কর্মসূচি পালন করেছেন তাঁর অনুসারীদের নিয়ে। খুলনায় বিভিন্ন সমাবেশ, শোভাযাত্রা ও সামাজিক আয়োজনে তাঁর সক্রিয় উপস্থিতি ছিল নিয়মিত।
একাধিকবার সংসদ সদস্য পদে নির্বাচন করেছেন নজরুল ইসলাম মঞ্জু। ২০০৮ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক, সভাপতি এবং কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। বিএনপির মনোনীত প্রার্থী হিসেবে খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও লড়েছেন তিনি।