Thank you for trying Sticky AMP!!

‘অটোবায়োগ্রাফি’ গানের ভিডিওচিত্রের শুটিংয়ে নুসরাত ইমরোজ তিশা

‘আমি সেই যোদ্ধা, যে অস্ত্র জমা দিয়েছি, কিন্তু ট্রেনিং জমা দিইনি’

অভিনয়শিল্পী নুসরাত ইমরোজ তিশা সম্প্রতি চলচ্চিত্রের চিত্রনাট্যকার পরিচয়ে দর্শকের সামনে এসেছেন। এর আগে প্রযোজক হিসেবেও তাঁর অভিষেক হয়। নানান পরিচয়ের বাইরে দেড় দশক আগে দেশের মানুষ তাঁকে গায়িকা হিসেবেও জানত। এরপর অভিনয় ব্যস্ততা তাঁর গানের পরিচয় আড়াল করে দেয়। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আবার সেই পুরোনো পরিচয়ে ভক্তদের সামনে এলেন দুই দশকের বেশি সময় ধরে অভিনয়ে ব্যস্ত তিশা। প্রকাশিত হয়েছে নতুন গান। ‘সামথিং লাইক অ্যান অটোবায়োগ্রাফি’ সিনেমার অটোবায়োগ্রাফি গানটি গতকাল সন্ধ্যায় চরকিতে মুক্তি পায়। এদিন সন্ধ্যায় যখন তাঁর সঙ্গে কথা হচ্ছিল, তখন বললেন, দর্শক প্রতিক্রিয়া জানার অপেক্ষায় আছেন।

অপরিকল্পিত পরিকল্পনা

নবীন দর্শকেরা হয়তো অনেকেই জানেন না ২৫ বছর আগের তিশাকে। একসময় যে তিশা ছিলেন সংগীতশিল্পী।  ছোট্ট তিশা নতুন কুঁড়িতে গানের বিভিন্ন বিভাগে অংশ নেন।

এর মধ্যে আধুনিক গান, ছড়াগান, দেশাত্মবোধক গান, নাচ, গল্প বলা—সব কটি বিভাগে চ্যাম্পিয়নও তিনি।

নুসরাত ইমরোজ তিশা

তাই তো ১৯৯৫ সালে নতুন কুঁড়ির গোল্ডকাপটা উঠে তাঁরই হাতে। গানে নিয়মিত না হলেও অভিনয়টা ছিল নিয়মিত। ছিল তাঁর গানের দলও। ১৫ বছর আগে শেষবার তাঁকে দেখা গেছে। গানকে পাশ কাটিয়ে অভিনয়ে তুমুল ব্যস্ত হয়ে ওঠেন তিশা। এখনো সমানতালে তাই চালিয়ে যাচ্ছেন। ‘অটোবায়োগ্রাফি’ গানের পরিকল্পনা করার পেছনে কোন ভাবনা কাজ করেছে, এমন প্রসঙ্গ উঠতেই তিশা বললেন, ‘কোনো পরিকল্পনা ছিল না। একদম অপরিকল্পিতভাবে গানটি গেয়েছি। গানটা যখন লেখা হয়, সুর হয় শুনেই আমার মনে হয়েছে এই গানটা আমি গাইতে চাই। অনেক বছর পর একটা গান শুনে মনে হয়েছে, এটা আমি গাইতে চাই। আমি জানি না তখনো, গানটা গাইতে পারব কি পারব না। আমার গলায় মানাবে কি মানাবে না। এরপর সরয়ার শুনেই বলল যে তুমি গেয়ে দেখ। স্টুডিওতে যাওয়ার পর দেখি, ঠিক আছে। তা ছাড়া সিনেমার যে উদ্দেশ্য, যে আবেগ, সিনেমাটা তো আসলে বায়োপিক, আমাদের জীবনের কিছু অংশ এখানে আছে। গানটার মধ্যে আমাদের জীবনের কিছু অংশ যেহেতু আছে, আমার গলায় গাওয়াটা উচিত হবে।’

Also Read: অনেক ‘প্রথম’ নিয়ে আজ মুক্তি পাচ্ছে ‘অটোবায়োগ্রাফি’

২৩ নভেম্বর সন্ধ্যায় গানটিতে কণ্ঠ দেন তিশা। এরপর জিন্দাপার্কে গানটির ভিডিও চিত্রের শুটিং হয়।

নুসরাত ইমরোজ তিশা

ট্রেনিং জমা দিইনি

নাটক–সিনেমার ডাবিংয়ের জন্য প্রায়ই মাইক্রোফোনের সামনে দাঁড়ান তিশা। এতে কখনো কোনো ভয়, কোনো জড়তা কাজ করে না তাঁর। কিন্তু এবার ঘটল ভিন্ন এই ঘটনা। জানালেন, অটোবায়োগ্রাফি গানটি গাইবার সময় মাইক্রোফোনের সামনে দাঁড়াতে ভয় লাগছিল তাঁর। তিশা বললেন, ‘গানটা শুনে খুব সহজ মনে হলেও গাইতে খুব কঠিন মনে হয়। কতটা কঠিন। এমনিতে প্র্যাকটিস নেই। কিন্তু গাইবার পর মনে হলো, আমি সেই যোদ্ধা, যে অস্ত্র জমা দিয়েছি, কিন্তু ট্রেনিং জমা দিইনি। (হাসি)।’ অটোবায়োগ্রাফি গানটা একদম পারিবারিক পরিবেশে তৈরি হয়েছে। পাভেল আরীনকে তো ‘মাই বাডি’ বলেন তিশা। তিশা বললেন, ‘পাভেলকে অনেক দিন ধরেই বলছিলাম, একটা গান গাইতে চাই। একটা গান বানাও। পাভেলও বলছিল, হ্যাঁ, তিশা আপু, আপনার একটা গান বানানো উচিত। ফারুকী ভাইকে বলেন একটা গান লিখতে, আমরা মিউজিক বানিয়ে গানটা তৈরি করি। ওই গান গাইতে হবে, গান গাইতে চাই, এসবের মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছিলাম। বহু বছর পর মনে হলো, আর চাওয়াচাওয়ি নাই, এটাই গাইতে চাই।’

Also Read: প্রকাশ্যে ‘অটোবায়োগ্রাফি’র ট্রেলার, দেখা পাওয়া গেল অভিনেতা ফারুকীর

গান নিয়ে আরও কথা

‘অটোবায়োগ্রাফি’ গানের সুরকার ও সংগীত পরিচালক পাভেল আরীন। কথা লিখেছেন ইশতিয়াক আহমেদ। রেকর্ডিং শেষে সবাই কী বলেছিল, এমন প্রশ্ন বললেন, ‘সবাই বলছে, গলা এখনো ঠিকঠাক আছে। গাওয়া যায়। সবাই খুব পছন্দ করল। বাহবা দিল। কিন্তু আমি আসলে তখন বলব যে গান গাইলাম এত বছর পর, যখন শ্রোতারা শুনে এটি নিয়ে কী বলে, তা শোনার জন্য অপেক্ষা করতেছি। আমার কাছের মানুষ তো ভালো বলবে। কারণ, তারা শুধু আমার গান গাওয়া দেখছে না, এর পেছনে পরিশ্রমটাও দেখছে। এত পরিশ্রমের পর একটা কাজ তাদের ভালো লাগবেই।

‘অটোবায়োগ্রাফি’ সিনেমায় অভিনয় করেছেন নুসরাত ইমরোজ তিশা

Also Read: চমকে দিলেন অন্য এক ডিপজল

সংগীত পরিচালকের ভাষ্য

চিরকুট ব্যান্ডের অন্যতম সদস্য, সাউন্ড প্রডিউসার পাভেল আরীনের সুর ও সংগীতে এর আগে বেশ কয়েকজন শিল্পীর গান প্রকাশিত হয়েছে।

‘অটোবায়োগ্রাফি’ গানের সুরকার ও সংগীত পরিচালক পাভেল আরীন

দীর্ঘ বিরতির পর অভিনয়শিল্পী নুসরাত ইমরোজ তিশার ফিরে আসার গানটির সুর ও সংগীত পরিচালনা করেছেন তিনি। জানালেন, ‘একসময় তিশা আপু গান গাইতেন। তিশা আপুর অভিনয় নিয়ে বলার তো কিছু নেই। কিন্তু এটাও জানি, তিনি একসময় গানও গাইতেন। আমাদের মধ্যে প্রায় আলোচনা হতো গান নিয়ে। স্টুডিওতে এলে আমাদের আড্ডায় গানের প্রসঙ্গও উঠে আসত। এই গান তৈরির পর মনে হয়েছে, তিশা আপু গাইলে ভালো হবে। দীর্ঘ বিরতি শেষে এমন একটি গানের মাধ্যমে ফেরা দরকার। সবাই মিলে আলোচনা শেষে সিদ্ধান্ত হয়। গাইবার পর শুনলাম যখন, খুব ভালো লেগেছে।

Also Read: ‘মনে হয়েছে, এটা আমার জীবনের গল্প’